রাজীব মুখার্জী, আন্দুল, হাওড়াঃ এক নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ আজ প্রত্যক্ষ করলাম। কর্মসংস্থানের নতুন দিশাও বলা যায়। না কোন চাকরির বিজ্ঞাপন নয় কোন কর্মসংস্থানেরও নয় এ হল এক অভিনব উপায়, রাজ্যে যেখানে দিনের পর দিন বেকারের সংখ্যা বাড়ছে, সেখানে এই নাক ঘুরিয়ে ধরে এক নব প্রচেষ্টা চোখে পড়লো। মুখ্যমন্ত্রী মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন সভাতে এখন তেলেভাজার দোকান খুলে সংসারের পাশে দাঁড়ানোর যে নিদান দিয়েছেন "কোট আনকোট"। এই বিষয়টি দেখে মনে হলো হাওড়া পুরসভাও যেন সেই পথ ধরেই হাঁটছে। ৪ঠা ডিসেম্বর দুপুরে আন্দুল রোড ধরে মন্দির তলার দিকে, আন্দুল রোডের বাঁদিকে ঠিক বেতাই তলায় ব্রীজে ওঠার আগে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল নারায়ন। তার ঠিক আগে বাঁহাতে ওই সংকীর্ণ রাস্তায় নজর কাড়লো অসংখ্য বাইকের এবং টোটোর লাইন।
কৌতূহলবশত একটু জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, নারায়ণের গেটের দায়িত্বে রয়েছেন অভীক সাঁতরা। এরপর বাইক নিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা নারায়ণের গেট দিয়ে যখন প্রবেশ করছি তিনি এসে বাইকটা দাঁড় করালেন এবং জানালেন বাইক নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করা যাবে না। বাইরের গাড়ি প্রবেশ নিষিদ্ধ। ভদ্রলোককে জিজ্ঞেস করলাম ভেতরে তো পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে ও লোকেরা পার্কিং করছে। তিনি বললেন না ভেতরের আগে পার্কিং ছিল, এখন বাইরের গাড়ি ভেতরের রাখতে দেওয়া হয় না। বাইরেই পার্কিং করে আসতে হবে। ম্যানেজমেন্ট থেকে নাকি সেরকম নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাই আর কথা না বাড়িয়ে যথারীতি বাইরে রেখে আবার এলাম।
[espro-slider id=15633]
পার্কিংয়ের যে ছেলেটি পার্কিং ফিস আদায় করছিল তার সাথে কথা বললে সে জানায়, তাঁর নাম সন্তু। জিজ্ঞাসা করলাম অনেকেই এই পার্কিং পৌরসভা থেকে দেওয়া হয়েছে কিনা। আর ওনার কাছে পার্কিং ফিসের স্লীপ আছে কিনা উনি বললেন, "ওই সামনে ব্রিজের আগে এই পার্কিংয়ের মালিক দাঁড়িয়ে আছেন। ওনার নাম অসিত। আপনারা ওনার সাথে কথা বলুন। উনি সব বলতে পারবেন।" এরপর সামনে চায়ের দোকানে নাম জিজ্ঞেস করতে দোকানদার দেখিয়ে দিলো ওনাকে। পরিচয় করলাম অসিত বাবুর সাথে। তিনি জানালেন, "এই পার্কিং হাওড়া কর্পোরেশন থেকে পেয়েছি। টেন্ডারে অংশগ্রহণ করে পেয়েছি এই পার্কিংটা।" প্রশ্ন করলাম ওনাকে যে সামনে একটি বাস স্ট্যান্ড রয়েছে আর সেই বাস স্ট্যান্ডটিও পার্কিংয়ের মধ্যেই ঢুকে গেছে। যার জন্য সেখানে কেউ দাঁড়াতেও পারছে না। পুর রাস্তার দুদিকেই বাইকের পার্কিং আর তারপরেই টোটোর লাইন। আন্দুল রোড এমনিতেই খুব বেশি চওড়া নয়। তারমধ্যে এই পার্কিং যানজট বাড়াচ্ছে দেখলে বোঝা যাচ্ছে।
বাসের জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন একজন স্থানীয় বাসিন্দা। তাঁকে জিজ্ঞেস করতে তিনি বলেন, এই বাসস্ট্যান্ড পার্কিং-এ পরিণত হওয়ার পর থেকে লোকেদের বাস ধরতে খুবই অসুবিধা হয়, পাশাপাশি আরো জানালেন, "এই জায়গাটা এমনিতেই দুর্ঘটনা প্রবন। রাস্তার দু পাশে বাইকের পার্কিং টোটো স্ট্যান্ড। সামনে ব্রিজ দুর্ভোগ আরো বাড়িয়েছে। হাসপাতালের ভেতরের পার্কিং করার যথেষ্ট জায়গা রয়েছে। আগেও পার্কিং হতো। কি হলো যে এখন রাখতে দেয় না আর তারপরেই দেখছি এখানে পার্কিং -এর অনুমতি দিলো পুরসভা। এতো সরু রাস্তায় কিভাবে পার্কিং দেওয়া হলো জানি না।" আমরা যোগাযোগ করেছিলাম হাওড়া পুরসভার সাথেও কিন্তু এই বিষয়টি নিয়ে কেউ কোনো মন্তব্য করতে নারাজ।