রাজীব মুখার্জী, হাওড়াঃ বলুন তো দেখি হামি আর চুমুর মধ্যে পার্থক্য কোথায়? লুচি আর পুরির মধ্যে পার্থক্য জানেন? না কোনো স্কুলের প্রশ্নপত্র নয়। এটা “হামি ” র সংলাপ। সেখানে দুই পুঁচকের বন্ধুত্বের প্রতীক ছিল হামি। কিন্তু বয়সটা এখানে একটু আলাদা। তাই পরতে হল ফাঁদে। ঘটনাটি ঘটে শিবপুর বি. ই. কলেজের মডেল স্কুলে। জানা যায়, ক্লাস চলাকালীন শিবপুর বি ই কলেজ মডেল স্কুলের নবম শ্রেণীর তিনজন ছাত্র ও তিনজন ছাত্রী ক্লাসের মধ্যে অশালীন আচরন করে। যার দরুন তাদের সেই আচরনে ক্লাসের অন্য সকল ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে এক অস্বাভাবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। অপরদিকে ভরা ক্লাস রুমের মধ্যে ঘটে যাওয়া এই ঘটনা ধরা পড়ে সি সি টি ভি তে। এরপর ঘটনার বিচার করতে পরিচালন কমিটি শিক্ষকদের যৌথ সিদ্ধান্তে ওই ছাত্র ছাত্রীদের অভিভাবকদের ডেকে ট্রান্সফার সার্টিফিকেট নিয়ে নিতে বলা হয়।
স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে জানা যায়, যে গত অক্টোবর মাসে ক্লাসের মধ্যে সহপাঠী তিন জন ছাত্রীকে চুমু খায় তিন জন ছাত্র। তাদের ওই অবস্থায় দেখে অন্য ছাত্ররা বারণ করে কিন্তু তাতে কোনও ফল না হওয়ার কারণে অন্য ছাত্র ছাত্রীরা তাদের ক্লাস টিচারের কাছে অভিযোগ করে। অভিযোগ পেয়ে শিক্ষকরা সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করেন তাতেই উঠে আসে আসল ঘটনা। এদিকে, ওই তিনজোড়া ছাত্র ছাত্রীদের ঘনিষ্ঠ দৃশ্য ক্লোজসার্কিট ক্যামেরায় বন্দি হয়। যা ওই পড়ুয়াদের অভিভাবকদের ডেকেও প্রমান হিসাবে দেখানো হয়।
শিবপুর বি. ই. কলেজের মডেল স্কুলের প্রধান শিক্ষক শুভাশিস দত্ত জানান, এই ঘটনার পর স্কুল কমিটির বৈঠকের মতামতের পর গত ২৬শে ডিসেম্বর স্কুলের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয় অভিভাবকদের। তবে ছাত্র ছাত্রীদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে মানবিকতার দিক থেকে তাদের ফাইনাল পরীক্ষা দিতে বাধা দেওয়া হয়নি। এরপর পরীক্ষায় পাশ করার পর ৪ জন ছাত্রছাত্রী অন্য স্কুলে ভর্তি হয়েছে। বাকি দুই পড়ুয়া এখনও অন্যত্র যায়নি। তাই তাদের স্কুল থেকে বহিস্কার করার কথা বলা হয়।
অপরদিকে স্কুল পরিচালন কমিটির প্রেসিডেন্ট জানান, এই ৬জন ছাত্র ছাত্রীদের লঘু পাপে গুরু দন্ড দেওয়া হয়নি তাঁর কারন তাদের এই স্কুল থেকে বহিস্কার করার পাশাপাশি স্কুল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে অপর একটি স্কুলে তাদের ভর্তির জন্য কথা বলা হয়েছে। সেক্ষেত্রে সেই স্কুলে বাকি ৪ জনকে ভর্তি নিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে বাকি দুজন পড়ুয়াদের অভিভাবকরা এখনও পর্যন্ত এই স্কুল থেকে তাদের বাচ্চাদের বিতারিত করেননি। এক্ষেত্রে স্কুলের বাকি পড়ূয়াদের অভিভাবকরা এবং স্কুল কর্তৃপক্ষের কেউই তাদের রাখতে চান না স্কুলে। কারন অনুমান তাদের সাথে বাকি স্কুলের পড়ুয়ারা খারাপ আচরনের প্রতি আকৃষ্ট হতে পারে।
অন্যদিকে, এই ঘটনা প্রসঙ্গে অভিযুক্ত ছাত্রদের অভিভাবকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা মুখ খুলতে চাননি। পাশাপাশি অন্যান্য অভিভাবকরাও এই ঘটনায় মন্তব্য করতে চাননি। তাদের বক্তব্য, স্কুলের সিদ্ধান্তই সঠিক।