রাজীব মুখার্জী, শরৎ সদন, হাওড়াঃ নজিরবিহীন ভাষায় আক্রমণ করলেন বি.জে.পি.-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। ১৭ই নভেম্বর হাওড়া ময়দানের শরৎ সদনে দলীয় সভায় ভাষণ দিতে এসে তিনি বক্তব্য রাখেন ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কে চাঁচা ছোলা ভাষায় আক্রমণ করেন। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোট যতই এগোচ্ছে ততই বাড়ছে তৃণমূল-বিজেপির বাকযুদ্ধ, আর এবার গল্পের ছলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে “পাগলা হাতি”- র সঙ্গে তুলনা করলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
এদিন আরও একাধিক ইস্যুতে তৃণমূলকে হুঁশিয়ারি দেন তিনি সভা থেকেই। তিনি এই রাজ্যের পুলিশ আধিকারিকদেরকেও “পালিশ করার” হুমকি দেন। আজ শনিবার হাওড়ার শরৎ সদনে বিজেপির সংযুক্ত মোর্চা রাজ্য কার্যকারিনীর এক সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে পাগলা হাতির সঙ্গে তুলনা করেছেন দিলীপবাবু।
সাম্প্রতিককালে মুখ্যমন্ত্রী বিজেপিকে নিশানা করে যে সমস্ত মন্তব্য করেছেন তাকে বাছাই করা বিশেষণে বেঁধেন তিনি। দিলীপবাবু বলেন, ”মুখ্যমন্ত্রীর যন্ত্রণা তিনিই জানেন”। এই প্রসঙ্গেই একটি কাহিনীর অবতারণা করে তাঁকে পাগলা হাতির সঙ্গে তুলনা করেন তিনি। এদিন দিলীপবাবু বলেন, “আমাকে একজন একটা গল্প শুনিয়েছিলেন। বহু বছর একবার ওড়িশার কোনও গ্রাম থেকে ২ জন মানুষ কলকাতায় এসেছিল। তারা কলকাতায় একটি সিনেমা হলে সিনেমা দেখতে ঢোকেন। সেই হলে তখন চলছিল হাতি মেরে সাথি। গ্রামে যেহেতু সামনের সারিতে বসে যাত্রা দেখার অভ্যাস তাই সিনেমা হলেও তাঁরা সামনে টিকিট কাটেন। সিনেমা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পর কাহিনীতে দেখা যায় হাতি তাণ্ডব শুরু করেছে। তাই দেখে ওই ২ ব্যক্তি ভয় পেয়ে হলের ভিতর ছোটাছুটি শুরু করেন। হলের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি যখন তাদের জিজ্ঞেস করেন কেন ছোটাছুটি করছ? তখন জবাবে তাঁরা জানান, হাতি ক্ষেপে গিয়েছে, মেরে ফেলবে। জবাবে তিনি বলেন, ও তো সিনেমার হাতি কিন্তু তাতেও উত্কণ্ঠা কাটেনি ওই ২ ব্যক্তির। তাঁরা ওড়িয়ায় বলেন, সেটা তুমি বুঝবে, আমি বুঝব কিন্তু পাগলা হাতি কি বুঝবে?’ এর পরই দিলীপ ঘোষের কটাক্ষ, ”দিদিমণির কষ্ট আমি আপনি বুঝতে পারব না। এটা দিদিই বুঝবেন”।
বিজেপিকে আক্রমণ প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিলীপ ঘোষের কটাক্ষ, “দিদির এখন নতুন পাঁচালি হয়েছে। যেখানেই যান শুরু করেন বিজেপি দিয়ে শেষ করেন বিজেপি দিয়ে। আর কোনও কথা নেই।” প্রসঙ্গত, শুক্রবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূলের সাধারণ পরিষদের বর্ধিত সভায় বিজেপির বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছিলেন, বিজেপির রথযাত্রা আসলে ”রাবণ যাত্রা” হবে। “ফাইভ স্টার” রথযাত্রা করবে বিজেপি। রথযাত্রা হয়ে যাওয়ার পর হরির লুঠ হবে। বিজেপির রথযাত্রার পাল্টা “পবিত্র যাত্রা” করবে তৃণমূল। হরি সংকীর্তন করে পথ পরিষ্কার করবে তৃণমূলের ছেলেরা। আজ তারই উত্তর দিলেন হাওড়া শরৎ সদনের সভা থেকে। সভায় উপস্থিত ছিলেন মুকুল রায়, রাহুল সিনহা, লকেট চ্যাটার্জী সহ বি.জে. পি.- র অন্যান্য নেতৃত্ববৃন্দ।
0