20 C
Kolkata
Sunday, December 10, 2023
spot_img

বাংলাদেশে সঞ্চয়পত্র কিনতে ভোগান্তি

মিজান রহমান, ঢাকাঃ গ্রাহকের জাতীয় পরিচয়পত্র এবং ই-টিন সার্টিফিকেট দিতে হচ্ছে। ৫০ হাজার টাকার বেশি অথের্র সঞ্চয়পত্রের অর্থ পরিশোধ করতে হবে চেকে অটোমেশন চালু করার ফলে সঞ্চয়পত্র কিনতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন ক্রেতারা। অধিকাংশ ক্রেতাকে সঞ্চয়পত্র কিনতে ইলেকট্রনিক ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (ই-টিন) না আনায় ফেরত যেতে হচ্ছে। প্রকৃত উপকারভোগীদের কাছে সঞ্চয়পত্র বিক্রি করতে বিক্রয় কাযর্ক্রম অটোমেশনের আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

গত ৩ রা ফেব্রুয়ারি অথর্মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অর্থ বিভাগের সচিব আব্দুর রউফ অভ্যন্তরীণভাবে অটোমেশন কাযর্ক্রম উদ্বোধন করেন। প্রকৃত উপকারভোগীদের পাশাপাশি সঞ্চয়পত্রে কালো টাকা এবং অতিরিক্ত বিনিয়োগ বন্ধ করতে সরকার অটোমেশন পদ্ধতিতে বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে। অটোমেশনে সঞ্চয়পত্র কিনতে গ্রাহকের জাতীয় পরিচয়পত্র ও ই-টিন সার্টিফিকেট দিতে হবে। ৫০ হাজার টাকার বেশি অথের্র সঞ্চয়পত্রের অর্থ পরিশোধ করতে হবে ব্যাংকের চেকের মাধ্যমে। প্রাথমিকভাবে অটোমেশন (অনলাইন) পদ্ধতিতে সঞ্চয়পত্র বিক্রি হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল শাখায়, সোনালী ব্যাংকের স্থানীয় শাখা, জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের ব্যুরো অফিস (গুলিস্তান) এবং বাংলাদেশ পোস্ট অফিসের প্রধান কাযার্লয়।

পরীক্ষামূলকভাবে তিনমাস চল?তার পর সফল হলে অটোমেশন প্রক্রিয়া সারাদেশে বিভাগীয়, জেলা শহরের কাযার্লয়ে শুরু হবে ২০১৯-২০ অথর্বছরের প্রথম দিন অথার্ৎ ১ জুলাই থেকে। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ পোস্ট অফিসের প্রধান কাযার্লয় ঢাকা, সোনালী ব্যাংকের স্থানীয় কাযার্লয় মতিঝিল ঢাকা ও জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর গুলিস্তান কাযার্লয়ে গিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তা ও সঞ্চয়পত্র ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।

সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে অটোমেশন প্রক্রিয়া চালু হওয়াতে অনেকেই খুশি হয়েছেন। এতে নগদ টাকা বহন করার ঝুঁকি থেকে মুক্তি পেয়েছেন। আবার অনেকেই ই-টিন সনদ না থাকায় সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেননি। তাদের জন্য কিছুটা ভোগান্তি হয়েছে। সোনালী ব্যাংকের স্থানীয় কাযার্লয়ে সঞ্চয়পত্র কিনতে আসা আলাউদ্দিন মিয়া বলেন, সরকার একটি যুগোপযোগী উদ্যোগ নিয়েছে। এতে নগদ টাকা নিয়ে সঞ্চয়পত্র কিনতে আসা এবং প্রতিমাসে সুদের টাকা তুলতে আসার ভোগান্তি থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। বাংলাদেশ পোস্ট অফিসের সঞ্চয়পত্র কিনতে আসা আয়েশা বেগম না কিনেই ফেরত চলে গেছেন। কারণ তার কোনো ই-টিন সনদ নাই।

