অর্ণব মৈত্র, নিউটাউনঃ সম্প্রতি নিউটাউনের ডি বি ব্লকে তরুণ আইনজীবী রজত কুমার দে-র খুনের মামলায় শনিবার রাতে নিউটাউন থানার পুলিশের কাছে আইনজীবীর স্ত্রী অনিন্দিতা পাল দে স্বীকার করেন মোবাইল চার্জারের সাহায্যে খুন করেন আইনজীবী রজত কুমার দে কে। এরপর তাকে গ্রেফতার করে নিউটাউন থানার পুলিশ। ২রা ডিসেম্বর আইনজীবীর স্ত্রী অনিন্দিতা পাল দে কে বারাসাত আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে ৮ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। তবে তাঁর সাথে এই ঘটনায় তৃতীয় কোন ব্যক্তি ঠিক কি ভূমিকা ছিল এখন সে বিষয় খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, গত ২৬শে নভেম্বর নিউটাউন ডি বি ব্লকের নবারুণ কোঅপারেটিভের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় রজত কুমার দে -র মৃতদেহ। তার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে প্রথমে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হলেও পরে খুনের মামলা শুরু করে পুলিশ। বাবা সমীর কুমার দে -র অভিযোগ, তার ছেলেকে খুন করা হয়েছে যার পেছনে হাত রয়েছে তাঁর পূত্র বধু অনিন্দিতার। এরপরই এই ঘটনার তদন্ত শুরু করলে বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশি তদন্তে উঠে আসে একাধিক প্রশ্ন। এর জেরে ১লা ডিসেম্বর শনিবার দুপুরে অনিন্দিতাকে থানায় তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ধীরে ধীরে উঠে আসে পরকীয়া তত্ব।
পুলিশি সুত্রে খবর ,অনিন্দিতার সঙ্গে জনৈক চিকিৎসক ও এক ব্যাংক ম্যানেজারের ঘনিষ্ঠতার বিষয়টি পুলিশি নজরে ছিল। শনিবার নিউটাউন থানায় বিধাননগর পুলিশ কমিশনার জ্ঞানবনত সিং নিজে উপস্থিত হন তদন্ত ও জেরার হাল জানতে। পুলিশের দাবী মোবাইল চার্জারের সাহায্যে খুনের কথা স্বীকার করে নেয় অনিন্দিতা। এরপর অনিন্দিতা পাল দে-কে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
এছাড়া আরও জানা যায়, অনেক পারিপার্শ্বিক বিষয় কারন ও প্রেক্ষাপট হিসেবে সম্ভাবনার আওতায় রয়েছে। এ আর আস্যোসিয়েটস (অনিন্দিতা রজত আস্যোসিয়েটস)থেকে টাকা নিয়ে স্বামী স্ত্রীর ভাঙ্গন ও অন্য ব্যক্তির অনিন্দিতার জীবনে প্রবেশ যেমন রয়েছে তেমনই সূত্র মতে অনিন্দিতার দাবি বিকৃত কাম ছিল রজতের। এই বয়ানের জন্য তদন্তকে আরো ঘোরালো করেছে। ইতিমধ্যে ভারতীয় দন্ডবিধি মতে ৩০২, ১২০ বি ও ৩৪ এবং ২০১ ধারায় অভিযুক্ত অনিন্দিতাকে বারাসাতের সি জে এমের এজলাসে তোলা হয়। পুলিশ যেহেতু এই খুনে তৃতীয় ব্যাক্তির উপস্থিতি থাকার সম্ভবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না ও খুনের কারন নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে সেজন্য আদালতের কাছে আরো জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশি হেফাজতের আবেদন করলে বিচারক ৮ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। এদিন সিজে এমের এজলাসে আনার পরে অনিন্দিতা ছিল অভিব্যক্তিহীন ও শরীরী ভাষা ছিল স্বাভাবিক।