Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!
শান্তনু বিশ্বাস, বানীপুরঃ বানীপুর লোক উৎসব মানেই লোক সংস্কৃতির ছোঁয়া, তাই এই মেলার মধ্য দিয়ে প্রতি বছরই গ্রাম বাংলার খেলাধুলা ও নানা সংস্কৃতি তুলে ধরা হয়, এবছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল, দলগত লোক নৃত্য, লোক সঙ্গীত, রবীন্দ্র নৃত্য, বসে আঁকো সহ বিভিন্ন প্রদর্শনীর মধ্যে- কৃষি,বিজ্ঞান, গ্রামোন্নয়নের বিষয় ছাড়াও থাকছে রাজ্য সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রদর্শনী। মেলায় থাকবে একটু ফিরে দেখ- লোক নৃত্য, নাটক, ঝুমুর। এছাড়াও থাকবে পুতুলনাচ, সঙের গান, ফকিরি গান এবং সকলের প্রিয় বাউল গান। এর পাশাপাশি প্রতিদিন রাতে অনুষ্ঠিত হবে যাত্রাপালা, কবিগান ও তরজা গান। এছাড়াও হবে বিভিন্ন প্রদেশের পূবাঞ্চলীয় তথ্য সংস্কৃতি কেন্দ্র। থাকবে আসাম, পাঞ্জাব, রাজস্থান ও গুজরাটের লোক নৃত্য। সাথে সাথে বিনোদন উপকরণ হিসেবে আছে নাগরদোলা সহ মরনকুপ।
বানীপুর লোক উৎসব বর্তমান রাজ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক মেলা। ছয় দশকের ঐতিহ্য বহন করে উৎসব আজ সাধারণ মানুষের উৎসবে পরিণত হয়েছে। গত শতকের পাঁচের দশকে যখন লোক উৎসব শুরু হয় তখনই এর রূপকারেরা এমন ভাবে এই উৎসবের পরিকল্পনা করেছিলেন, যাতে এই মিলন মেলায় সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ সুনিশ্চিত হয়। একই সঙ্গে উদ্দেশ্য ছিল আমাদের দেশের বর্নময় লোক সংস্কৃতি যা স্মরনাতিত কাল থেকে লোক শিক্ষায় বহনের কাজ করছে, বানীপুর লোক উৎসবও তার একটা অঙ্গ হিসেবে কাজ করছে। বানীপুরের এবারের লোক উৎসবেও বর্নময় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, প্রদর্শনী, গ্রামীন খেলাধুলা, আলোচনাসভা, শিশু স্বাস্থ্য ও গ্রামীণ মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
২৭ জানুয়ারী বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে হাবড়ার বাণীপুরের লোক উৎসবের শুভ উদ্বোধন হয়। ৬৫ তম বর্ষের এবারের মেলায় উদ্বোধন করেন প্রখ্যাত সাহিত্যিক আবুল বাশার, উপস্থিত ছিলেন কবি শ্রীজাত, মেলার মূল উপদেষ্টা হাবড়ার বিধায়ক তথা রাজ্যের খাদ্য ও সরবরাহ মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। গ্রামীন মেলার চিরাচরিত আকর্ষণ কেনা-বেচার হাটের উপর। আর তাই বানীপুর লোক উৎসবে প্রায় আটশত ভ্রাম্যমাণ দোকান নিয়ে এই মেলা শুরু হয়েছে। মেলায় কাঠ বাদাম থেকে শুরু করে, জিলেপি, ভেলপুড়ি,পাঁপড় ভাঁজা, হাতে তৈরি ভাপাপীঠে। এই মেলার ঐতিহ্যকে ধরে রাখতেই সমাজে পিছিয়ে পরা মানুষদের হাতে হাঁস, মুরগি ও বাছুর সহ একটি গরু তুলে দেওয়া হয় মহিলাদের হাতে। এদিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কবি, সাহিত্যিক ও মন্ত্রীর পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন, এস.পি- সি.সুধাকর, বসিরহাটের বিধায়ক দিপেন্দু বিশ্বাস, অশোকনগর বিধানসভার বিধায়ক ধীমান রায়, অশোকনগরের পৌরসভার পুরপ্রধান প্রবোধ সরকার ও হাবড়া পৌরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান নিলিমেশ দাস। এই মেলা চলবে আগামী ৩ রা ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।