অরিন্দম রায় চৌধুরী, ব্যারাকপুরঃ
এই পৃথিবীর বুকে পরিবেশের থেকে মূল্যবান সম্পদ আর কিছু নেই। পরিবেশ না থাকলে পৃথিবীতে প্রাণই থাকত না। সোনা রূপো জহরত যত্ন করে রাখলেও মানুষ যত্ন নেয়নি পরিবেশের। যথেচ্ছ ব্যবহারে সে সম্পদ আজ ধুঁকছে। শেষ হয়ে যাওয়ার মুখে।
তবে দেরীতে হলেও মানুষ তার ভুলটা বুঝেছে। তাই ১৯৭৪ সালে বিশ্ব পরিবেশকে রক্ষা করার সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে, প্রতিবছর ৫ই জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত নেয় রাষ্ট্রসংঘ। প্রত্যেক বছর ভিন্ন ভিন্ন দেশকে এই দিবসের হোস্ট কান্ট্রির মর্যাদা দেওয়া হয়। এবার সম্মান বা দায়িত্ব পেয়েছে ভারত।
এবছরই জানা গিয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে দুষিত শহরগুলির বেশিরভাগই ভারতীয়। কাজেই এই দিনটি যে ভারতের মতো খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকা দেশের পক্ষে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তা বলাই বাহুল্য।
মঙ্গলবার ৫ই জুন, বিশ্ব পরিবেশ দিবস। এই দিনটিকে লক্ষ্য রেখে সাধারণ মানুষকে শুধু সচেতনতার বার্তা দেওয়াই নয়, এবার হাতে কলমে সচেতনতা জাগানোর জন্য উদ্যোগ নিলো ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ট্র্যাফিক বিভাগ। বিশ্ব পরিবেশ দিবসের দিনে স্থানীয় মানুষদের বার্তা দিতে বিশ্ব পরিবেশ দিবসে নিজের হাতে বৃক্ষরোপণ করে ব্যারাকপুর ট্র্যাফিক গার্ডের তরফ থেকে ওসি সেন্ট্রাল রাজেশ মন্ডল, ওসি ব্যারাকপুর ট্র্যাফিক গার্ড বিজয় ঘোষ, এ.এস.আই. কাঞ্চন বিশ্বাস প্রমুখ। ব্যারাকপুর চিড়িয়ামোড়ে মেহগনি ও শিমুল বৃক্ষের চাড়া পুতে দেন চিড়িয়ামোড় আইল্যান্ডে ও ট্র্যাফিক কিওস্কের পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে।
[espro-slider id=8458]
এদিকে পরিবেশ দিবসে এই বৃক্ষরোপণ সম্পর্কে ব্যারাকপুর ট্র্যাফিক গার্ডের এক আধিকারিকের কথায়, "এই বৃক্ষের চাড়া আজ যা এখানে লাগানো হলো তা ২ বছর ঠিক করে লালন-পালন করতে পারলেই তো আগামী দিনে মহীরুহে পরিণত হবে। এই স্থান দিয়ে আসা যাওয়া করা কত লোকের গরমের এই তপ্ত সময়, এই বৃক্ষের ছায়াই যে কত উপকারে লাগবে তা বলাই বাহুল্য"
অপরদিকে স্থানীয় পথচলতি মানুষও দেখা গেল বেশ অনুপ্রাণিত হয়ে এই কাজে চিরিয়ামোড়ে কর্মরত পুলিশ আধিকারিক ও সিভিক ভলেন্টিয়ারদের সাথে হাতে হাত মিলিয়ে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচী পালন করলেন। তারই মধ্যে একজন হয়তো আর না থাকতে পেরে আবেগবসত বলেই ফেললেন "যাদের এই পরিবেশ সম্পর্কে বেশী সচেতন থাকার কথা, যাদের মানুষের সুবিধা-অসুবিধার কথা ভাবার কথা তারা বড় বড় প্রাচীন গাছ কেটে নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধি করে চলেছেন। আর যাদের রাস্তার যান বাহন ঠিক-ঠাক করে চলছে কিনা তা দেখার কথা তারা তাদের কর্ম তো করছেনই, আবার দেখুন মানুষের সুবিধা-অসুবিধার কথাও মাথায় রেখে বৃক্ষরোপণও করছেন। আমাদের পাশাপাশি, পুলিশের এই কাজের জন্য এই বৃক্ষগুলিও এনাদের আশীর্বাদ দেবে, কারণ এই ব্রিক্ষগুলিরও তো প্রাণ আছে আমাদের মতনই"
এখন দেখার যে কতজন এই পরিবেশ নিয়ে সচেতন হচ্ছেন এবার, কারণ দেশ তো সবার তাই আমাদের সকলকেই এই পরিবেশ নিয়ে এবার একটু চিন্তা ভাবনা করতেই হবে