মিজান রহমান, ঢাকা:
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!
বাংলাদেশে প্রতিবছর গড়ে তিন কোটি ১০ লাখ মানুষ আইনগত সমস্যার মুখোমুখি হন। সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয় প্রতিবেশীদের সঙ্গে। আর সবচেয়ে জটিল সমস্যাগুলো হয় ভূমি-সংক্রান্ত। ৯ মে বুধবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টার মিলনায়তনে আয়োজিত ‘জাস্টিস নিডস অ্যান্ড স্যাটিসফেকশন ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়।
নেদারল্যান্ডের হেগভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ‘দ্য হেগ ইনস্টিটিউট ফর ইনোভেশন অব ল’ (হিল)-এর পরিচালনায় এবং নেদারল্যান্ড সরকার ও ব্র্যাকের সহযোগিতায় গবেষণাটি পরিচালিত হয়। বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ কী কী ধরনের আইনগত সমস্যার মুখোমুখি হন, কিভাবে সেগুলো সমাধানের চেষ্টা করেন, সমাধানের জন্য তারা কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছে যান, তাদের কাছ থেকে কেমন সাড়া পান— এই প্রশ্নগুলোকে সামনে রেখে গবেষণাটি করা হয়েছে। নিবিড় গুণগত সাক্ষাৎকারভিত্তিক পদ্ধতিতে পরিচালিত এ গবেষণায় সারা দেশ থেকে দৈবচয়নের ভিত্তিতে ছয় হাজার উত্তরদাতা অংশ নেন।
২০১৭ সালের আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে সমীক্ষাটি পরিচালিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন— হিলের হেড অব মেজারিং জাস্টিস ড. মার্টিন গ্রামাটিকভ, একই সংস্থার কোয়ান্টিটেটিভ জাস্টিস ডাটা অ্যানালিস্ট মার্টিন কাইন্ড। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ছিলেন ব্র্যাকের মানবাধিকার ও আইন কর্মসূচির প্রধান সৈয়দা ফারিসা কবির।
গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ফলাফলগুলো হলো— প্রতি বছর গড়ে তিন কোটি ১০ লাখ মানুষ আইনগত সমস্যার মুখোমুখি হয়ে থাকেন। তারা যেসব আইনগত সমস্যার সবচেয়ে বেশি মুখোমুখি হন তার ক্রমিক চিত্রটি এরকম— প্রতিবেশী ৪০ শতাংশ, জমির বিরোধ ২৯ শতাংশ, অপরাধ ২১ শতাংশ, পারিবারিক ১২ শতাংশ, অর্থ-সংক্রান্ত ১২ শতাংশ, সমাজকল্যাণ-সংক্রান্ত ১১ শতাংশ, ভোক্তা-সংক্রান্ত সমস্যা ৯ শতাংশ এবং দুর্ঘটনা ও আঘাতজনিত ৮ শতাংশ। সমস্যার গুরুত্বের দিক থেকে ভূমিবিষয়ক দ্বন্দ্ব-বিরোধ আইনগত সমস্যার মধ্যে সবার আগে স্থান পেয়েছে। গবেষণা প্রতিবেদনে এ ক্ষেত্রে ক্রমিক চিত্রটি এ রকমÑ ভূমিবিরোধ ২৫ শতাংশ, প্রতিবেশী ২২ শতাংশ, অপরাধ ১২ শতাংশ, পারিবারিক দ্বন্দ্ব ৭ শতাংশ, অর্থ-সংক্রান্ত বিরোধ ৭ শতাংশ, সমাজ কল্যাণ ৫ শতাংশ, গৃহ-সংক্রান্ত বিরোধ ৪ শতাংশ, দুর্ঘটনা বা আঘাতজনিত ৪ শতাংশ। অনুষ্ঠানে সবার জন্য কার্যকর আইনগত সহায়তাপ্রাপ্তি সহজ করতে বেশ কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে— আইনগত সমস্যার শ্রেণিকরণ করে অগ্রাধিকারভিত্তিতে সেগুলোর সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, আইনগত অধিকার সম্পর্কে সহজ ভাষায় প্রয়োজনীয় তথ্য সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানো, আনুষ্ঠানিক বিচার ব্যবস্থা এবং অনানুষ্ঠানিক বিচার ও সালিশ প্রক্রিয়ার কার্যকর সমন্বয় ঘটানো, কার্যকর ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য ডিজিটাল উদ্ভাবনকে ব্যবহার করা।