বেঙ্গলটুডে প্রতিনিধি, ঢাকা:
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রের নিরাপত্তায় ‘৩০৩ রাইফেল’-এর বদলে ‘১২ বোর শটগান’ ব্যবহার করা হবে। এ লক্ষ্যে নতুন ৫৩ হাজার ৩৩৪টি শটগান কেনার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। আর এ অস্ত্র কিনতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে ৩৯৭ কোটি ৫০ লাখ টাকার অতিরিক্ত বিশেষ বরাদ্দ চেয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের জন নিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন বলেন, যেসব আনসার সদস্য ভোট কেন্দ্রে নিয়োজিত হবেন তাদের মধ্যে প্রতি কেন্দ্রে প্লাটুন কমান্ডার (পিসি) ও সহকারী প্লাটুন কমান্ডারকে একটি করে মোট দুটি আগ্নেয়াস্ত্র (শটগান) সরবরাহের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। সে লক্ষ্যে আনসার ও ভিডিপি অধিদফতরের চাহিদা অনুযায়ী অস্ত্র ও গোলাবারুদ খাতে ৩৯৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা অতিরিক্ত বিশেষ বরাদ্দের জন্য একটি স্বতন্ত্র প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। ২১ শে মার্চ অর্থ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরীর কাছে পাঠানো চিঠিতে জননিরাপত্তা সচিব এসব কথা উল্লেখ করেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, গত জানুয়ারিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশোধিত বাজেট নিয়ে একটি সভা হয়। ওই সভায় নির্বাচন সামনে রেখে আনসার সদস্যদের জন্য অস্ত্র ও গোলাবারুদ কিনতে অতিরিক্ত বাজেটের প্রস্তাব উপস্থাপন করে জননিরাপত্তা বিভাগ। সেখানে অস্ত্র কেনার এ প্রস্তাবটি পৃথক ও স্বতন্ত্রভাবে পাঠানোর পরামর্শ দেওয়া হয় তাদের।
জানা যায়, বর্তমানে আনসার সদস্যরা ৩০৩ মি.মি. রাইফেল ব্যবহার করছেন। এর আগেও ভোট কেন্দ্রের নিরাপত্তায় এ অস্ত্রটি ব্যবহূত হয়েছে। আগামী নির্বাচনে কেন রাইফেলের বদলে শটগান ব্যবহার হবে? এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়েছে জননিরাপত্তা বিভাগের চিঠিতে। বর্তমানে আনসার সদস্যরা ৩০৩ মি.মি. রাইফেল ব্যবহার করছেন যার অধিকাংশই পুরনো, ব্যবহার-অনুপযোগী, ঝুঁকিপূর্ণ এবং বিভিন্ন বাহিনী থেকে পাওয়া। তদুপরি এ রাইফেলটি লিথাল উইপন হিসেবে শ্রেণিকৃত; যার ব্যবহার ক্রমান্বয়ে কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত রয়েছে। জননিরাপত্তায় লিথাল উইপনের স্থলে নন-লিথাল উইপন যেমন শটগানের ব্যবহার অধিকতর নিরাপদ ও কার্যকর। তাই বর্তমানে অন্য কোনো বাহিনীতে ৩০৩ মি.মি. রাইফেল ব্যবহার হয় না।
অর্থ বিভাগে পাঠানো চিঠিতে আরও বলা হয়, আসন্ন ১১তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করা একটি চ্যালেঞ্জ। এ নির্বাচনে সারা দেশে সম্ভাব্য ৩৮ হাজার ৫৯৬টি ভোট কেন্দ্রের নিরাপত্তায় অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রায় ৬ লাখ সদস্য নিয়োজিত থাকবে। জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে সম্ভাব্য ভোট কেন্দ্রগুলোয় মোতায়েন যোগ্য প্লাটুন কমান্ডার, সহকারী প্লাটুন কমান্ডার সহ সাধারণ আনসার সদস্যদের শটগান পরিচালনার বিষয়ে প্রশিক্ষণের পাশাপাশি ফায়ারিংয়ের মাধ্যমে অস্ত্র চালনায় দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।