ওয়েবডেস্ক, বেঙ্গল টুডে:
বর্তমান সমাজে প্রায়ই বিভিন্ন রেল স্টেশন, বাস স্ট্যান্ড, অথবা ফুট পাথে পথ চলতে নিত্যদিন বহু বৃদ্ধ বৃদ্ধাকে দেখতে পাওয়া যায়। কেউ বা জীর্ণ আবার কেউবা শীর্ণের ন্যায় ঘুরে বেড়ায় পথে ঘাটে। নিত্যদিন সবসময় পথ চলার পথে ব্যস্ততার মাঝে ভিড়ে হাড়িয়ে যায় এই সমস্ত মানুষদের আসল পরিচয়, তাদের বাড়ি সবই হয়ে ওঠে অতীত। আর এই সমস্ত হীন মানসিকতার মানুষের মাঝেই বাসা বেঁধেছে নবপ্রজন্মের চিন্তাধারা। যার জেরে বেশিরভাগ মানুষ আজ তাদের মা বাবার অক্ষ্যম সময়ে অর্থাৎ যখন তাঁরা বৃদ্ধ বা বৃদ্ধা সেই মুহূর্তে তাদের নিজ নিজ বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে আসা হয় কোন বৃদ্ধাশ্রমে। ১৮ই জানুয়ারি রাতে ঠিক একইরকম এক দুঃখিনী মাকে দেখতে পাওয়া যায় উত্তর ২৪ পরগণার ব্যারাকপুর সেন্ট্রাল রোডে ই রোডের মুখে বন্ধ একটি দোকানের সামনে। বৃদ্ধার নাম বাসন্তী মন্ডল।
ঘটনা সুত্রে খবর, এদিন সকালে বাসন্তী দেবীর ছেলে অর্থাৎ গনেশ মণ্ডল তার রিক্সায় করে তাকে ব্যারাকপুর সেন্ট্রাল রোডে নিয়ে আসেন! এরপর একটি দোকানের সামনে বৃদ্ধাকে বসান। এবং বলেন সে নিজে এসে তাকে নিয়ে যাবে। ছেলের কথা মতো বৃদ্ধ মা তার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। কিন্তু তার সেই অপেক্ষায় গোটা দিন পেরিয়ে যায় এবং রাত পর্যন্ত ছেলের দেখা পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় সুত্রে দাবী, রাত বাড়তেই এলাকার মানুষের চোখে পরেন এই বৃদ্ধা। এরপর এলাকার বাসিন্দারা ঠান্ডায় কাতর ওই বৃদ্ধাকে দেখতে পেয়ে তার সাথে কথা বলেন এবং তার কাছ থেকেই গোটা ঘটনার বিষয়ে অবগত হন। বৃদ্ধার সব কথা শুনে স্থানীয়রাই ওই এলাকার প্রাক্তন পৌরপিতা মিলন কৃষ্ণ আশ কে খবর দিলে তিনি ওই মহিলাকে রাতে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে দেন। এবং শুরু হয় বাসন্তীদেবীর ছেলের খোঁজ। অবশেষে হদিশ মেলে তাঁর। তখন ছেলে আসেন মাকে নিতে! দাবি করেন, তিনি মাকে ছেড়ে দেননি, বসিয়ে রেখে গিয়েছিলেন!
তবে প্রশ্ন যে, বৃদ্ধা মাকে কি কেউ সারাদিন বসিয়ে রেখে চলে যায়? মার কথা কি তাহলে ভুলেই গিয়েছিল ছেলে? না কি বাধ্য হয়েই ফের মায়ের হাত ধরা?