ওয়েবডেস্ক, ব্যাঙ্গালোর, বেঙ্গলটুডেঃ
কর্নাটক রাজ্যে সাংবাদিকতার এক নতুন দিক নির্দেশ করেছিলেন পি লঙ্কেশ। তারই পথ প্রদর্শক হয়েছিলেন গৌরী লঙ্কেশ। এমনকি তিনি গৌরী লঙ্কেশ পএিকার নামে কন্নড় সাপ্তাহিক টেবলয়েডের সম্পাদক পদে ছিলেন। তিনি সাংবাদিকতাকে সবসময় সত্যের উপর স্থাপন করতে চেয়েছিলেন কিন্তু সত্যের এই লড়াইয়ে অবশেষে ৫ই সেপ্টেম্বর রাত ৮ টা নাগাদ তাকে হার মানতে হয়।
ঘটনা সুত্রে খবর, ব্যাঙ্গালুরুর রাজারাজেশ্বরী নগরের বাড়ির সামনে হাঁটছিলেন গৌরী লঙ্কেশ। এবং তিনি বাড়ির ভিতরেও ঢুকে পড়ার পর হঠাৎ কিছু দুষ্কৃতি এসে গৌরীকে খুব কাছ থেকে গুলি করে পালিয়ে যায়।
পুলিশি তদন্তে উঠে আসে, গুলি মারার পর একটি গুলি গৌরীর কপালকে এফোঁড় ওফোঁড় করে দিয়েছিল। আর তারপরই গৌরীকে ভিক্টোরীয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় কিন্তু কোন লাভ হয়নি। কারন ঘটনাস্থলেই গৌরীর মৃত্যু হয়। এমনকি ঘটনাস্থল থেকেই চারটি কার্তুজের খোল উদ্ধার করেন পুলিশ।
এই ঘটনায় কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধারামাইয়া পুলিশকে তিনটি তদন্তকারী দল গঠন করার নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া তিনি জানিয়েছেন, “এই বিষয়ে পুলিশ কমিশনার ও ডিরেক্টর জেনারেলের সাথে কথাও হয়েছে”।
এমনকি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন টুইটের মাধ্যমে। তার মতে এই ঘটনা খুবই উদ্বেগের।
১৯৬২ সালে একটি হিন্দু পরিবারে জন্ম হয় গৌরী লঙ্কেশের। তার বাবার নাম পি লঙ্কেশ। তার জীবনে তিনি প্রথম সাংবাদিক হিসেবে যোগদান করেন ব্যাঙ্গালুরুর “টাইমস অফ ইন্ডিয়ায়”। তিনি সাংবাদিকতার মাধ্যমে সত্যান্বেষণ করতেন। সাংবাদিকতার পাশাপাশি তিনি ধর্মীয় শান্তি স্থাপনের জন্য কাজ করত এমন কিছু সংগঠনের সাথেও যুক্ত ছিলেন। তিনি বিজেপি সাংসদ প্রহ্লাদ যোশীর বিরুদ্ধে লেখালেখির কারনে মানহানি মামলায় জড়িত হন। এর জন্য তাকে ৬ মাসের জেলও কাটতে হয়। বর্তমানে তিনি জামিনে জেল থেকে ছাড়া পেয়েছিলেন। এমনকি গৌরীকে গেরুয়া শিবিরের কট্টর সমালোচক হিসাবেই সবাই চিনতেন। তার এই অস্বাভাবিক মৃত্যুতে সমাজকর্মী থেকে সারা দেশের সাংবাদিক মহল সকলেই প্রতিবাদে সরব। তবে সাংবাদিকরা কর্নাটকের যুক্তিবাদী লেখক এম এম কালর্বুগির হত্যার মিল খুঁজে পাচ্ছেন। যদিও এই দুটি হত্যার মধ্যে কোন মিল খুঁজে পায়নি কর্নাটক পুলিশ, এমনটাই দাবী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর।
বর্তমানে ফেসবুকে দুইজন ব্যক্তি গৌরী বিরোধী মতবাদ করায় মূলত সন্দেহের বশে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন এবং এর পাশাপাশি সাংবাদিকের বাড়ির গেটের পাশে থাকা সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছেন পুলিশ।