শান্তনু বিশ্বাস, হাবড়াঃ বাদুরিয়ার পর ফের আবার শিশু পাচার চক্র পুলিশের জালে ধরা পড়লো হাবড়ায়। হাবড়া হাসপাতালে শিশুর চিকিৎসা করাতে এসেই সামনে এলো শিশু পাচার চক্রের হদিশ। এই ঘটনার সাথে যুক্ত ৫জনকে গ্রেফতার করে হাবড়া থানার পুলিশ। ধৃতদের নাম দীপা চন্দ বনিক ও গৌতম চন্দ (দম্পতী) , নার্সিংহোমের এক কোয়াব ডাক্তার মনজ বিশ্বাস , নার্সিংহোম মালিক রঞ্জিতা রায় ও নার্সিংহোমের কেয়ারটেকার রনজিৎ দে।
ধৃতদের আজ বারাসাত আদালতে তোলা হয়।
পুলিশ সুত্রে জানা যায়, ১৪ ই ডিসেম্বর সন্ধ্যায় উওর ২৪ পরগনার অশোকনগর থানার অন্তর্গত দুই নম্বর এলাকার দম্পতি গৌতম চন্দ এবং দীপা চন্দ বনিক তাদের এগারো দিনের শিশুর শারীরিক অবস্থার অবনতির জন্য তাকে হাবড়া হাসপাতালে নিয়ে আসে। সেখানে শিশুর জন্মের কাগজপত্র এবং নথি চাইলে বিপাকে পরে এই দম্পতি। সাথে সাথে হাবড়া হাসপাতালের সুপারকে ঘটনার কথা জানান কর্তব্যরত ডাক্তার। সুপার এসে জিজ্ঞাসাবাদ করলে জেরায় ভেঙে পরে দম্পতি। আর তারপরই হাসপাতালের তরফে হাবড়া থানায় খবর দেওয়া হয়।
ঘটনার খবর পাওয়া মাত্রই হাবড়া থানার পুলিশ অভিযুক্তদের মধ্যে দুজনকে আটক করে। এরপর ঘটনার দিন রাতে ওই দম্পতি পুলিশি জেরায় স্বীকার করেছে তাদের ১৯ বছর বিয়ে হলেও কোন বাচ্চা ছিল না। তাই তাদের এক আত্মীয় ভ্যান চালক বিশ্বনাথ মন্ডল কে সমস্যার কথা জানালে সে একটি বাচ্চার কথা তাদের জানায়। সেই মত তিনি অশোকনগর রেলগেট সংলগ্ন চায়ের দোকানদার শিপ্রা ব্যাপারীকে সব কথা বলে একটি শিশু জোগার করে দেবার জন্য।
এরপর বিশ্বনাথ মন্ডলের কথা মত শিপ্রা আবার অশোকনগর রেলগেট সংলগ্ন বনানী নার্সিং হোমের এক কেয়ার টেকার রনজিৎ দে কে ঘটনার কথা জানালে সে কাজটি করতে রাজি হয়ে যায়। কথানুযায়ী, নার্সিং হোমের কেয়ার টেকার সেই নার্সিং হোমের মালকিন রঞ্জিতা রায়ের সাথে কথা বলে এবং সেই মত ১১ দিন আগে কোয়াগ ডাক্তার মনোজ বিশ্বাসকে দিয়ে একটি প্রসব করিয়ে ৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে একটি শিশুকে তাদের হাতে তুলে দেয়। বর্তমানে ঘটনার জানাজানি হতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পরে এলাকায়।
উল্লেখ্য, শুক্রবার রাতেই ঘটনার সাথে যুক্ত এই পাঁচ জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। ধৃতদের শনিবার বারাসাত আদালতে পাঠানো হয়। বর্তমানে এই শিশু পাচার চক্র কতদিন ধরে চালাচ্ছে তারা, আর কে কে জড়িত আছে এই পাচার চক্রের সাথে তা খতিয়ে দেখছে হাবড়া থানার পুলিশ। তবে ধৃত ৫ জনের মধ্যে রনজিৎ দে ও মনজ বিশ্বাসকে ১০ দিনের পুলিশ হেফাজত চাওয়া হয়েছে।