শর্বাণী দে, বেঙ্গল টুডেঃ
১৯শে মে দমদমের কৈখালিতে নিজের বাড়িতে খুন হন এক হোমগার্ড। মৃতের নাম শম্পা দাস। বাড়ির সিঁড়ির ল্যান্ডিংয়ে তাঁর রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। বাড়ির দোতলার একটি ঘর থেকে তাঁর স্বামী সুপ্রতীমকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। যদিও এই ঘটনায় সুপ্রতীমকেই সন্দেহ করছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই তাঁকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাঁর বয়ানে বেশ কিছু অসঙ্গতি রয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা যায়।
এছাড়া আরও জানা যায়, পুলিশকে দেওয়া বয়ানে সুপ্রতীম জানিয়েছিল তিন-চারজন দুষ্কৃতী তাঁকে চেয়ারের সঙ্গে বেঁধে ভারী কোনও জিনিস দিয়ে আঘাত করে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ মারে। এরপরই তিনি অচৈতন্য হয়ে পড়েন। ফলে তাঁর স্ত্রীকে কীভাবে খুন করা হয়েছে তা তিনি জানেন না। তিনি দাবি করেন, দুষ্কৃতীরা বাড়িতে লুটপাট চালানোর জন্যই এসেছিল।
যদিও এক্ষেত্রে পুলিশের বক্তব্য, বাড়ির জিনিসপত্র লন্ডভন্ড হলেও কোনও দামি জিনিস খোয়া যায়নি। সুপ্রতীমের বয়ান অনুযায়ী বাড়িতে তিন-চারজন এসেছিল। কিন্তু ঘরে তাদের পায়ের ছাপ পাওয়া যায়নি। ঘটনার আগে বা পরে প্রতিবেশীরা অচেনা কাউকেই বাড়িতে ঢুকতে বা বের হতে দেখেননি। তা ছাড়া নাইলনের দড়ি দিয়ে যেভাবে সুপ্রতীমকে বাঁধা হয়েছিল, তা যথেষ্ট দুর্বল ছিল। সেই বাঁধন তিনি অনায়াসেই খুলে ফেলতে পারতেন। কিন্তু, তা তিনি করেননি। তা ছাড়া শম্পাকে দুষ্কৃতীরা খুন করলেও প্রত্যক্ষদর্শী সুপ্রতীমকে কেন ছেড়ে দিল, সেই প্রশ্ন উঠেছে।
উল্লেখ্য ঘটনাস্থান থেকে একটি ছুরি উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে ওই ছুরি দিয়ে শম্পাকে খুন করা হয়নি। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ওই ছুরি দিয়ে সুপ্রতীমের গায়ে আঘাত করা হয়েছিল। সুপ্রতীমের শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখে পুলিশ প্রায় নিশ্চিত যে সে নিজেই নিজেকে আঘাত করেছিলেন।
DC হেডকোয়ার্টার অমিত পি জাভালগি বলেন, "পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে। ঘটনাস্থান থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। একাধিক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হচ্ছে। খুব শীঘ্রই ঘটনার কিনারা করা হবে।" খুনের মোটিভ সম্পর্কে কিছু জানাতে চাননি তিনি। তবে পুলিশের একটি সূত্রে জানা গেছে, শম্পার সঙ্গে সুপ্রতীমের সম্পর্ক ভালো ছিল না। স্বামী স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হত।