অরিন্দম রায় চৌধুরী ও শর্বাণী দে, বারাকপুর, বেঙ্গলটুডেঃ
বর্তমান সমাজে এখনও প্রতি পদে মেয়েদের অসম্মান ও প্রতিনিয়ত ঘরে বা বাইরে বিভিন্ন রুপে শোষিত হতে দেখা যায়। কিন্তু ঠিক এমন সময়, যখন নারীদের অত্যাচারের প্রতিবাদ নিজেদেরই করতে হবে, ঠিক সেই সময় এক নজির বিহীন ঘটনা উঠে আসলো উত্তর ব্যারাকপুরের ২১ নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত নতুন বাজার কামারপারা এলাকার বাসিন্দা দ্বাদশ শ্রেণীর রচয়িতা কর্মকারের নিজেকে সমাজের এই কঠিন অবস্থা থেকে রক্ষা করার জন্য ক্যারাটে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তৈরি করতে দেখে। বর্তমানে সে ক্যারাটের একজন ব্রাউন বেল্ট অধিকারি। এবং ক্যারাটে ইওগা একাদেমি অফ ন্যাশানাল ইন্সটিটিউটের শান্তনু ভাদুড়ী নামক প্রশিক্ষকের কাছে প্রশিক্ষণ রত।
সম্প্রতি রচয়িতা ন্যাশনাল এবং ইন্টারন্যাশনাল ওয়াল্ড ক্যারাটে ফেডারেশন থেকে তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে এবং ২০২০ সালে অলিম্পিকে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে চান রচয়িতা। ২০১৫ সালে মাল্যাশিয়া ইন্টারন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ানশিপে অংশগ্রহনের সুযোগও পায় রচয়িতা। কিন্তু তার মাল্যাশিয়া যাওয়ার খরচা বাবদ পুরো টাকা জোগাড় না করতে পারায় রচয়িতার মাল্যাশিয়া ইন্টারন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ানশিপে যাওয়ার স্বপ্ন সেখানেই থেমে জায়।
এক্ষেত্রে রচয়িতার বাবা অর্থাৎ সুনীল কর্মকার বলেন, “নিজের মেয়েকে তিনি তৈরি করছেন যাতে সে বিশ্বের সমস্ত খেলার পাশাপাশি ক্যারাটে খেলাটির দ্বারা সকল দেশের সামনে ভারতবর্ষের হয়ে রচয়িতা প্রতিনিধিত্ব করে”। কিন্তু তার এই স্বপ্নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে কেবলমাত্র আর্থিক সংক্ট। নিজের মেয়ের এই স্বপ্ন পুরনের জন্য সুনীল বাবু ২১ নং ওয়ার্ডের স্থানীয় কমিশনার মনিকা হালদারের কাছে সাহায্যের জন্য গেলে সুনীল বাবুকে একপ্রকার খালি হাতেই ফিরতে হয়।
তবে এখানেই থেমে থাকেননি সুনীল বাবু। এরপর কঠিন পরিশ্রম নিজের মেয়ের আর্থিক সঙ্কট দূর করার। কিন্তু কোন ভাবেই তিনি রাস্তা খুঁজে পাচ্ছিলেন না। এমনকি তিনি তার এই প্রতিবেদন রাজ্য সরকারের কাছে পৌছে দেওয়ার জন্য নবান্নে বহু চিঠি প্রেরণ করেন কিন্তু এখন পর্যন্ত সেই চিঠির কোন প্রতুত্ত্যর তিনি পাননি। বর্তমানে রচয়িতা ও তার বাবা সুনীল বাবুর এই স্বপ্ন পুরনের জন্য রচয়িতার ক্ষেত্রে কোন প্রকার কোন সাহায্য পাওয়া গেলে তাহলে একদিন ভারতবর্ষের তরফ থেকে রচয়িতা বিশ্বের সকল খেলার মতো ক্যারাটেকে নিয়ে প্রতিনিধিত্ব করবে, এমনটাই দাবি সুনীল বাবুর। এর পাশাপাশি তিনি চান অন্যান্য সকল খেলার মত রাজ্য সরকার ক্যারাটেকেও যথেষ্ট মর্যাদা দিক। এবং তা প্রশিক্ষণের জন্য সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া হোক সেই বিষয়ে মনোনিবেশ করার কথা বলেন।