অর্ণব মৈত্র, বসিরহাটঃ বসিরহাটের মাটিয়া থানার কচুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের গোবিলা গ্রামের ৪৮ বছর বয়স্কা মমতাজ বিবির মৃত্যুর ঘটনায় নয়া মোড়। মৃতার স্বামী সিরাজুল মণ্ডল পেশায় মেছো ভেড়ির পাহারাদার, যিনি কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন। ছেলে ফিরোজ মন্ডল কর্মসূত্রে মুম্বাই গিয়েছিল। বাড়িতে বৌমা ও শাশুড়ি ছাড়া আর কেউই থাকতেন না। প্রায় মাঝে মাঝে শাশুড়ি বৌমার বিভিন্ন কারণে গন্ডগোল লেগে থাকত। এই পারিবারিক অশান্তির মিটমাট করার জন্য বহুবার পারিবারিক আলোচনা বসে। কিন্তু কী কারণে এই গন্ডগোল তা কখনোই পরিষ্কার হতো না। সম্প্রতি শাশুড়ির মৃতদেহের ময়নাতদন্তের পর মাটিয়া থানার পুলিশের হাতে উঠে এল এক চাঞ্চল্যকর তথ্য।
পুলিশি জেরায় জানা যায় যে, গত মাসের ১৪ তারিখে ভোর পাঁচটা নাগাদ বাড়ির ৫০ ফুট দূরে আমবাগানে শাশুড়ি মমতাজ বিবির ঝুলন্ত দেহ দেখতে পায় গ্রামের লোক। প্রথমে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে বৌমা মুসলিমা বিবির বিরুদ্ধে। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বসিরহাট জেলা হাসপাতালে পাঠালে পোস্টমর্টেম রিপোর্টে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যায় যে, আত্মহত্যা নয় তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। ধন্দে পড়ে পুলিশ। এই ঘটনায় মূল খুনি কে? এই প্রশ্নের উত্তর পেতে রীতিমতো বেগ পেতে হয় পুলিশকে।
মহিলাকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে , এই সত্যকে প্রথমে স্বামী ও ছেলে বিশ্বাসই করে উঠতে পারছিল না। একমাত্র ছেলে ফিরোজ মন্ডল তার স্ত্রী মুসলিমা বিবির বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করলে রবিবার রাত্রিবেলা মাটিয়া থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করে বৌমা মুসলিমা বিবিকে। পুলিশের ম্যারাথন জেরায় বৌমা মুসলিমা বিবি এই খুনের কথা স্বীকার করে এবং তার সঙ্গে অন্য এক যুবকের সম্পর্ক রয়েছে, সেই সম্পর্কের কথা ও মোবাইলের ছবি শাশুড়ি জেনে ও দেখে ফেলেছিল, যার কারণে ওই যুবক ও স্ত্রী মুসলিমা পরিকল্পিতভাবে খুন করে আম বাগানে ঝুলিয়ে দেয় বলে জানায়। পাশাপাশি মাটিয়া থানার পুলিশ মুসলিমার ঘর থেকে উদ্ধার করে একটি শীতের পুরুষের জ্যাকেট। সোমবার মূল অভিযুক্ত মুসলিমা বিবিকে বসিরহাট মহকুমা আদালতে তোলা হবে।