পল মৈত্র, দক্ষিন দিনাজপুরঃ
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!
পরিবারে আর্থিক অনটন নিত্যসঙ্গী। তাই সাহায্য করতে বাবার মিষ্টির দোকানে জিলিপি বিক্রি করত বিউটি প্রামাণিক। এবছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল সে। সব প্রতিকূলতাকে জয় করে আজ সাফল্য ধরা দিয়েছে। কলা বিভাগে সে এবার ৪৪৫ নম্বর পেয়েছে। শিক্ষিকা হওয়ার ইচ্ছে তার। যদিও উচ্চশিক্ষার জন্য বাধ সেধেছে আর্থিক অনটন। সরকারি বা কোনও ব্যক্তির সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে তার পরিবার।
বংশীহারী থানার অন্তর্গত শেরপুর এলাকায় বাড়ি বলয় প্রামাণিকের। বাড়িতেই ছোটো একটি মিষ্টির দোকান রয়েছে তাঁর। এছাড়াও হাটে ও মেলায় তিনি জিলিপি বিক্রি করেন। স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে সংসার বলয়বাবুর। বড় মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে অনেকদিন আগেই। ছোটো মেয়ে বিউটি বংশীহারী গার্লস হাইস্কুল থেকে এবছর কলা বিভাগে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেয়। তার প্রাপ্ত নম্বর ৪৪৫। সংসারে অভাব নিত্যসঙ্গী। তাই বিউটিও বাবাকে দোকান চালাতে সাহায্য করত। হাটে ও মেলাতেও যেত বাবার সঙ্গে জিলিপি বিক্রি করতে। বিউটি নিজেও জিলিপি তৈরি করতে পারে। অনেক ছোটো থেকেই বাবার সঙ্গে থেকে একাজ সে করে আসছে। তবে এতে পড়াশোনায় কোনও বাধা পড়েনি। সবকাজ সেরে পড়াশোনাটা ঠিক চালিয়ে যায় বিউটি। তবে উচ্চমাধ্যমিকে সাফল্য পেলেও উচ্চশিক্ষা নিয়ে চিন্তায় রয়েছে বিউটি। কারণ, সংসারের আর্থিক অনটন। পরিবার ও নিজের চেষ্টায় অনেকটা পথ এসেছে সে, আরও এগোতে চায়। ভবিষ্যতে শিক্ষিকা হওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েছে বিউটি। স্বপ্ন সফল করতে হলে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হবে তাকে। তাই তার প্রয়োজন সাহায্যের।
বিউটির বাবা বলয় প্রামাণিক বলেন, “মেয়ে এমন ভালো ফলাফল করবে স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি। সকাল থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত দোকানেই থাকত। তারপর পড়াশোনা করত। প্রথমে যখন ফোন করে বলে ভালো রেজ়াল্ট করেছে কিছুই বুঝতে পারিনি। আমরা সেইভাবে কখনও তো পড়াশোনা করিনি। তাই সবকিছু জানি না। পরে সকলের মুখে শোনার পর বুঝতে পারি মেয়ে খুব ভালো ফলাফল করেছে। একটা সময় ভেবেছিলাম ও হয়তো পাশও করতে পারবে না। আমার ভাবনাকে পাল্টে দিয়েছে মেয়ে। আমরা খুব খুশি। যতটা পেরেছি করেছি। আরও করব। তবে বয়স হয়ে যাচ্ছে। কতটা পারব জানি না। কেউ সাহায্য করলে ভালো হয়।”
বিউটি বলে, “বাবার দোকানে থাকতাম। টাকা পয়সা নেওয়া, জিলিপি ভাজা সবই করতে পারি। বাকি সময় পড়াশোনা করতাম। দিনে ৯ ঘণ্টা পড়তাম। আমাকে আমার স্কুলের শিক্ষিকারা প্রচুর সহযোগিতা করেছেন। আজ আমার এই সাফল্যে আমি সবার প্রতি কৃতজ্ঞ।”