Tuesday, March 28, 2023
spot_img

নিউটাউনে আইনজীবীর মৃত্যু ঘিরে রহস্য

 

অর্ণব মৈত্র, নিউটাউনঃ ২৪শে নভেম্বর ভোরে নিউটাউনের ডিবি ব্লকের ৯৭ নম্বর ফ্ল্যাটের তিনতলার ঘর থেকে নিউটাউন থানার পুলিশ একটি মৃতদেহ উদ্ধার করেন। মৃতের নাম রজত কুমার দে(৩৪)। তিনি হাইকোর্ট এর আইনজীবী ছিলেন। নিউটাউনের ডিবি ব্লকের ফ্ল্যাটে তিনি তাঁর স্ত্রী অনিন্দিতা পাল এবং বছর দেড়েকের বাচ্চা নিয়ে থাকতেন। তবে কিভাবে তাঁর মৃত্যু হল সেই বিষয়ে এখনও কিছু জানা যায়নি। যদিও রজতের বাবা সমীর কুমার দে ছেলের মৃত্যুর রহস্য উৎঘাটন করতে নিউটাউন থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।

রজতের বাবা সমীর কুমার দে জানিয়েছেন, ২৪শে নভেম্বর রাত ২ টো নাগাদ রজতের শ্যালক অভীক পাল ফোন করে জানান রজত খাট থেকে পড়ে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এই কথা শুনে, রজতকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলি। কিন্তু তারপরে রজতের শ্যালককে ফোনে না পেয়ে বরানগর নিউটাউনে রজতের ফ্ল্যাটে চলে আসি। এসে দেখি ঘর লন্ডভন্ড, চেয়ার টেবিল উল্টে রয়েছে। রজত মেঝেতে পড়ে রয়েছে। ফ্ল্যাটে আর কেউ নেই।

রজতের বাবা সমীর কুমার দে’র অভিযোগ, রজতের উপর একের অধিক লোক অত্যাচার করেছে তা ওর ফ্ল্যাটে গিয়ে ঘর লন্ডভন্ড দেখে মনে হয়েছে। সেই সময় ফ্ল্যাটে কেউ ছিল না। মেঝের মধ্যে পড়ে ছিল রজত। মুখে নীল ছোপ ছোপ দাগ রয়েছে। এম্বুলেন্স ডাকি রজতকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য। তবে আমার সন্দেহ হয় রজত মারা গিয়েছে। তাই নিউটাউন থানায় ফোন করে পুলিশকে ডাকি। রজতকে এম্বুলেন্স তুলে নিউটাউনে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাই। কিন্তু ওরা রজতকে চিকিৎসা না করেই ফিরিয়ে দেয়। তারপর বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা রজতকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

রজতের স্ত্রী অনিন্দিতা পাল জানিয়েছেন, ২৪শে নভেম্বর বিকালে এক সঙ্গে নিউটাউনে মেলায় ঘুরেছি। তারপর একটি নিমন্ত্রণ বাড়ি ঘুরে বাড়ি ফিরেছি দুজনে। রাত ১১ টা নাগাদ রাতের খাবার খায় রজত। তারপর শুয়ে পড়ি। কিন্তু ওকে সরে শুতে বলায় ও ঘর থেকে অন্য ঘরে চলে যায়। তারপর উঠে দেখি ১২ টা নাগাদ ড্রয়িং রুমে বসে পেপার পড়ছে। ঘরে আসতে বললে পরে শুতে আসবে বলে রজত। তারপর আমি শুয়ে পড়ি। রাতে ফ্যান অফ হয়ে যায় লোডশেডিং এর জন্য। তারপর ঘর থেকে বেরিয়ে দেখি রজত মেঝেতে বসে রয়েছে। আমি রজতকে গায়ে নাড়া দিয়ে ডাকি কিন্তু ও সাড়া দেয়নি। তারপর মেঝেতে পড়ে যায়। তখন বাড়ির লোককে খবর দিই। প্রতিবেশীদের খবর দিই। তারাও এসে দেখে রজত মেঝেতে পড়ে রয়েছে। ফ্ল্যাটের কেয়ারটেকার অন্যান্য ফ্ল্যাটের মানুষও আসেন। মুখে জল দিই কিন্তু কোনো সাড়া পাই না। ডাক্তার ডাকা হয়। ডাক্তার বলেন হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু প্রথমে একটি এম্বুলেন্স আসলেও সে নিয়ে যায়নি। পরের এম্বুলেন্স আস্তে দেরি করে। তারপর রজতকে হাসপাতালে নিয়ে যায় আমার দাদা এবং ফ্ল্যাটের অন্যান্যরা।

অনিন্দিতা পাল আরও জানিয়েছেন, ২৪শে নভেম্বর বাচ্চা বাবা মায়ের বাড়িতে ছিল। আমি আর আমার স্বামী বাড়িতে ছিলাম। কিভাবে আমার স্বামীর মৃত্যু তা আমিও জানতে চাই। পুলিশ তদন্ত করতে বাড়িতে এসেছে। আমি সহযোগিতা করেছি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হচ্ছে। যেহেতু রাতে আমরা দুজন ঘরে ছিলাম তাই আমাকে দোষী করার চেষ্টা চলছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করুক। আমিও চাই সত্যিটা প্রমাণিত হোক। আমাদের মধ্যে খুব ভালো সম্পর্ক ছিল। প্রেম করে বিয়ে করেছিলাম আমরা। আমাদের দেড় বছরের বাচ্চাও আছে। আমাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বন্ডিং খুব ভালো ছিল।

Related Articles

Stay Connected

0FansLike
3,749FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles