পল মৈত্র, দক্ষিণ দিনাজপুরঃ
কলকাতা তেভাগা এক্সপ্রেসে ফের বাতিল করা হয়েছে এসি কোচ। রেলের খামখেয়ালিপনার বিরুদ্ধে ব্যাপক ক্ষোভ জমেছে মানুষের মধ্যে। গ্রীষ্মের চরম দাবদাহে এই কোচটি রাখার দাবি ফের একবার তুললো দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাবাসী।
বালুরঘাট ষ্টেশন থেকে সপ্তাহে ৬ দিন কলকাতা যাতায়াত করে ৮ কামরা বিশিষ্ট তেভাগা এক্সপ্রেস। ভোর সাড়ে ৫ টা নাগাদ বালুরঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া ট্রেনটি চিতপুর ষ্টেশনে পৌছায় বেলা ৩ টা নাগাদ। আবার চিতপুর স্টেশন থেকে বেলা ১২.৫০ নাগাদ ছেড়ে বালুরঘাটে ট্রেনটি ঢোকে রাত্রি সাড়ে ১০ টা নাগাদ। দিনে দিনে কলকাতা পৌঁছানোর সুবিধায় যাত্রী ভিড় চরম দেখা দেয় এই ট্রেনে। প্রথম দিকে ১৪ কামরা থাকলেও তা কমিয়ে দেওয়া হয় কংগ্রেসের রেলমন্ত্রক থাকাকালীন। দীর্ঘদিন ধরেই ট্রেনটির কোচ বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে এসি কামরা চালুর দাবি উঠেছিল।
অবশেষে গত ৩ মে ২০১৭ রাতে রেল কর্তৃপক্ষ প্রথম ঘোষণা করে তেভাগা এক্সপ্রেসটিতে এসি কামরা যুক্ত করার। পরদিন রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ তেভাগা এক্সপ্রেস বালুরঘাট ঢোকে ৭৩ আসনের একটি এসি কামরা সহযোগে। ৫০৫ টাকা ভাড়া নির্ধারন করা হয় বালুরঘাট থেকে কলকাতা পর্যন্ত এসি কামরার। তিনমাসের জন্য এসি কামরাটি পরিক্ষামূলক ভাবে লাগানো থাকবে বলা হলেও একমাস চলতে না চলতে তা তুলে নেওয়া হয়। প্রতিদিন ওই কামড়াতে যাত্রী বোঝাই থাকলেও লোকসান বলে অজুহাত দেওয়া হয় রেলের পক্ষে।
কিন্তু এলাকার মানুষ এবং জেলা রেল কমিটি গুলির সক্রিয়তায় ট্রেনটিতে ফের এসি যুক্ত করা হয় দিন কয়েকের মধ্যে। গত ৩১ জুলাই থেকে ১ আগস্ট ফের ট্রেনের এসি বাতিল করা হয়। লাভজনক একটি পরিষেবাকে বারবার কেন বন্ধ করা হচ্ছে এনিয়ে আবার সরব হয় সকলে। ৮ আগস্ট থেকে ৮নভেম্বর তিনমাস ফের একবার পরীক্ষামুলক ভাবে তেভাগাতে লাগানো হয় এসি কামরা। জানুয়ারি পর্যন্ত সেটি চললেও তা ফের বাতিল করা হয়। রেলের এই চরম খাম খেয়ালিপনার বিরুদ্ধে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে নানা মহলে।
তনয় মিশ্র নামে এক যাত্রী জানান, মাঝে মধ্যেই তার পরিবারকে ছুটতে হয় কলকাতা। দিনের মধ্যেই পৌঁছানোর কারণে তেভাগা এক্সপ্রেসে তারা যাতায়াত করেন। কিন্ত এসি বতিল করা হয়েছে। ফলে গ্রীষ্মের দাবদাহে তার মত প্রচুর যাত্রী বিপাকে। রেলের এমন সিদ্ধন্তের প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি এসি কামরা যুক্ত করার আর্জিও জানিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে এখলাখি বালুরঘাট রেল যাত্রী কল্যাণ ও সমাজ উন্নয়ন সমিতির চেয়ারম্যান স্মৃতিশ্বর রায় জানান, তাদের দাবিতেই দ্রুত এই ট্রেনে এসি বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রেল। কিন্তু তা বাতিল করা হচ্ছে বারবার। এইভাবে জেলার মানুষকে বঞ্চনার প্রতিবাদে তারা ইস্টার্ন রেলের জেনারেল ম্যানেজার, এসিস্ট্যান্ট জেলারেল ম্যানেজার কাছে চিঠি করেছিলেন। কিন্তু ওই সমস্যা না মিটিয়ে কর্তৃপক্ষ বারবার খামখেয়ালীপনা করে একবার চালু একবার বাতিল করছে এসি কোচ। এবার ফের তারা যোগাযোগ করেছেন কর্তৃপক্ষর সঙ্গে। বলা হয়েছে রেক পয়েন্ট না থাকায় এই সমস্যা হচ্ছে। জুলাই থেকে এই সমস্যার সমাধান হবে।