সন্দীপ ঘোষ, ঝাড়গ্রাম:
জঙ্গলে কাঠ,পাতা কুড়াতে গিয়ে দাঁতালের হামলায় মৃত্যু হল এক মহিলার। ২২ শে মে ঝাড়গ্রাম জেলার বেলপাহাড়ি থানার আখুলডোবা গ্রামে জঙ্গলে ঘটনাটি ঘটে । মৃত গৃহবধূর নাম সীতামণি পাল (৪৫)। বাড়ী তামাজুড়ী গ্রামে। জানা যায়, বেলপাহাড়ি থানার ভুলাভেদা রেঞ্জের তামাজুড়ি গ্রামের বাসিন্দা সীতামনি পাল, তার স্বামী সীতারাম পাল এবং গ্রামের আরো দুজন মহিলা গ্রাম থেকে প্রায় এক কিমি দূরে আখুলডোবার জঙ্গলে অন্যান্য দিনের মতো কেন্দু পাতা সংগ্রাহ করতে গিয়েছিলেন। সকাল সাড়ে ৬ টা নাগাদ তারা সবাই জঙ্গলে পাতা সংগ্রহের কাছে ব্যাস্ত ছিলেন। চার থেকে পাঁচ আটি পাতা তারা সংগ্রহ করেছিলেন। সেই সময় জঙ্গলের ভিতর কিছু নড়াচড়া আর শুকনো পাতার উপর দিয়ে কিছু হেঁটে যাওয়ার আওয়াজ পান সীতামনিরা। কি জিনিস তা দেখতে তারা পিছন ফিরে দেখার চেষ্টা করেন। তখনই তারা দেখেন একটি মাঝারি আকারের হাতি তাদের দিকেই ছুটে আসছে।
সীতামনির স্বামী সীতারাম পাল বলেন, "আওয়াজ শুনেই পিছন ফিরে দেখি একটি হাতি তেড়ে আসছে। আমরা সবাই ছুটতে থাকি। আমাদের সাথে গ্রামের আরো দুজন মহিলা ছিল। তারা সবাই ছুটে পালায়।আমারা স্ত্রী ও আমি ছুটতে থাকি। আমাদের পিছনে ছিল হাতিটি। আমাদের থেকে প্রায় পাঁচ হাত দূরে ছিল। আমি কিছুটা ছোটার পর জঙ্গলের রাস্তার এক ধারে একটি গাছের দিকে ঝাপ মারি। কিন্তু ও হাতির সামনে সোজা ছুটছিল। তার কিছু পরেই একবার ওর আওয়াজ পাই ওগো মারি দিল গো। ব্যাস তার পর সব শেষ।"
বনদফতর সূত্রে জানা যায়, বুনো ওই হাতিটি সীতামনিকে সামনে পেয়ে শুঁড়ে জড়িয়ে আছাড় মারে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। বর্তমানে দলমা দলের পাল এলাকায় নেই। যে হাতিটির আক্রমনে তামাজুড়ি গ্রামের মহিলা মারা গিয়েছেন সেই হাতিটি স্থায়ী হাতি নয়। পার্শ্ববর্তী ঝাড়খন্ড রাজ্য থেকে হাতিটি চলে এসেছিল বলে মনে করছে বন দফতর। যেহেতু ঝাড়খন্ড রাজ্যের সীমানা খুবই কাছে তাই এইভাবে প্রায়ই হাতি সীমানা পেরিয়ে বেসপাহাড়ির থানার ওই সব এলাকায় ঢুকে পড়ে। ওই জঙ্গলে একটি হাতিই ছিল বলে জানিয়েছে স্থানীয় মানুষ জন। এদিন এই ঘটনার পরেই স্থানীয় বনদফতরের লোকজন এবং বেলপাহাড়ি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
এবিষয়ে ঝাড়গ্রাম এডিএফ ও সমীর মজুমদার বলেন, ওই এলাকায় কোনও হাতি ছিল না। সম্ভবত ঝাড়খন্ড থেকে এসেছে। সরকারী নিয়ম অনুয়ায়ী পরিবারটিকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।