28 C
Kolkata
Wednesday, May 8, 2024
spot_img

Bengal SSC recruitment Verdict – ‘বাড়তি পদ’ তৈরির বিরুদ্ধেও তদন্তের নির্দেশ, এমনকি হেফাজতেও নিতে পারে সিবিআই: হাই কোর্ট

Webdesk, Kolkata, 22th April 2024: সোমবার এসএসসি মামলার রায় ঘোষণা করেছে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শাব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ। ২০১৬ সালের সম্পূর্ণ নিয়োগ প্রক্রিয়াই বাতিল করে দেওয়ার ফলে চাকরি বাতিল হলো ২৫,৭৫৩ জনের। আদালত সিবিআইকে এই সংক্রান্ত তদন্ত চালিয়ে যেতে বলেছে। সেই সঙ্গে এসএসসি প্যানেলের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার পরেও যাঁরা চাকরি পেয়েছেন, চার সপ্তাহের মধ্যে তাঁদের বেতন, সুদ-সহ ফেরত দিতে বলা হয়েছে। বছরে ১২ শতাংশ হারে সুদ দিতে হবে ওই চাকরিপ্রাপকদের পাশাপাশি এসএসসিতে বেআইনি নিয়োগ করতে অনেক অতিরিক্ত পদ (সুপারনিউমেরিক পদ) তৈরি করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। রাজ্য সরকারই সেই অনুমোদন দিয়েছিল। সোমবার কলকাতা হাই কোর্ট জানিয়েছে, সিবিআই রাজ্য সরকারের সঙ্গে যুক্ত সেই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধেও তদন্ত করবে, যাঁরা অতিরিক্ত পদ তৈরির অনুমোদন দিয়েছিলেন এবং প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। প্রয়োজনে ওই ব্যক্তিদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করতে পারবে কেন্দ্রীয় সংস্থা, জানিয়েছে আদালত।

Bengal

আসলে সুপারনিউমেরিক পদ কী?
  1. অভিযোগ, এসএসসিতে টাকার বিনিময়ে যাঁরা বেআইনি ভাবে চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের নিয়োগ করার মতো পর্যাপ্ত শূন্যপদ ছিল না। তাই বেশ কিছু অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করা হয়েছিল। এগুলিকেই সুপারনিউমেরিক পদ বলা হচ্ছে। ওই পদগুলিতেই অযোগ্য প্রার্থীদের একটা বড় অংশকে নিয়োগ করা হয় বলে অভিযোগ। এ ভাবেই খাতায়-কলমে দেখানো হয়, তাঁদের নিয়োগ আসলে বৈধ।
  2. এসএসসি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে স্কুল শিক্ষা দফতরের একটি চিঠি হাতে পায় সিবিআই। যা তারা আদালতে জমা দেয়। সেখানে চিঠির বিষয় হিসাবে বলা হয়েছে, ‘‘ওয়েটিং লিস্টের চাকরিপ্রার্থীদের জন্য বিভিন্ন সরকারি এবং সরকার-পোষিত স্কুলে সহকারী শিক্ষক (কর্মশিক্ষা, শারীরশিক্ষা-সহ) এবং অশিক্ষক কর্মীর কিছু ‘সুপারনিউমেরিক পোস্ট’ তৈরির প্রস্তাব।’’ রাজ্য মন্ত্রিসভাকে ওই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।
  3. প্রস্তাবপত্রে নবম-দশমের জন্য ১,৯৩২টি, একাদশ-দ্বাদশের জন্য ২৪৭টি শিক্ষকের অতিরিক্ত পদ তৈরির কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া, গ্রুপ সি-র ১,১০২টি, গ্রুপ ডি-র ১,৯৮০টি অতিরিক্ত পদ এবং শারীরশিক্ষা, কর্মশিক্ষায় মোট ১,৬০০টি অতিরিক্ত পদ তৈরির কথা বলা হয়েছে।

Bengal

প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়

এই বিষয় অবশ্য বিচারপতি থাকাকালীন এই মামলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে এই মামলায় তিনি সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন। নিয়োগ মামলায় তিনি কমবেশি পাঁচ হাজারেরও বেশি চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন। পরে ধাপে ধারে সেই সব নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শাব্বার রশিদির বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চ কার্যত প্রাক্তন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশই বহাল রেখে আরও বেশি চাকরি বাতিল করল এবং এরই পাশাপাশি আদালতের নির্দেশ, অতিরিক্ত পদ তৈরি করে বেআইনি ভাবে চাকরি দেওয়ার বিষয়ে রাজ্য সরকারের যে ব্যক্তিরা জড়িত ছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত চালাবে। তদন্তের স্বার্থে সন্দেহভাজনদের হেফাজতে নিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করবে তারা। উল্লেখ্য, ২০২১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার তৃতীয় বার ক্ষমতায় আসার পরেই শিক্ষামন্ত্রীর পদ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছ থেকে গিয়েছিল ব্রাত্য বসুর কাছে। অর্থাৎ, যে সময়ে মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে এই অতিরিক্ত পদের অনুমোদন দেওয়ার অভিযোগ, সেই সময়ে শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন ব্রাত্য বসু। পার্থ ছিলেন শিল্পমন্ত্রী।

Bengal

স্কুল সার্ভিস কমিশন

এদিকে ইতিমধ্যে স্কুল সার্ভিস কমিশন জানিয়ে দিয়েছে, তারা এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবে। রায়গঞ্জের সভা থেকে রায়কে ‘বেআইনি’ বলে তোপ দেগেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানম এসএসসির সব মামলাই বিচারপতি বসাক এবং বিচারপতি রশিদির বিশেষ বেঞ্চে পাঠান শুনানির জন্য পাঠান। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মেনে ছ’মাসের মধ্যে শুনানি প্রক্রিয়া শেষ করে এই বেঞ্চ। তার এক মাসের মাথায় সোমবার ২২ মার্চ রায় ঘোষণা করল বিচারপতি বসাক এবং বিচারপতি রশিদির বিশেষ বেঞ্চ।

Related Articles

Stay Connected

17,141FansLike
3,912FollowersFollow
21,000SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles