মিজান রহমান, ঢাকা:
পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে রেলগাড়ি চলাচল নিশ্চিত করতে 'পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প' সংক্রান্ত একটি ঋণ চুক্তি সই হয়েছে। ঋণের পরিমাণ ২ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলার। রেলপথ মন্ত্রণালয় ২৭শে এপ্রিল বিকেলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এদিন চীনের স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বেইজিংয়ে অবস্থিত এক্সিম ব্যাংকের হেড অফিসে বাংলাদেশের পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের এ ঋণ চুক্তি সই হয়। এসময় বাংলাদেশের পক্ষে মো. জাহিদুল হক, অতিরিক্ত সচিব ইআরডি এবং মি. সুন পিং, চায়না এক্সিম ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট নিজ নিজ পক্ষে চুক্তিতে সই করেন। স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিআরইসি কর্মকর্তাবৃন্দ এবং চীনে বাংলাদেশ দুতাবাসের ইকোনোমিক কাউন্সিলর মো. জাহাঙ্গীর এ সময় উপস্থিত ছিলেন। চুক্তি স্বাক্ষর উপলক্ষে ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল বর্তমানে চীনে অবস্থান করছে। এর আগে ২০১৬ সালের ৮ই আগস্ট বাংলাদেশ রেলওয়ে ও চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেডের মধ্যে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প চুক্তি সই হয়।
রেলওয়ে সূত্র জানা যায়, এই প্রকল্পে ব্যয় হবে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা। চীন সরকারের সহায়তায় (জি টু জি) এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। ২০২২ সালের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা রয়েছে। প্রকল্পের আওতায় ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে ঢাকা থেকে কেরাণীগঞ্জ হয়ে মাওয়া পর্যন্ত অংশের বেশিরভাগই হবে উড়াল পথে। প্রকল্পের আওতায় ২০টি স্টেশন নির্মাণ ও ১০০টি রেলবগিও ক্রয় করা হবে। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকার ২০০৭ সালের ২৮শে আগস্ট ১০ হাজার ১৬১ কোটি টাকার বহুল আলোচিত পদ্মা সেতু প্রকল্প পাস করেছিল। পরে আওয়ামী লীগ সরকার এসে রেলপথ সংযুক্ত করে ২০১১ সালের ১১ই জানুয়ারি প্রথম দফায় সেতুর ব্যয় সংশোধন করে। তখন এর ব্যয় ধরা হয়েছিল ২০ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা। পদ্মা সেতুর ব্যয় আরও আট হাজার কোটি টাকা বাড়ানো হয়। ফলে পদ্মা সেতুর ব্যয় দাঁড়িয়েছে সব মিলিয়ে ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ৭২ ফুট প্রস্ত দ্বিতল বিশিষ্ট পদ্মা সেতু নির্মিত হচ্ছে কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে। যার উপর থাকবে চারলেনের সড়ক ও নিচে থাকবে রেল লাইন। ইতিমধ্যে প্রকল্পের ৫৮ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আসছে এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহে পদ্মা সেতুর চতুর্থ স্প্যান ৪০ ও ৪১নং পিলারের উপর স্থাপন হবে বলে আশাবাদী পদ্মার প্রকৌশলীরা।