বেঙ্গলটুডে প্রতিনিধি, ঢাকা:
ঢাকায় গুলশান হলি আর্টিজান বেকারিতে নজিরবিহীন জঙ্গি হামলার পর সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগ ও বাংলাদেশের সাম্প্রতিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে ‘সন্তুষ্ট’ প্রকাশ করেছেন ঢাকায় কর্মরত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা।
ডিএমপির ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটি বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) হায়াতুল ইসলাম জানান, বিদেশী কূটনীতিকদের আমরা স্বাভাবিক চলাচল করতে দেখছি। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তারা যাচ্ছেন। এখন ক্ষেত্র বিশেষ যদি কূটনীতিকদের সহযোগিতা প্রয়োজন পরে সেখানে আমরা তাদেরকে নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করছি। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া সহ বেশ কিছু দেশ রয়েছে যাদেরকে আমরা নানা রকম প্রোটকল দিয়ে থাকি। তবে সেটা একদমই ভিন্ন বিষয়। চলতি মাসে কূটনৈতিক প্রতিবেদকদের সংগঠন ডিক্যাব আয়োজিত ‘ডিক্যাব টক’য়ে প্রধান অতিথি হয়ে এসেছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাই কমিশনার অ্যালিসন ব্লেক। সংগঠনটি গত বছর ‘ডিক্যাব টক’য়ে তাকে আমন্ত্রণ জানালেও নিরাপত্তার কারণে সে সময় তার বাসায়ই ডিক্যাব টক অনুষ্ঠিত হয়। বর্তমানে ঢাকার নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে কূটনীতিকদের মধ্যে কোনো ধরনের আতঙ্ক নেই বরং তারা সন্তুট রয়েছেন। গুলশান হামলার মত ঘটনা আর না ঘটায় বিদেশি কূটনীতিকরা মানসিকভাবে স্বস্তি অনুভব করছেন।
পাশাপাশি এই অনুভূতিও তাদের রয়েছে যে বিদেশিরা এখনও জঙ্গি হামলার হুমকিতে রয়েছেন। জঙ্গি হামলার ঝুঁকিটা শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বের অনেক দেশেই রয়েছে। কয়েকটি দেশের গোয়েন্দা কার্যক্রম ‘ভালো’ হলেও মোটামুটি বিশ্বের ১৪০টি দেশে কম বেশি নিরাপত্তা ঝুঁকি রয়েছে বলে মনে করেন ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত মিকায়েল হেমনিতি উইন্টার। বিদেশি কূটনীতিকদের মন থেকে জঙ্গি হামলার শঙ্কা যদিওবা পুরোপুরি এখনও দূর হয়নি। সেটা ভেবেই তাদের চলাফেরায় এখনও সতর্কতা বজায় রাখতে হয়। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র সহ কয়েকটি দেশের উদ্বেগের পর বাংলাদেশের বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নানা পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার।
ইতিমধ্যে তাদের সুপারিশ অনুযায়ী, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় যৌথবাহিনী মোতায়েন, এ্যাভিয়েশন সিকিউরিটি ফোর্স নামে একটি বিশেষায়িত বাহিনী গঠন সহ বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় অত্যাধুনিক সরঞ্জাম যুক্ত করা হয়েছে। বিমানবন্দর এলাকার সকল স্ক্যানার যথাযথ ব্যবহারের পাশাপাশি যাত্রী পরিবহন এলাকায় সিসি ক্যামেরার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। গত বছরের মাঝামাঝি বাংলাদেশে পশ্চিমা স্বার্থের ওপর সম্ভাব্য হামলার ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করে ভ্রমণ সতর্কতা জারির পর ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে থাকে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডা। এক পর্যায়ে গত নভেম্বরে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা দেখতে আসে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের বেশ কয়েকটি প্রতিনিধি দল।