বেঙ্গল টুডের প্রতিনিধি, শান্তিপুরঃ আবারও চোলাই মদের বলি হলেন ৭ জন। এর জেরে এখনও প্রায় ২০ জন চিকিৎসাধীন। ঘটনাটি ঘটেছে নদীয়া জেলার শান্তিপুর থানার অন্তরগর্ত নৃসিংহপুর চৌধুরীপাড়া এলাকায়। এরা সকলেই দিন মজুর প্রতিদিনকার মত এদিনও অর্থাৎ ২৭শে নভেম্বর তারা কাজের শেষে মদ পান করে বাড়ি ফেরে। এরপরই বাড়ি ফিরে সকলে অসুস্থ হয়ে পড়ে। কিছুক্ষণের মধ্যেই পেটে ব্যাথা এবং রক্ত বমি শুরু হয় বলে জানা যায়।
সুত্রের খবর, মঙ্গলবার রাতে বেআইনি একটি মদের আসর থেকে আনুমানিক ১০ থেকে ১৫ জন স্থানীয় বাসিন্দারা মদ খায়। এদের মধ্যে একজন কল্যানী থেকে ওই গ্রামেই আত্মীয় বাড়ি বেড়াতে এসেছিলেন। গভীর রাত পর্যন্ত মদ পান করে তারা। এরপর সকলে বাড়ি ফিরে ওই রাতেই অসুস্থ হয়ে পড়ে। কিছুক্ষণের মধ্যেই পেটে ব্যাথা এবং রক্ত বমি শুরু হয়। তারপরই তড়িঘড়ি স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের কালনা মহাকুমা হাসপাতাল এবং শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। এর দরুন এখনও পর্যন্ত ৭ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে প্রশাসনের তরফ জানানো হয়েছে। বাকিরা কালনা এবং শান্তিপুর হাসপাতালে গুরুতর অবস্থায় চিকিৎসাধীন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই এলাকায় মদের ঠেক চললেও পুলিশ প্রশাসনকে জানিয়ে কোনও লাভ হয়নি। এমনকি আগে বেশকয়েকবার এই বিষমদের ঠেক ভেঙে ফেলা হয়েছিল। তারপরও বেশ কিছুদিন যাবত রমরমিয়ে চলছিল এই বিষমদের ব্যবসা। মূলত প্রশাসনের মদতেই এই ঠেক মালিক গুলির বাড়বাড়ন্ত বলে অভিযোগ।
এছাড়া আরও বলেন, খেটে খাওয়া মানুষ দিনের শেষে যা উপার্জন করে, মদ খেতে গিয়ে সেইসব খরচ হয়ে যায়। এই নিয়ে এলাকায় একটা উত্তেজনায় পরিবেশ এমনিতেই ছিল। বিষয়টি নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগও জানানো হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ এই বিষয়ে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ। আজকের ঘটনার পর ফের পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো হলে ঘটনার তদন্তে নেমে চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ধৃতদের নাম সাধন বিশ্বাস, জয়দেব সাঁতরা, জয়ন্তী মাহাত ও গুছিয়া মাহাত।
এই বিষমদের জেরে মৃত ব্যক্তিরা হলেন, কাশিনাথ মাহাতো (৬৫), দুলা চাঁদ মাহাতো (৪৭), ভুটান মাহাতো (২৭), সুনীল মাহাতো, গৌতম মাহাতো (৩৪), মুন্না রায়, ভালুয়া মাহাতো (মহিলা) বয়স (৫৫)। এদের মধ্যে ৪ জনের মৃতদেহ কৃষ্ণনগর শক্তিনগর হাসপাতালে ময়না তদন্ত করা হচ্ছে। এছাড়া বাকি ৩ জনের মৃতদেহ কালনা মহকুমা হাসপাতালে ময়না তদন্ত করা হবে বলে জানা গেছে। মৃত ব্যক্তিদের ৭ জনের মধ্যে ৬ জনের বাড়ি ঘটনাস্থলের আশেপাশেই বাকি একজন অর্থাৎ কাশিনাথ মাহাতোর বাড়ি নদিয়ার কল্যানীতে।
ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে মেডিক্যাল টিম এবং প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্তাব্যক্তিরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। বিষমদ কান্ডে আর কেউ আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বার বার এধরনের ঘটনায় উদবিগ্ন জেলা প্রশাসন। পাশাপাশি এলাকায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এইসমস্ত মদের ঠেক।