মিজান রহমান, ঢাকা:
গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থায় বিচার বহির্ভূত হত্যাকন্ড কখনো গ্রহণযোগ্য নয়, ২ রা জুন এক যৌথ বিবৃতিতে এ কথা বলেছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাবিদ ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের এক বিবৃতিতে উদ্বেগ জানিয়ে স্বাক্ষর করেছেন ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, কথাশিল্পী হাসান আজিজুল হক, নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, আতাউর রহমান, মামুনুর রশীদ, কবি নির্মলেন্দু গুণ, নাসিরউদ্দীন ইউসুফ, প্রাবন্ধিক মফিদুল হক, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ ও সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ। মাদক নির্মূলে দেশজুড়ে চলা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে শতাধিক মৃত্যু ঘটেছে, যাকে বিচার বহির্ভূত হত্যাকন্ড বলছেন মানবাধিকার কর্মীরা।
অন্যদিকে সমালোচনার মুখেও এই অভিযান অব্যাহত রাখার ঘোষণা এসেছে সরকারের কর্তাব্যক্তিদের কাছ থেকে। এর মধ্যেই টেকনাফের যুবলীগ নেতা ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর একরামের পরিবার অভিযোগ তুলেছে, তাকে ধরে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বক্তব্যের সপক্ষে মৃত্যুর আগে একরামের সঙ্গে টেলি কথপোকথনের একটি অডিও টেপও প্রকাশ করেছে তার পরিবার, যা নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা।
বিবৃতিতে বলা হয়, 'সারা দেশে যে মাদকবিরোধী অভিযান চলছে তার যৌক্তিকতা আমরা অনুধাবন করি। দেশে খুব কম পরিবার আছেন যারা মাদকের ভয়াবহতা থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পেরেছেন। তাই সঙ্গত কারণে সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থনও এই অভিযানে প্রত্যাশিত ছিল।' 'কিন্তু আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ বিচার বহির্ভূত হত্যার শিকার হচ্ছেন, যা অভিহিত করা হচ্ছে 'বন্দুকযুদ্ধে নিহত' বলে। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থায় এমন মৃত্যু কখনও গ্রহণযোগ্য নয়। সংবিধান প্রদত্ত জীবনের অধিকার এভাবে কেড়ে নেওয়া যায় না।'
একরামের মৃত্যুর প্রসঙ্গে বিবৃতিতে বিশিষ্টজনেরা বলেছেন, 'যা কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজে অকল্পনীয়। এরকম একটি ঘটনাই সমগ্র অভিযানকে প্রশ্নবিদ্ধ ও জনগণকে আতঙ্কিত করতে যথেষ্ট।' যত দ্রুত সম্ভব বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে সঠিক তথ্য প্রকাশের মধ্য দিয়ে ভয়ভীতি থেকে মানুষকে মুক্ত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তারা।