41.2 C
Kolkata
Friday, April 26, 2024
spot_img

বাংলাদেশের লক্ষ্য ১০ শতাংশ বার্ষিক প্রবৃদ্ধিঃ প্রধানমন্ত্রী

 

মিজান রহমান, ঢাকাঃ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশা করছেন, আগামী তিন বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি জোরদার হয়ে বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশে দাঁড়াবে। তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, বাংলাদেশের দ্রুত বিকাশমান অর্থনীতি আরো গতিশীল হয়ে আগামী তিন বছরে বার্ষিক প্রবৃদ্ধি দাঁড়াবে ১০ শতাংশে। তিনি বলেন, ২০২৪ সাল থেকে তাঁর দেশ 'স্বল্পোন্নত দেশের' তালিকা থেকে বেরিয়ে আসবে। তাঁর প্রায় এক দশকের শাসনামলে অর্থনীতির ধারাবাহিক বিকাশে প্রবৃদ্ধি ৬% থেকে ৭% এ উন্নীত হয়। গত জুনে সমাপ্ত অর্থবছরেও এই প্রবৃদ্ধি দাঁড়ায় ৭.৮৬%।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, চলতি অর্থবছরে এই প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৮.২৫% এবং এই প্রবৃদ্ধি অব্যাহতভাবে বাড়বে। যদি নির্বাচিত হই, আমি আপনাদের আশ্বস্ত করছি, আমরা যে পদক্ষেপ নিয়েছি তাতে ২০২১ সাল নাগাদ প্রবৃদ্ধি দাঁড়াবে ১০ শতাংশে। শেখ হাসিনা বলেন, গৃহীত নানা নীতি পরিকল্পনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এশিয়ার দ্রুত বিকাশমান অর্থনীতিতে পরিণত হতে পারে। এর একটি দৃষ্টান্ত তুলে ধরে তিনি বলেন, বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণে তাঁর সরকার ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক জোন তৈরি করেছেন। এরমধ্যে বর্তমানে ১১টি জোন চালু হয়েছে,অবশিষ্ট ৭৯টিতে নির্মাণ কাজ চলছে।

শেখ হাসিনা বলেন, আগামী বছর যথাসম্ভব দ্রুত সময়ে দ্বিতীয় পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে দরপত্র আহবান করা হবে। রাশিয়া এবং ভারত বাংলাদেশের পশ্চিমাংশে দেশের প্রথম পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এতে দুটি রিএ্যাক্টর থাকবে এবং ২০২৪ সাল থেকে এই কেন্দ্রে ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। দ্বিতীয় পরমাণু কেন্দ্রের জন্য 'আমরা জমি খুঁজছি' উল্লেখ করে তিনি আশা করেন, দক্ষিণাঞ্চলে দেশের একটি দরিদ্র এলাকায় এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হবে।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের পরে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জায়গা নির্ধারণ করে বাংলাদেশ এর জন্যে প্রস্তাব আহবানের কথা বিবেচনা করছে। সব দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের 'সুসম্পর্কের' কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকা সেই প্রস্তাবই গ্রহণ করবে যেটি এদেশের জন্যে উপযুক্ত ও সুবিধাজনক। ২০১৬ সালের শেষের দিক থেকে ৮ লাখ অথবা আর বেশী রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে, এই বিষয়টি একটি নির্বাচনী ইস্যু হতে পারে এমন আশঙ্কা তিনি নাকচ করে দেন। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের সঙ্গে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় প্রায় ১ কোটি লোক প্রতিবেশি দেশ ভারতে আশ্রয় নেওয়ার অভিজ্ঞতা থেকে বাংলাদেশীরা রোহিঙ্গাদের প্রতি একাত্মতা অনুভব করে।

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি খুব ভাগ্যবান যে, যখন আমি তাদের দুর্দশার কথা উপলব্ধির জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছি, প্রয়োজনে খাবার ভাগ করে খাওয়ার কথা বলেছি তখন মানুষ আমাকে বিশ্বাস করেছে। দেশের মানুষ তা গ্রহণ করেছে। তিনি আরো বলেন, আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করেছি। আমরা তাদের আশ্রয় দিয়েছি, তাদের খাদ্য ও চিকিৎসা দিয়েছি। নারী ও শিশুদের জন্য সুরক্ষার ব্যবস্থা করেছি। উভয় দেশ মধ্য নভেম্বর থেকে শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে সম্মত হয়েছিল। কিন্তু প্রথম গ্রুপটি ফিরে যেতে অস্বীকার করায় তা স্থগিত হয়ে যায়। নতুন সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন পাশের একটি দ্বীপে কিছু শরণার্থীকে স্থানান্তরের পরিকল্পনার কথা হাসিনা নিশ্চিত করেন। একইসঙ্গে তিনি বন্যা প্রবণ এলাকাটি কারাগারের মতো হয়ে যাবে এ ধরনের আন্তর্জাতিক উদ্বেগ প্রত্যাখ্যান করেন।

তিনি বলেন, এটি একটি সুন্দর দ্বীপ, এটি মানুষ গবাদি পশু চাষে ব্যবহার করে। তারা ওখানে ভালোভাবে থাকতে পারে। শিশুরা সেখানে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা পাবে। আমরা সেখানে ত্রাণ বিতরণের জন্য গুদাম তৈরি করেছি। তিনি বলেন, আমরা এই মুহূর্তে এক লাখ শরণার্থীর সহায়তায় প্রস্তুত, কিন্তু আমরা সেখানে দশ লাখ শরণার্থীর জন্য ব্যবস্থা করতে পারব। প্রধানমন্ত্রী আশ্বস্ত করেন, কোন শরণার্থীকে জোরপূর্বক মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হবে না। কিন্তু তিনি শরণার্থী সংকট মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সংস্থা সহ অন্যান্য দেশের সহায়তা চান। তিনি বলেন, মিয়ানমার নিজ দেশে তাদের মানুষদের কিভাবে ফেরত নিবে, তা নির্ধারণের দায়িত্ব এখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের।

Related Articles

Stay Connected

17,141FansLike
3,912FollowersFollow
21,000SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles