মিজান রহমান, ঢাকাঃ বাংলাদেশের রংপুরের গঙ্গাচড়ায় তিস্তার চরের বসতি এলাকায় আবাদি জমিতে সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপন না করার দাবিতে মানববন্ধন করেছে চরবাসী। গত বুধবার বিকেলে আবাদি ওই জমিতে দাঁড়িয়ে নারী, পুরুষ, শিশু সহ মটুকপুর চরের বাসিন্দারা এই মানববন্ধন করে।
চরবাসী জানায়, কোলকোন্দ ইউনিয়নের মটুকপুর চরের ১ নম্বর সিট মৌজায় আবাদি জমির ৩৮ নম্বর দাগে ১১৩ একর জমি আছে। যেখানে আবাদ করে দীর্ঘ প্রায় ৫০ বছর ধরে ওই চরের পাঁচ শতাধিক পরিবার খেয়ে-পরে বেঁচে আছে। কিন্তু একটি চক্র সেবার নামে নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। বিষয়টি জানাজানি হলে চরের মানুষের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
মটুকপুর চরের বাসিন্দা ইফনুছ আলী, আজিজুল ইসলাম, আজেদা বেগম, রহিমা বেগম, ফজলু মিয়া, নবীয়ার রহমান ও তফিজার রহমান বলেন, আমরা জীবন মরণ সংগ্রাম করে চরের জমি চাষাবাদ করেই পরিবার নিয়ে বেঁচে আছি। ওই চক্র যে জায়গায় পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপন করতে যাচ্ছে, তাতে ধান, সরিষা, গম, তামাক, আলু সহ বিভিন্ন ফসল আবাদ করে চরের মানুষ কোনোরকমে বেঁচে আছে। সেখানে সরকার পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনের অনুমতি দিলে পাঁচ শতাধিক পরিবার নিঃস্ব হয়ে যাবে।
বাপ-দাদার আমল থেকে প্রায় ৫০ বছর ধরে চরের অভাবি মানুষজন জমিগুলো আবাদ করে আসছে উল্লেখ করে চরবাসী জানায়, চরে বেশির ভাগ পরিবার নিজ উদ্যোগে সোলার স্থাপন করেছে। এছাড়া আগের তুলনায় চরে অনেক কাজ করছে সরকার ও জনপ্রতিনিধিরা। কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে চরবাসী জীবন গেলেও আবাদি জমিতে সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপন করতে দেবে না।
স্থানীয় ইউপি সদস্য রাশেদা বেগম ও আব্দুল বাতেন জানান, মটুকপর চরের মানুষের পাঁচ শতাধিক পরিবারের বেঁচে থাকার অবলম্বন ওই ১১৩ একর জমি। সেখানে পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপন করা হলে তাদের না খেয়ে মরতে হবে। একই ধরনের কথা উল্লেখ করে কোলকোন্দ ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব আলী রাজু বলেন, সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপন করা হলে মটুকপুর চরের পরিবারগুলো নিঃস্ব হয়ে যাবে। বাড়বে শিশুশ্রম-বাল্যবিয়ে। আর বাড়বে ওই চরের মানুষের দুর্ভোগ।