তিনি বলেন, আমি সঞ্চয়পত্র কিনতে এসেছিলাম, তবে আমার ই-টিন সনদ না থাকায় সঞ্চয়পত্র দেয়নি। অটোমেশন প্রক্রিয়া চালুর ফলে সঞ্চয়পত্র কেনার জন্য জাতীয় পরিচয়পত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে ই-টিন সনদ। ৫০ হাজার টাকার বেশি অথের্র জন্য অবশ্যই ব্যাংকের চেকের মাধ্যমে পরিশোধ করতে হবে।

এজন্য সঞ্চয়কারীর ব্যাংক হিসাব নম্বর, মোবাইল নম্বর দিতে হবে। বাংলাদেশ পোস্ট অফিসের কর্মকর্তারা জানান, বৃহস্পতিবার তারা অনলাইনে মাত্র তিনটি সঞ্চয়পত্র বিক্রি করেছেন। তবে ক্রেতাদের চাহিদা বিবেচনা করে অনলাইনের পাশাপাশি সনাতন পদ্ধতিতে সঞ্চয়পত্র বিক্রি করা হচ্ছে। বাধ্যতামূলক জমা নেয়া হচ্ছে জাতীয় পরিচয়পত্র ও ই-টিন সনদের কপি। সনাতন পদ্ধতি খুব শিগগিরই বাতিল করে অনলাইনের বিক্রি হবে বলেও জানান পোস্ট অফিসের কর্মকর্তারা। বতর্মানে ই-টিন সনদের কারণে অপ্রাপ্ত বয়স্কদের নামেও সঞ্চয়পত্র বিক্রি করা যাচ্ছে না বলে জানান তারা।

জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর এক কর্মকর্তার নাম প্রকাশ না করার শতের্ জানান, অটোমেশনে সঞ্চয়পত্র বিক্রি শুরু হওয়ার ফলে বিক্রি অনেক কমে গেছে। তবে তিনি আশা করছেন, ধীরে ধীরে মানুষ অটোমেশনে সঞ্চয়পত্র কিনতে অভ্যস্ত হবে। এটি এক সময় জনপ্রিয় প্রক্রিয়া হবে। জাতীয় পরিচয়পত্র ও ইলেকট্রনিক ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (ই-টিন) ব্যবহার বাধ্যতামূলক করায় সঞ্চয়পত্রের প্রকৃত ক্রেতারা কিনতে পারবেন। প্রকৃত উপকারভোগীদের পাশাপাশি সঞ্চয়পত্রে কালো টাকা এবং অতিরিক্তি বিনিয়োগ বন্ধ করতে সরকার অটোমেশন পদ্ধতিতে বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে।

জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি অথর্বছরের জুলাই-ডিসেম্বর শেষে ২৪ হাজার ৯৯৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। একই সময়ে মোট বিক্রি হয়েছে ২ লাখ ৬২ হাজার ৭৬০ কোটি ৬ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র। ২০১৮-১৯ অথর্বছরে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ২৬ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা। বতর্মানে সঞ্চয়পত্রের বিভিন্ন মেয়াদের ১১টি স্কিম চালু রয়েছে। বিনিয়োগ করেছে প্রায় ২ কোটি মানুষ। সবোর্চ্চ সুদের হার ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ।

জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সামসুন্নাহার বেগম বলেন, নতুন ডাটাবেজ চালু হয়েছে। এখন থেকে সঞ্চয়পত্র কিনতে বাধ্যতামূলত করা হয়েছে জাতীয় পরিচয়পত্র ও ই-টিন সনদের কপি। ৫০ হাজার টাকার বেশি অথের্র সঞ্চয়পত্র কিনতে টাকা জমা দিতে হবে ব্যাংক চেকের মাধ্যমে।

মানুষের ভোগান্তির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে একটু সমস্যা হতে পারে। এ বিষয়ে মানুষ জানার পরে আর কোনো ভোগান্তি হবে না। বরং সবাই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন।

Related Articles

Stay Connected

17,141FansLike
3,912FollowersFollow
21,000SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles