ওয়েবডেস্ক, বেঙ্গল টুডে:
২৯ শে জানুয়ারি সকাল ৭ টা নাগাদ মুর্শিদাবাদে বালিঘাট ব্রিজের রেলিং ভেঙে একটি যাত্রীবাহী বাস ভৈরব নদীতে পড়ে যায়। মূলত বাসটিতে কমপক্ষে ৬০ জন যাত্রী ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। আপাতত এই ঘটনার জেরে ৫ জন মৃত এবং ৯ জন আহত হয়েছেন।
সুত্রের খবর, মুর্শিদাবাদের দৌলতাবাদের বালিরঘাট সেতুর রেলিং ভেঙে ভয়াবহ ওই বাস দুর্ঘটনার পরে সরকারিভাবে উদ্ধার কাজ দেরি হওয়ার অভিযোগে পুলিশকে ঘিরে স্থানীয় জনতা তুমুল বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। উত্তেজিত জনতা পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। দমকল বাহিনীর গড়িতেও ক্ষুব্ধ মানুষজন ভাঙচুর চালায়। পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশকে কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটাতে হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবী, অতীতেও এত বড় দুর্ঘটনার সাক্ষী থাকেনি মুর্শিদাবাদ। অর্থাৎ বালিরঘাট সেতু শক্তপোক্ত, সেক্ষেত্রে কীভাবে রেলিং ভেঙে দুর্ঘটনাটি ঘটল? অনেকে আবার মনে করছিলেন, তবে কি চালক বাস চালানোর সময়ে মোবাইলে কথা বলছিলেন, তাতেই দুর্ঘটনা। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছিল ধোঁয়াশা। অবশেষে প্রাথমিক তদন্তের পর সঠিক তথ্য জানালেন পরিবহণমন্ত্রী।
প্রসঙ্গগত ঘটনার ৪ ঘণ্টা পর ভৈরব নদীতে পুরোদস্তুর উদ্ধারকাজ শুরু করেছে প্রশাসন। কলকাতা থেকে রওনা দিয়েছেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। রয়েছেন পরিবহণ সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কীভাবে এত বড় দুর্ঘটনা, তা খতিয়ে দেখতে কলকাতা থেকে মুর্শিদাবাদে যাচ্ছে উচ্চ পর্যায়ের টিম। তবে সকল ধোঁয়াশা কাটিয়ে দুর্ঘটনার আসল কারণ জানালেন পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী জানান, কুয়াশা মাখা ভোরে ব্রিজে ওঠার মুখে একটি ট্রাককে পাশ কাটাতে গিয়েছিল যাত্রীবাহী বাসটি। তাতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন চালক। সোজা ধাক্কা মারে সেতুর রেলিংয়ে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই রেলিং ভেঙে বাসটি পড়ে যায় নদীতে।
যদিও হেলিকপ্টারে করে উড়ে যাচ্ছে উদ্ধারকারী দল। ১৪০ টনের উচ্চ পর্যায়ের ২ টি ক্রেনের সাহায্যে উদ্ধার চলছে। নৌকা নিয়ে চলছে উদ্ধারকাজ। নদীর গভীরতা কতটা বেশি, তা বোঝার জন্য প্রথমে ৩৫ ফুট লম্বা একটি বাঁশ নদীতে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দেখা যায়, বাঁশটি নদীর তল স্পর্শ করতে পারেননি। নদীর গভীরতা অনেকটাই বেশি হওয়ায় সমস্যায় পড়তে হয় উদ্ধারকারীদের। এদিকে, বাসটিও পুরোপুরি নদীতে ডুবে যাওয়া উদ্ধারকাজে বেগ পেতে হচ্ছিল। ইতিমধ্যে জানা যায়, বাসটির হদিশ পাওয়া গিয়েছে। সেতুর ঠিক নীচেই রয়েছে বাসটি। বাসটিকে তুলতে হাইড্রোলিক ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে বলে খবর। ঘটনাস্থলে পুলিশ সুপার, জেলাশাসক, রয়েছে মন্ত্রী জাকির হোসেনও। উদ্ধারকাজে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরকে খবর দেওয়া হয়েছে। এদিন বেলা পৌনে ২টো নাগাদ অবশেষে প্রশিক্ষিত ডুবুরি নদীতে নামানো সম্ভব হয়।