অরিন্দম রায় চৌধুরী ও শর্বাণী দে, কলকাতাঃ
রমজান মাসে শেষের মুখেই ঠিক মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে মুর্শিদাবাদের বড়োয়া এলাকার গৃহবধূ নুরজাহান বিবির ৬ মাসের শিশু তৌফিক মল্লিকের সঙ্গে। পারিবারিক সুত্রে খবর, অসাবধানতা বশত প্রায় আড়াই ইঞ্চির একটি পেরেক গিলে ফেলে ছোট শিশু তৌফিক।
শিশুটির কাকা হঠাৎই খেয়াল করেন শিশুটির মুখ দিয়ে ফেনা ও রক্ত বেরিয়ে আসছে। আর তারপরই তড়িঘড়ি শিশুটিকে মুর্শিদাবাদের বড়োয়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে তাকে পাঠানো হয় কান্দুলা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। সেখানও শিশুটির পরিবার কোন আসার আলো না দেখতে পেয়ে শিশুটিকে নিয়ে যায় বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। সেখানেও সমস্যার সম্মুখীন হন তৌফিকের পরিবার। এ যেন " অভাগা যে দিকে চায়, সাগর শুকিয়ে যায়" এর মত ঘটনা। আর এখানেই শেষ নয়। চলে এক নাগাড়ে শিশুটিকে নিয়ে দৌড়াদৌড়ি। এক হাসপাতাল থেকে আর এক হাসপাতাল। বর্ধমান মেডিকেল কলেজ থেকে ফের পাঠানো হয় কলকাতা শহরের নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালে। আড়াই ইঞ্চির পেরেকটি যা কিনা বিধে শিশুটির দেহে, তখনও তার সঠিক অবস্থান বোঝা যাচ্ছে না। এরপর চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে পাঠানো হয় রাজ্যের অন্যতম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এস এস কে এম -এ। কিন্তু এখানেও নিরাশ হতে হয় তৌফিকের পরিবারকে।
কাজেই বিষন্ন মনে মুকুন্দপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে শিশুটিকে নিয়ে যাওয়ার হলে অবশেষে এক্স-রে করে দেখা যায় শিশুটির দেহে ওই আড়াই ইঞ্চির পেরেকটির সঠিক অবস্থান। কাজেই আর সময় নষ্ট করা নয়। তড়িঘড়ি শিশুটিকে নিয়ে যাওয়া হয় অস্ত্রপচারের জন্য।
[espro-slider id=9959]
অবশেষে আসে সেই সন্ধিক্ষণ যার জোয়ারে খুশির ঈদের ঠিক আগেই মল্লিক পরিবার ফিরে পেল তাদের অমুল্য উপহার ছোট্ট ৬মাসের তৌফিককে সুস্থ ভাবে। বর্তমানে ছোট্ট তৌফিকের অবস্থা স্থিতিশীল বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। অবশ্য ওই বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের বক্তব্য এই অস্ত্রপচার ততোটা জটিল না হলেও বাধ সেধেছিল তৌফিকের বয়স। তবুও শত বিঘ্নতা থাকা সত্ত্বেও চিকিৎসকদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও তার দরুন সফলতায় স্বাভাবিক ভাবেই খুশি তৌফিকের পরিবার।