রাজীব মুখার্জী, হাওড়াঃ কোচবিহার থেকে বিজেপির রথযাত্রায় অনুমতি দিল না হাইকোর্ট। বর্তমান পরিস্থিতিতে মিছিলের অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়, পরিষ্কার জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। অর্থাৎ শুক্রবার কোচবিহারে রথযাত্রা হচ্ছে না, আদালতে খারিজ হয়ে গেল বিজেপির আবেদন । শুধু তাই নয়, ৯ই জানুয়ারি পর্যন্ত বিজেপির কোনও রথযাত্রা নয় বলেও জানিয়ে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট।
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী , যে যে জেলায় বিজেপি রথযাত্রা বেরোবে, প্রত্যেক জেলার পুলিশ সুপারকে আলাদাভাবে রিপোর্ট দিতে হবে। ২১শে ডিসেম্বরের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। সেই রিপোর্ট দেখেই বিজেপির রথযাত্রার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে আদালত। তার আগে আপাতত ৯ই জানুয়ারি পর্যন্ত রথযাত্রা বার করতে পারবে না বিজেপি।
বিজেপির রথযাত্রায় আইন শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হতে পারে বলে আদালতে দেওয়া গোয়েন্দা রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়। সেক্ষেত্রে কোনও অশান্তি কিংবা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে, তার দায় কার ওপর বর্তাবে, এদিনের শেষে সে প্রশ্নের উত্তর অধরাই থেকে যায়। এইসব বিষয় মাথায় রেখেই বিজেপির রথযাত্রায় এক দিনের মধ্যে অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেয় আদালত।
[espro-slider id=15771]
বিজেপির রথযাত্রা নিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর এজলাসে রাজ্য-বিজেপির তরজা ছিল তুঙ্গে। বিজেপির রথযাত্রায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হতে পারে, এমনটা আশঙ্কা প্রকাশ করে রাজ্যের পুলিশ প্রধান ও স্বরাষ্ট্র সচিবকে চিঠি দেন কোচবিহারের জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার। ঠিক এই বিষয়টি অর্থাৎ এমনই আশঙ্কার প্রেক্ষিতেই আদালতে সওয়াল করেন এজি।
এদিন রথযাত্রা মামলার শুনানির সময় এজি বলেন, কোচবিহারে রথযাত্রায় অনুমতি দিচ্ছে না রাজ্য সরকার। কারণ, বিজেপির রথযাত্রায় কোচবিহার পুলিশ সুপারের আপত্তি রয়েছে। যদিও তার পাল্টা হিসাবে দিলীপ ঘোষ জি ২৪ ঘণ্টার একান্ত সাক্ষাত্কারে জানান, যে কোনও ভাবেই বিজেপির রথযাত্রা হবে, অনুমতি দিক বা না দিক। কিন্তু তাঁর বক্তব্যকে চ্যালেঞ্জ করেন এজি। তিনি বলেন, “বিজেপির দাবি সঠিক নয়।” ব়্যালি করতে গেলে যে অনুমতি লাগে, সেবিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের একাধিক নির্দেশ তুলে ধরেছেন এজি। আদালতকে বন্ধ খামে রিপোর্ট জমা দেন তিনি। কোচবিহার কেন সংবেদনশীল, সে বিষয়ে রিপোর্টে উল্লেখ করেন তিনি।
এজি এদিন পূর্ব উদাহরণ দিয়ে আদালতে জানান, এর আগে কোচবিহারে যখন এধরনের মিছিল হয়েছে, তখন হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেছে। এবারও হিংসা ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে। কিছুদিন আগেও একটি ঘটনাকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল কোচবিহার। সেই বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়। তাছাড়া এর আগে বিজেপির বাইক মিছিল, কিংবা অন্যান্য মিছিল ঘিরে কীভাবে উত্তেজনা ছড়িয়েছে, তাও এদিন আদালতে উল্লেখ করা হয়।
এরপরই বিচারপতি প্রশ্ন করেন, মিছিলে কোন অশান্তি হলে, তার দায় কার ওপর বর্তাবে। যদিও এর উত্তর গোটা সওয়াল জবাব পর্বে অধরাও থেকে যায়। শেষে গোয়েন্দাদের দেওয়া বন্ধ খামের রিপোর্টকেই মান্যতা দেয় আদালত। বিচারপতি পর্যবেক্ষণ, একদিনের মাথায় এই মিছিলের অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়। পুলিশের ক্ষেত্রেও পরিস্থিতি সামলানো কষ্টকর হবে। রথযাত্রা হলে যে কোনও ধরনের অশান্তি ঘটতে পারে, প্রাণহানির আশঙ্কাও থেকে যাচ্ছে। সব দিক বিবেচনা করে বিজেপির রথযাত্রায় অনুমতি দেয় না আদালত।
যদিও এবার বিজেপি ডিভিশন বেঞ্চে যেতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন মুকুল রায়। যদিও এবিষয়ে এখনও পর্যন্ত চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি বিজেপি। দিলীপ ঘোষের কনভয়ে হামলার প্রতিবাদে হাওড়া ব্রীজ অবরোধ করল বি জে পি নেতা কর্মীরা, হাওড়া জেলা বি জে পি র পক্ষ থেকে এই অবরোধ কর্মসূচি নেওয়া হয়, পোড়ানো হয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর কুশ পুত্তলিকা।
হাওড়া জেলা বি জে পি যুব মোর্চা নেতা ওম প্রকাশ সিং জানান, আজ কোচবিহারে দিলীপ ঘোষের কনভয়ে হামলার ঘটনা পরিকল্পনা করেই করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এদিন বি .জে .পি -র এই পথ অবরোধে হাওড়া ব্রিজে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।