মিজান রহমান, ঢাকা:
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বিমান বিধ্বস্ত হয়ে আহত যাত্রীদের বাংলাদেশে প্রশিক্ষিত নেপালিরা যেভাবে চিকিৎসা দিয়েছেন তাতে সন্তোষ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশি চিকিৎসক দল। ১৫ মার্চ বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক লুৎফর কাদির লেলিনের নেতৃত্বে চিকিৎসক সহ ৭ সদস্যের একটি দল কাঠমান্ডু পৌঁছে বাংলাদেশ দূতাবাসে সাংবাদিকদের কাছে এই প্রতিক্রিয়া জানায়।
লুৎফর কাদির বলেন, “নেপালি স্টুডেন্টরা আমাদের দেশে যায়, গিয়ে ওরা ট্রেইন্ড আপ হচ্ছে। তারা নিশ্চয়ই এখানে ভাল সার্ভিস দিচ্ছে। আগুনে শ্বাসনালী ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া রোগীদের জরুরি চিকিৎসার দিক তুলে ধরে এই চিকিৎসক বলেন, “ইনহেলেশন ইনজুরি যাদের থাকে, তাদেরকে আমরা সাসপেক্ট করামাত্রই ইনটিউবেট করি। এমনকি ৩৫ পার্সেন্ট বার্ন্ট একজন পেসেন্ট আছে, আইসিইউতে ভর্তি আছে, যাকে যেরকম প্রয়োজন পড়েছে, তাদেরকে তারা কিন্তু ইনটিউবেট করেছে, দেরি করেনি। আমার পয়েন্টটা ওখানে, তারা কিন্তু সার্ভিসটা দিচ্ছে। এখন পর্যন্ত তারা সেই সার্ভিসটা দিচ্ছে বলেই আমাদের দুজন পেসেন্ট, একজন মোটামুটি সুস্থ হয়ে দেশে ফিরে গেছে।” এই দলের সঙ্গে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের দুই সদস্যও রয়েছেন, যারা পোড়া লাশের ডিএনএ পরীক্ষা করে তাদের পরিচয় শনাক্ত করার কাজে নেপালকে সহায়তা করবেন। এক্ষেত্রে দলের নেতা লুৎফর কাদির বলেন, তারা আহতদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে নেপালি চিকিৎসকদের সঙ্গে সমন্বয় করে চিকিৎসা এগিয়ে নেবেন। বিগত সোমবার কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলার একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ৭১ জন আরোহীর মধ্যে ৫১ জনের মৃত্যু হয়। তাদের মধ্যে চার ক্রুসহ ২৬ জন ছিলেন বাংলাদেশি। কাঠমান্ডুর হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া বাকি দশ বাংলাদেশির মধ্যে স্কুল শিক্ষক শাহরিন আহমেদ প্রথম দেশে ফিরলেন। তিনি কাঠমান্ডু মেডিকেল কলেজে ভর্তি ছিলেন।
অপরদিকে বার্ন ইউনিটের আবাসিক সার্জন পার্থ শংকর পাল বিমানবন্দরে বলেন, “আমরা শুনেছি রোগীর প্রায় ৫০ শতাংশ পুড়ে গেছে। পায়েও আঘাত আছে। তার জন্য শতভাগ প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে।” বাকিদের মধ্যে কাঠমান্ডুর ওম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বাংলাদেশি রিজওয়ানুল হককে গত বুধবার নেপাল থেকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে গেছেন তার বাবা মোজাম্মেল হক। আর কাঠমান্ডু মেডিকেলে থাকা মেহেদী হাসান, সাঈদা কামরুন্নাহার স্বর্ণা এবং আলমুন নাহার অ্যানিও চিকিৎসকের ছাড়পত্র পেয়েছেন। তাদেরও শিগগিরই দেশে পাঠানো হবে বলে কাঠমান্ডুতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাশফি বিনতে শামস সাংবাদিকদের জানান। সংবাদ সম্মেলনে রাষ্ট্রদূত ছাড়াও কাউন্সিলর ও হেড অব চ্যান্সারি আল আলেমুল ইসলাম ইমাম ও ফার্স্ট অফিসার অসিত বরণ সরকার উপস্থিত ছিলেন।