মিজান রহমান, ঢাকাঃ বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ২২ হাজার নারী নতুন করে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। আর এ মরণব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে প্রতিবছর মৃত্যু বরণ করেন অন্তত ১৭ হাজার নারী। এছাড়া বিশ্বে প্রতি ৮ জনের মধ্যে গড়ে একজন নারী জীবনের কোনো না কোনো সময় এ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন।
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!
৯ই মার্চ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে নারীদের স্তন ক্যান্সার সচেতনতা বিষয়ক এক গোলটেবিল আলোচনা সভায় বক্তারা এসব তথ্য জানান। পিংক লাইফ বাংলাদেশের উদ্যোগে ‘ব্রেস্ট ক্যান্সার: কতটা সচেতন আমরা?’
শীর্ষ এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বৈঠকে পিংক লাইফ বাংলাদেশের অন্যতম উদ্যোক্তা এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহনাজ চৌধুরী বলেন, গ্লোবাল ক্যান্সার স্ট্যাটিসটিকস (গ্লোবক্যান) এর মতে, বিশ্বে প্রায় ২১ লাখ নারী ব্রেস্ট ক্যান্সার বা স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। ‘বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটের পাশাপাশি বাংলাদেশে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর দ্বিতীয় শীর্ষে রয়েছে স্তন ক্যান্সার। আর নারীদের মধ্যে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কারণে শীর্ষ এই রোগটি।
এছাড়া বাংলাদেশের অন্তত ৫ কোটি ৮৭ লাখ নারী কোনো না কোনো ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকিতে রয়েছেন।’ স্তন ক্যান্সার মোকাবেলায় সচেতনতা এবং ‘সেলফ ডিটেকশন’র বিকল্প নেই বলেও মনে করেন এ বিষয়ের গবেষক ও বিশেষজ্ঞরা। আলোচনা সভায় বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. জাফর মাসুদ, ইমপালস হাসপাতালের চিফ অপারেটিং অফিসার ডা. তবির উদ্দিন আহমেদ, বিএসএমএমইউ-এর সহযোগী অধ্যাপক ডা. সামিয়া মুবিন, নাট্যব্যক্তিত্ব চয়নিকা চৌধুরী, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম, মুন্নী সাহা, ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
সভায় বৈঠকের প্রধান আলোচক প্রধানমন্ত্রীর তথ্য বিষয়ক উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, স্তন ক্যান্সার খুব সংবেদনশীল একটি বিষয়। তবে সংবেদনশীল বলে তা এড়িয়ে যাওয়া যাবে না। এই সমস্যা শুধু নারীদের না, বরং পুরো সমাজ ও রাষ্ট্রের সমস্যা। এর জন্য সামাজিক সচেতনতা এবং ব্যক্তি সচেতনতার পাশাপাশি রাষ্ট্রকে পৃষ্ঠপোষকতা করতে হবে, প্রণোদনা দিতে হবে।
ক্যান্সার সচেতনতা বৃদ্ধিতে গণমাধ্যমের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সচেতনতা বৃদ্ধিতে গণমাধ্যমকে মূল দায়িত্ব নিতে হবে। নিজেদের লেখনী, ভিডিও বা টক- শোর মাধ্যমে সাধারণ মানুষদের সচেতন করতে হবে। কারণ আমাদের মনে রাখতে হবে যে, সমাজে যদি সুস্থ নারী থাকেন অর্থাৎ সুস্থ মা থাকেন তাহলে আমাদের সমাজের সব ধরনের উন্নতি – প্রবৃদ্ধি সম্ভব।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আগে এ বিষয়ে সচেতন করতে হবে। স্তন ক্যান্সার বিষয়ে ছাত্রীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে করণীয় বিষয়ে আমাদেরও দায়িত্ব রয়েছে।
এজন্য প্রয়োজনে ক্যাম্পাসগুলোতে শুধু মেয়েদের নিয়ে সেমিনার করা যেতে পারে। সভায় স্তন ক্যান্সার সারভাইভার হিসেবে নিজেদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন সালমা সুলতানা মৌসুমী ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের উইমেন উইং এর চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ।