ওয়েবডেস্ক, বেঙ্গল টুডেঃ
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!
রামনবমীতে অস্ত্র মিছিলে বাঁধা দানের অভিযোগ উঠল পুলিশ ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে।রবিবার পৃথক দুটি ঘটনা ঘটেছে চুঁচুড়া থানা এলাকায়।এদিন সকালে চুঁচুড়া পুরসভার ৩নম্বর ওয়ার্ডের হেমন্ত বসু কলোনীতে রামনবমীর পুজো চলছিল।ওই সময়ে হিন্দু জাগরন মঞ্চ ও বিজেপির কর্মী সমর্থকেরা অস্ত্র নিয়ে মিছিল শুরু করতে গেলে ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সুনীল মালাকার দলীয় কর্মী সমর্থকদের নিয়ে অস্ত্র মিছিলে বাঁধা দেয় বলে অভিযোগ। ওই সময়ে হিন্দু জাগরন মঞ্চের লোকজন কম থাকায় তৃণমূল কাউন্সিলর সুনীল মালাকার তাদের হাত থেকে অস্ত্র কেড়ে নেন। ঘটনার খবর পেয়ে চুঁচুড়ার টায়ারবাগান,কেওটা প্রভৃতি এলাকা থেকে কর্মী সমর্থকেরা জরো হয়ে অস্ত্র কেড়ে নেওয়ার ঘটনায় কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকে।প্রতিপক্ষের পালটা প্রতিবাদে পিছু হটে কাউন্সিলর। ঘটনার খবর পেয়েই চুঁচুড়া থানার পুলিশ সেখানে হাজির হয়।কিন্তু পুলিশের সামনেই ফের অস্ত্র নিয়েই টায়ারবাগান এলাকা দিয়ে মিছিল নিয়ে জয় শ্রীরাম ধ্বনি দিতে দিতে মিছিল নিয়ে বেড়িয়ে যায় হিন্দু জাগরন মঞ্চ ও বিজেপির নেতা কর্মীরা।এদিন ৩নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সুনীল মালাকার বলেন আমি তিরিশ বছর ধরে রামের পুজো করি। রাম কারো পৈত্রিক সম্পত্তি নয়। আর আমরা কখনো রামের হাতে সোর্ড,ভোজালী দেখিনি। এদিন রামের নাম করে বিজেপির হুনুমানেরা অস্ত্র ঘুরয়ে ঘুরিয়ে নিজেদের বিরাট মাতব্বর ভাবছিল। এলাকার মানুষ ওদের আচড়নে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে প্রতিবাদ করেছে। তিনি বলেন বিজেপি হিন্দু জাগরণ মঞ্চের নাম করে পশ্চিমবঙ্গ কে ধর্মের নামে বিভাজন করে অশান্ত করতে চাইছে। মানুষ ওদের সঙ্গে নেই।
আর দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে কাপাসডাঙ্গা বানীচক্র মাঠের কাছে। এদিন সকাল থেকেই সেখানে রামনবমীর বড় পুজোর আয়োজন করে ছিল হিন্দু জাগরণ মঞ্চের নেতারা।সেখানে হাজির ছিলেন বিজেপির শীর্ষ নেতা রাহুল সিনহা।এদিন মিছিলের শুরুতে হিন্দু জাগরণ মঞ্চের নেতা কর্মীরা বিজেপির নেতা কর্মীদের সঙ্গে মিলিত হয়ে অস্ত্র নিয়ে মিছিলের প্রস্তুতি নিচ্ছিল।জেলার বিভিন্ন এলাকা যথা পান্ডূয়া,ধনেখালি,তারকেশ্বর,জাঙ্গিপাড়া,চন্ডিতলা থেকে কাতারে কাতারে বিজেপি কর্মী সমর্থক সেখানে জরো হন।অস্ত্র মিছিল নিয়ে আইন শৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে এই আশঙ্কায় চুঁচুড়া ও ব্যান্ডেল ফাঁড়ির পুলিশ সেখানে হাজির হয়।পুলিশ নেতা কর্মীদের জানিয়ে দেয় যেহেতু তারা কোন অনুমতি নেননি তাই তারা অস্ত্র মিছিল করতে পারবেন না। পুলিশের এই নির্দেশের পরেই কর্মী সমর্থকেরা পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়ে। ব্যান্ডেল ফাঁড়ির এক সাব ইনস্পেক্টার কর্মীদের থেকে অস্ত ছিনিয়ে পুলিশ ভ্যানে তুলে দেন।এতেই আরো উত্তেজিত হয়ে ওঠে হিন্দু আগরন মঞ্চের লোকজন। তারা পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু করে দেন।পুলিশ ভ্যানের ভিতরে তাকা অস্ত্র নিয়ে তারা জয় শ্রীরাম বলে অস্ত্র মিছিল নিয়ে রাস্তায় বেড়িয়ে পড়েন। পুলিশ কার্যত নীরব দর্শকের মতো দাঁড়িয়ে থাকে। কিছুক্ষনের মধ্যেই বিজেপির নেতা রাহুল সিনহা সেই মিছিলে যোগ দেন। কিন্তু তিনি কোন অস্ত্র হাতে নেন নি। রামনবমীর শোভাযাত্রার সভাপতি তথা হিন্দু জাগরন মঞ্চের সদস্য দামু কুন্ডু বলেন ১৫ বছর ধরে আমাদের চুঁচুড়ায় রামনবমী পালিত হচ্ছে। ধর্মীয় পরম্পরা মেনে আমরা বরাবর অস্ত্র নিয়ে মিছিল করি।কিন্তু পুলিশ আমাদের কাজে বাঁধা দিয়েছে বলেই সমস্যা হয়েছে। মিছিলের অনুমতির প্রসংগে তিনি বলেন চুঁচুড়া কমিশনারেটের পুলিশ সর্বদলীয় বৈঠক ডেকে আমাদের উপরে তাদের নির্দেশ চাপিয়ে দিচ্ছিল। তাই আমরা বৈঠক মাঝ পথে ছেড়ে চলে এসেছি। বিজেপির যুব মোর্চার সভাপতি সুরেশ সাউ বলেন যেখানে পুরনো ঐতিহ্য মেনে মিছিল হয় সেখানে নতুন করে অনুমতি নেওয়ার কোন দরকার নেই বলে জানি।কিন্তু তৃণমূল ও পুলিশ ইচ্ছাকৃত ভাবে আমাদের বাঁধা দিয়েছে। বিজেপির নেতা রাহুল সিনহা বলেন ধর্মীয় পরম্পরা মেনে রামনবমীর মিছিল হচ্ছে।সেখানে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ করা ঠিক নয়। অস্ত্র নিয়ে মিছিল করা যেতেই পারে। কিন্তু সেই অস্ত্র দিয়ে কাউকে আঘাত না করলেই হল।