রাজীব মুখার্জী, হাওড়াঃ পথ নিরাপত্তাকে সামনে রেখে এইটি একটি খুব নজিরবিহীন কাজ হাওড়া পুরসভার পক্ষ থেকে, a ফরশোর রোডের মতো ব্যস্ত রাস্তার ধারে তৈরি হয়েছে এই পার্ক। এই ব্যস্ত রাস্তায় রোজ প্রচুর গাড়ির যাতায়াত, তাই এই রাস্তাকে বেছে নেওয়া হয়েছিল যাতে বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছানো যায়। এইখানে বেশ কিছু স্কুল আছে তাদের মধ্যেও এই বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তোলা যাবে।
পুলিশ সূত্রে জানানো হচ্ছে, যে এই স্কুলের বাচ্ছাদের থেকে খুব সহজে সচেতনতা গড়ে তোলা সম্ভব। এই পার্কে এসে এই অভিজ্ঞতা ও সচেতনতা খুব সহজেই তারা তাদের অভিভাবক, আত্মীয়, বন্ধুবান্ধবদের মধ্যে সহজেই ছড়িয়ে দিতে পারবেন। পথনিরাপত্তা সংক্রান্ত ছবি ও রং তুলির সাহায্যে আঁকা ছবি দিয়ে এই পার্ক সুন্দর ভাবেই সাজানো হয়েছে। এর প্রচ্ছদ এতো সুন্দর ভাবেই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে যে একবার কেউ এলে এখানে বার বার আসবেন।
রাজ্য স্তরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ” সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ ” প্রচারকে কেন্দ্র করেই এই ভাবনা। একদম রাস্তার ধারেই এই ছোট্ট পার্কটি। পার্কের দেওয়ালে কোথাও হেলমেট আঁকা ছবি, সাথে লেখা রয়েছে “পরবেন ? না বিপদে পড়বেন ? হেলমেট পরুন”, “টাইট করে স্ট্র্যাপ আটকান” দেওয়াল জুড়ে আঁকা বিভিন্ন ছবির সঙ্গে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এমনই সব সচেতনতামূলক বার্তা । রয়েছে বিভিন্ন ধরনের মডেল, রাস্তা , সাইনেজ। সেখানেই স্কুল পড়ুয়াদের ট্র্যাফিক পাঠ দিচ্ছেন পুলিশ অফিসাররা । সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ প্রচারে এমনই অভিনব উদ্যোগ হাওড়া সিটি পুলিশের। স্কুল পড়ুয়া থেকে থেকে পথচলতি নাগরিকদের মধ্যে ট্র্যাফিক সচেতনতা বাড়াতে পুরসভার সহযোগিতা নিয়ে তারা তৈরি করে ফেলেছে আস্ত একটি “সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ ” পার্ক।
[espro-slider id=14443]
২০১৬ সালের জুন মাসে মুখ্যমন্ত্রী সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ প্রচার কর্মসূচি ঘোষণার পর থেকেই দুর্ঘটনা রুখতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে রাজ্য পুলিশ। জারি করা হয়েছিল “নো হেলমেট নো পেট্রোল” এর মতো বেশ কিছু কড়া নির্দেশও। একটানা লাগাতার প্রচারে সফলতাও এসেছে অনেক। গোটা রাজ্য জুড়ে কমেছে দুর্ঘটনার হারও। সেই প্রচার কর্মসূচির এক ধাপ এগিয়ে অভিনব উদ্যোগ ছিল হাওড়া কমিশনারেটের।
ফরশোর রোডের পাশে তৈরি করা হয়েছিল এই সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ পার্কটি। সেই পার্কের দেওয়ালে ছবি -সহ পথ নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিভিন্ন বার্তা যেমন ছড়ার মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল , ঠিক তেমনই তৈরি করা হয়েছিল মডেল রাস্তা , মডেল ট্র্যাফিক সিগন্যাল , রয়েছে বিভিন্ন ট্র্যাফিক সাইনেজ৷ রিসোলিং টায়ার ব্যবহার করলে কী বিপদ ঘটতে পারে টায়ার দিয়ে তার মডেলও তৈরি করা হয়েছে৷ উদ্দেশ্য একটাই , স্কুল পড়ুয়াদের মধ্যে ট্র্যাফিক সচেতনতা গড়ে তোলা গেলে তারা নিজেরা যেমন সচেতন হবে , তেমনই অভিভাবকদেরও সে বিষয়ে বোঝাতে পারবে৷ এর জন্য বিভিন্ন সময় স্কুলে স্কুলে গিয়েও পড়ুয়াদের সচেতন করে পুলিশ।
হাওড়া পুরসভাকে হাওড়া পুলিশের থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, এমন একটি পার্ক যদি তৈরি করা যায় , যা দিয়ে মানুষকে আকৃষ্টও করবে, আবার সেখান থেকে ট্র্যাফিক সংক্রান্ত শিক্ষাও গ্রহণ করতে পারবেন তাