Friday, March 24, 2023
spot_img

বাংলাদেশে দৃশ্যমান হলো পদ্মা সেতুর ১২০০ মিটার

মিজান রহমান, ঢাকাঃ পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের নাওডোবায় ৩৫ ও ৩৬ নং পিলারের উপর আরো একটি স্প্যান স্থাপনের মধ্য দিয়ে দুই প্রান্তে দৃশ্যমান হলো ১২০০ মিটার। আর ৮ম স্প্যানটি বসানোর পর স্বপ্নের পদ্মা সেতু আরো এক ধাপ এগুলো বাস্তবতার দিকে। জাজিরা প্রান্তে ৬ষ্ঠ স্প্যান বসানোর মাত্র ২৮ দিন পর ২০শে ফেব্রুয়ারি বুধবার দুপুর পৌনে ১ টার সময় শক্তিশালী ভাসমান ক্রেন তিয়ান-ই এর মাধ্যমে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্য ও তিন হাজার ১৪০ টন ওজনের সপ্তম স্প্যানটি বসলো।

সেতু বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে মাওয়ার কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে থেকে জাজিরা প্রান্তে বসানোর জন্য ৭ম স্প্যানটি নাওডোবোর উদ্দেশ্য রওয়ানা হয়। স্প্যানটি বিকেলে জাজিরার নাওডোবার ৩৫-ও ৩৬ নাম্বার পিলারের কাছ রাখা হয়। বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা আর প্রস্তুতি শেষে আজ বুধবার দুপুর পৌনে ১ টার সময় ক্রেন দিয়ে ৩৫ ও ৩৬ নম্বর পিলারের ওপরে স্প্যানটি স্থাপন করা হয়।

সূত্র জানায়, এর আগে ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নাম্বার পিলারের ওপর প্রথম স্প্যান, ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি ৩৮ ও ৩৯ নাম্বার পিলারের ওপর দ্বিতীয় স্প্যান, ১১ মার্চ ৩৯ ও ৪০ নাম্বার পিলারের ওপর তৃতীয় স্প্যান, ১৩ মে ৪০ ও ৪১ নাম্বার পিলারের ওপর চতুর্থ স্প্যান ২৯ জুন ৪১ ও ৪২ নম্বর পিলারের ওপর পঞ্চম স্প্যান ও এবং সবশেষ গত ২৩ জানুয়ারি ৩৬ ও ৩৭ নম্বর পিলারে বসানো হয় ৬ষ্ঠ স্প্যানটি। আজ জাজিরার নাওডোবায় ৭ম স্প্যানটি বসানোর মধ্য দিয়ে জাজিরা প্রান্তে ১০৫০ মিটার মুন্সীগঞ্জ প্রান্তের ৪ ও ৫ নম্বর পিলারের উপর বসানো ১ টি স্প্যান সহ এখন দৃশ্যমান হলো ১২০০ মিটার। ৮ম স্প্যানটি বসানোর সংবাদে পদ্মাপাড়ের মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দিপনা লক্ষ্য করা গেছে।

এ সেতু শুধু দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলই নয় সাড়া দেশের সড়ক বিভাগকে এক সুতোয় গেঁথে দেবে। আর দেশের অর্থনীতিতে উন্মোচিত হবে নতুন দিগন্তের। পদ্মাসেতুর দু’পাড়ে গড়ে উঠবে বিশ্বমানের পর্যটন কেন্দ্র, শিল্পায়নসহ আধুনিক শহর। শ্রমজীবী মানুষের ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

প্রসার ঘটবে ব্যবসা বাণিজ্যের। জাজিরা পূর্ব নাওডোবা এলাকার আব্দুল লতিফ ফকির বলেন, পদ্মাসেতু নির্মাণ করতে আমাদের বাপ দাদার ভিটে মাটি দিয়েছি। ভেবেছিলাম সেতু করার নামে আমাদের জমিজমা নিয়ে গেল। আমাদের প্রান্তে পরপর ৭টি স্পেন বসানো হয়ে গেলো। এ সেতু এখন আর স্বপ্ন নয়। এটা বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। আমারা বাপ দাদার ভিটে মাটি হারিয়েও এখন আনন্দিত। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই।

মো. মোসলেম মাদবর বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশি-বিদেশি সকল ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর কাজ শুরু করেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারণেই জাজিরাকে বিশ্ববাসী চিনেছে। এ কারণে আমরা গর্বিত। আমরা প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু কামনা করছি।

সেতু বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, বুধবার দুপুরে পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের ৭ম স্প্যানটি বসানো হয়েছে। মাওয়া প্রান্তের একটিসহ এ নিয়ে মোট ৮টি স্প্যান বসনো হলো। আগামী মাসের মধ্যে আরো স্প্যান বসানো হবে বলে আশা করছি। চলতি বছরের মধ্যে সবকটি স্প্যান বসিয়ে সেতুটি দৃশ্যমান করে তুলবো।

Related Articles

Stay Connected

0FansLike
3,743FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles