রাজীব মুখার্জী, হাওড়াঃ কালী পুজোকে শক্তির আরাধনা হিসাবেই দেখে আসছে আপামর বাঙালি। এই কালী পুজোকে কেন্দ্র করে বর্তমান সময়েও চলে শব্দের প্রতিযোগিতা। পুজো উদ্যোক্তাদের সীমাহীন মাত্রায় মাইকের আওয়াজ ও শব্দবাজির আওয়াজের ফলে অতিষ্ট হয়ে ওঠেন এলাকার বাসিন্দারাই। প্রতি বছরই মাত্রাহীন মাইকের আওয়াজ ও শব্দবাজি ফাটানোর ভুরি ভুরি অভিযোগ জমা হয়ে থাকে বিভিন্ন থানায়। সেই সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখতে নাজেহাল হতে হয় পুলিশকে। তবে এবার এই সমস্যার সমাধানের পথ খুঁজে পেয়েছে পুলিশ। হাওড়া পুলিশের হাতে এসেছে শব্দ পরিমাপকারী যন্ত্র। তাই এই বছরে নির্ধারিত লিমিটের বাইরে মাইক বা শব্দবাজি ফাটালে এবার ধরা পড়বে যন্ত্রে। দেওয়ালীর আগে সেই যন্ত্র পৌছে দেওয়া হচ্ছে হাওড়া জেলার প্রতিটি থানায়। যন্ত্রের পাশাপাশি চলছে এলাকার রাস্তায় মাইক প্রচার পুলিশের থেকে যাতে সাধারণ মানুষকে এই বিষয়ে সতর্ক করা যায়, আরো সচেতন করা যায়।
বিগত তিনদিন ধরে লাগাতার ধর পাকড়ে ধরা পড়েছে বেশ কিছু বাজি কারবারি। পুলিশের থেকে অবিরত প্রচারের ফলশ্রুতি এই বার সাবধান হচ্ছেন কালী পুজো উদ্যোক্তারাও। নির্ধারিত মাত্রার বেশি শব্দে সাউন্ড সিস্টেম বাজালে কিংবা বাজি ফাটালেই থানাতে বসেই কমিটির বা ব্যক্তির সব ঠিকুজি জেনে ফেলতে পারবে বলে দাবি করছে হাওড়া পুলিশ। ফলে এবার কালীপুজো কিংবা অন্য কোনও উৎসবে ৬৫ ডেসিবেলের বেশি শব্দে সাউন্ড সিস্টেম বাজালে আর ৯৫ ডেসিবেলের বেশি শব্দের বাজি ফাটালেই হাতে নাতে ধরা পড়তে হবে। শব্দাসুরকে জব্দ করতে এবার থেকে পুলিশের হাতিয়ার সাউন্ড লেভেল মিটার। শব্দাসুরকে জব্দ করতে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তরফে রাজ্যের সমস্ত থানাকে দেওয়া হচ্ছে এই বিশেষ যন্ত্র। জেলা পুলিশের তরফে সাউন্ড সিস্টেমের ক্ষেত্রে ৬৫ ডেসিবেল এবং বাজির ক্ষেত্রে ৯০ ডেসিবেল শব্দ নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।
হাওড়া জেলার পুলিশ সুপার সুমিত কুমার জানান, ” নির্ধারিত মাত্রার থেকে শব্দ তান্ডব বাড়লেই এই মেশিন থেকে যাবতীয় তথ্য প্রিন্ট হয়ে বেরোবে। এক্ষেত্রে সহজেই আমরা শব্দ দূষণকারীদের চিহ্নিত করতে পারব এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণও করতে পারবো।” শব্দের মাত্রা জানার পাশাপাশি এই সাউন্ড লেভেল মিটার যন্ত্রে জিপিএস সিস্টেম চালু থাকার কারণে কোন কোন এলাকায় শব্দ তান্ডব চলছে তার তথ্য প্রমাণও পুলিশ পেয়ে যাবে থানায় বসেই। এই বছরে এই যন্ত্র থানায় আসার পরেও তার কতটা প্রয়োগ হবে সেটাই এখন দেখার।