সন্দীপ ঘোষ, ঝাড়গ্রাম:
টিউশন পড়তে গিয়ে আর বাড়ি ফিরে আসেনি একদশ শ্রেণীর এক ছাত্রী। বেলা গড়িয়ে যাওয়ার পর বাড়ী ফিরে না আসায় ছাত্রীর পরিবারের লোকজনেরা পুলিশের দারস্থ হয়। থানায় অভিযোগ দায়ের হওয়ার ৯ ঘন্টা পর হাওড়ার এক ব্যক্তির বাড়ী থেকে উদ্ধার করে অভিমানী ছাত্রীকে। পুলিশের এই ভূমিকায় ব্যাপক খুশি কিশোরীর পরিবার। মেয়েকে সুস্থ ও সবলভাবে ফিরে পেয়ে কার্যত একেবারে আপ্লুত পরিবারটি। তারা ধন্যবাদ, কৃতঞ্জতা জানাচ্ছে স্থানীয় থানার আইসি কে। এই ঘটনা লালগড় থানা এলাকার।
লালগড়ের বছর ১৬-র কিশোরী। গত ৬ মে বাড়ি থেকে টিউশনি যাচ্ছে একথা বলে বেড়িয়ে ছিল। কিন্তু বেলা গড়িয়ে রাত হয়ে গলেও বাড়ি না ফেরায় মেয়েটির বাবা, মা থানার দ্বারস্থ হয়। ওই দিন রাত ১১ টা নাগাদ লালগড় থানায় নিঁখোজ অভিযোগ দায়ের করে পরিবারটি। আর পুলিশ অভিযোগটিকে এফআইআর হিসেবে গ্রহন করে নাবালিকা নিখোঁজ হওয়ার ক্ষেত্রে নিয়ম মতো একটি অপহরনের মামলা রুজু করে দ্রুত তদন্ত শুরু করে। পুলিশ জানিয়েছে ৬ মে সকালে মেয়েটি লালগড় থেকে বাসে চেপে প্রথমে মেদিনীপুরে যায়। মেদিনীপুর রেল স্টেশন থেকে হাওড়ার ট্রেন ধরে পৌছে যায় হাওড়ায়। সেখান থেকে জগাছা এলাকার একটি আশ্রমে চলে আসে। আশ্রমে খিচুড়ি প্রসাদও খায় সে। এরপর তাকে ইতস্তত ঘোরাঘুরি করতে দেখে এলাকার এক ব্যক্তির সন্দেহ হয়। সেই লোকটি তাকে সঙ্গে করে রামরাজাতলা থানা এলাকায় নিজের বাড়িতে নিয়ে যায়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ওই লোকটির বাড়ি থেকে তার ফোন নিয়ে মেয়েটি তার কয়েক জন বন্ধু বান্ধবকে ফোন করেছিল। পুলিশ কিশোরীর বন্ধুদের কাছ থেকে ওই ফোন নম্বরটি নিয়ে ফোনের টাওয়ার লোকেশন ট্রেস করে। আর তার পরেই সাত মে লালগড় থানার একটি টিম পৌছে যায় রামরাজাতলা স্টেশনে। সেখান থেকে পুলিশ ওই ব্যক্তিকে অন্য অছিলায় ফোনে স্টেশনে ডেকে পাঠায়। এরপর পুলিশ ওই ব্যক্তিকে জিঞ্জাসাবাদ করে মেয়ে টিকে উদ্ধার করে। পুলিশ জানিয়েছে ওই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সন্দেহজনক কিছু না মেলায় তাকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। ৮ই মে মঙ্গলবার কিশোরী মেয়েটির বাবা এবং মা ঝাড়গ্রাম আদালতে আবেদন জানিয়ে মেয়েকে ফিরিয়ে নিয়ে যান।
এদিন ঝাড়গ্রাম আদালত চত্ত্বড়ে কিশোরীর বাবা পেশায় রাজ মিস্ত্রী বিশ্বজিৎ মাহাতো এবং মা মমতা মাহাতো জানান, "আমরা লালগড় থানার আইসি অরুন খানকে ধন্যবাদ জানাই। ওনার চেষ্টায় আজ আমারা আমাদের মেয়েকে ফিরে পেলাম। পুলিশের কাছে আমরা কৃতঞ্জ।"
মেয়েটি মা মমতা মাহাতো বলেন, "বাড়িতে তেমন কিছুই হয়নি। আমি বলেছিলাম একাদশ শ্রেনীর পরীক্ষা শেষ হয়ে গিয়েছে। অনেক দিন পড়াশুনা করছিলনা। বলেছিলাম টিউশন শুরু করতে। ও মুখে কিছু বলেনি। সকাল বেলা পড়তে যাবে বলে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে ফিরে আসেনি। বেলা বাড়তেই চিন্ত শুরু হয়ে গিয়েছিল। চারিদিকে খোঁজ নিয়েও যথন পেলাম না তখন রাতে পুলিশে অভিযোগ করি। পুলিশকে ধন্যবাদ মেয়েকে সুস্থভাবে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। আদালত থেকে মেয়েকে নিয়ে যেতে এসেছি।"