সন্দীপ ঘোষ, ঝাড়গ্রাম:
একই পরিবারে ভিন্ন দুই রাজনৈতীক দলের প্রার্থী এমনি নজিরবিহীন ঘটনা সচরাচর চোখে পড়েনা। কিন্তু ঝাড়গ্রাম জেলার আগুইবনি গ্রাম পঞ্চায়েতের একতাল গ্রামের বাসিন্দা সম্পর্কে ভাসুর ও ভাই এর বৌ। একই বাড়িতে থাকেন তারা। কিন্তু ভিন্ন রাজনৈতিক দলের পতাকা নিয়ে ময়দানে তারা । ভোট মঞ্চে একে অপরের দলের বিরুদ্ধে যতই কথা বলুন না কেন বাড়িতে তার কোন প্রভাব নেই। ভাসুর আর ছোট ভাইয়ের বৌ। তারা তৃণমূল এবং বিজেপির হয়ে লড়াই করছেন। এক জন পঞ্চায়েত সমিতির আসনে অন্যজন গ্রামপঞ্চায়েত আসনে প্রার্থী হয়েছেন।
ঝাড়গ্রাম ব্লকের আগুইবনি অঞ্চলের একতাল গ্রামের লক্ষীন্দর সিং এবং তার ভাই এর বৌ দেবী ঘর ঠিক রেখে নির্বাচনের ময়দানে প্রতিদ্বন্দ্বি। লক্ষীন্দর বাবুরা তিন ভাই। এই প্রথম তিনি ভোটে দাঁড়িয়েছেন। তার বৌমা দেবী সিংও তাই। জোর কদমে শুরু করেছেন দুজনেই প্রচার। লক্ষীন্দর বাবু এলাকায় সজ্জন ব্যক্তি বলেই পরিচিত। চাষবাস করার পাশাপাশি ইলেকট্রিক ওয়ারিং এর কাজ করেন। প্রথমবার ভোটে দাঁড়ালেও লক্ষীন্দর বাবু এলাকায় অত্যন্ত পরিচিত একজন। পঞ্চায়েত সমিতির সংরক্ষিত আসনে তিনি জেতার ব্যাপারে নিশ্চিত। তার বৌমা দেবী গ্রামপঞ্চায়েত আসনে বিজেপির পক্ষ থেকে দাঁড়িয়েছেন। এই বিষয়ে লক্ষীন্দর বাবুর বক্তব্য ঘর ঠিক না থাকলে কি বাইরে ঠিক রাখা যাবে।
বৌমা বিজেপির হয়ে দাঁড়ালেও পরিবারে কোন প্রভাব পড়েনি। আমরা তিন ভাই তো একই বাড়িতে থাকি। কোন সমস্যাই নেই। ঘর ঠিক থাকলে বাহিরও ঠিক রাখা যাবে। দুই সন্তানের মা দেবী সিং ও অত্যন্ত সপ্রতিভ। তিনি বিজেপিতে আর তার ভাসুর তৃণমূলে কোন সমস্যা হয় কিনা জানতে চাইলে বলেন আমরা একটা বাড়িতেই থাকি। দাদা অন্য দলের হয়ে দাঁড়ালেও ঘরে কোন সমস্যা নেই। বাকবিতন্ডাও হয় না। প্রচারে বের হলেও বাচ্চারা তো ঘরেই থাকে। সবার মধ্যে থাকে। ঘরের ভিতরে কোন রাজনীতি নেই। ভোটে জিতে মানুষের চাহিদা গুলি নিয়ে কাজ করতে চাই। ঝাড়গ্রাম ব্লকের আগুইবনি গ্রামপঞ্চায়েতের একতাল গ্রাম রাজনৈতিক সৌজন্যের নজির তৈরি করেছে। এই ধরনের নজীর বাংলার রাজনীতিতে শান্তির বাতাবরণ তৈরীর ক্ষেত্রে ভূমিকা নেবে বলে রাজনৈতীক মহলের ধারনা।