অরিন্দম রায় চৌধুরী, বেঙ্গল টুডেঃ
পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে অনেকটাই ম্রিয়মান বিজেপি। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, প্রথম থেকেই সাংগঠনিক শক্তি দিয়েই লড়াই করছে বিজেপি। তা সত্ত্বেও ৪ থেকে ৫ টি জেলায় তৃণমূলের তরফে ব্যাপক সন্ত্রাস করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দিলীপ ঘোষ।
বিজেপির তরফে সুপ্রিম কোর্টের কাছে মনোনয়ন পেশের সময় বৃদ্ধি থেকে শুরু করে প্রার্থীদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য আবেদন জানানো হয়েছিল। নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী নামানোরও দাবি করা হয়েছিল। বিজেপির সবকটি আবেদনই বাতিল করে দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। কোনও অভিযোগ থাকলে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা বলার জন্য বলা হয়েছে প্রার্থীদেরকে।
এই রায়ের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বিজেপি রাজ্য সভাপতি জানান, প্রথম থেকেই সাংগঠনিক শক্তি দিয়েই এগনোর চেষ্টা করছে বিজেপি। বহু জেলায় আশানুরূপ কাজও হয়েছে। কিন্তু চার-পাঁচটি জেলায় সন্ত্রাস করছে তৃণমূল। তবে এই চার-পাঁচটি জেলা বাদ দিয়ে বাকি জেলাগুলির সব আসনে বিজেপি প্রার্থী দিতে পারছে কিনা তা অবশ্য জানাননি দিলীপ ঘোষ।
দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, প্রত্যেক দিনই জায়গায় জায়গায় তৃণমূলের মোকাবিলা করছে বিজেপি। তাঁর অভিযোগ নির্বাচন কমিশন হাত তুলে দিয়েছে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনার চাইলেও, রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় বাহিনী চায় না। রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজ্যপালকেও কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন। রাজ্য সরকারের পুলিশ তৃণমূলের বাহিনীকে না থামিয়ে বিজেপি কর্মীদের গ্রেফতার করছে বলেও অভিযোগ করেছেন দিলীপ ঘোষ। তবে তাঁরা মাঠেই আছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
অপরদিকে বিজেপিকে মশার সঙ্গে তুলনা করলেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। সোমবার নাম না করেই তিনি বলেন, ‘মশারি খাঁটানো আছে। আর মশা ঢুকবে না।’ তাঁর কথায়, ‘বিরোধীদের পায়ের তলায় মাটি নেই। ওরা তাই সন্ত্রাসের কথা বলে সাংগঠনিক দুর্বলতা ঢাকার চেষ্টা করছে। সবই ঢপ ওদের।’
রাজ্যে আসন্ন পঞ্চায়েতের মনোনয়ন পর্বের শেষদিনে এসে অনুব্রত মণ্ডল বলেন, ‘মশারা একটু ভনভন করছিল। ঘুরে বেড়াচ্ছিল। কিন্তু আমরা মশারি খাঁটিয়ে দিয়েছি। ফলে মশার ভনভনানি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। মশা আর ঢুকবে না। আসলে বিরোধীদের কোনও ভিত নেই। ওরা সব ফাঁকা আওয়াজ করছিল। তা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে।’
এদিন অনুব্রত মণ্ডল সাফ জানান, ‘বিরোধীদের সঙ্গে লোক নেই। তাই ওরা প্রার্থী দিতে পারছে না। প্রার্থী খুঁজে পাচ্ছে না। নিজেদের সাংগঠনিক দুর্বতলা ঢাকতে উল্টে আমাদের দোষারোপ করছে। আমরা কোথাও কোনও বাধা দিইনি। আমরা বাধা দিলে একটা মনোনয়নও করতে পারত না ওরা। বাকি যে সমস্ত আসনে প্রার্থী দিতে পারেনি বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএম, সেইসব আসনে ওরা প্রার্থী খুঁজে পাচ্ছে না।’
অনুব্রত বিরোধীদের বার্তা দেন, ‘প্রার্থী থাকলে নিয়ে আসুন। আমি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে মনোনয়ন দেওয়াব।’ আর বিরোধীদের এই সাংগঠনিক দুর্বলতা প্রসঙ্গেই তিনি বলেন, ‘মানুষ সঙ্গে নেই বলেই ঝাড়খণ্ড থেকে দুষ্কৃতীদের নিয়ে এসে হামলা চালাচ্ছে বিজেপি। আমরা প্রশাসনকে জানিয়েছি, প্রশাসন তা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেবে।’
এদিন অনুব্রত বলেন, উন্নয়নের নিরিখে ভোট হবে। রাস্তার ধারে উন্নয়ন দাঁড় করানো হচ্ছে। সেই উন্নয়ন দেখবে মানুষ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উন্নয়ন দিয়ে ভরিয়ে দিয়েছেন বাংলাকে। বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে তিনি বলেন, মশার অত্যাচার বেড়েছিল, আমরা মশা খাঁটিয়ে দিয়েছি।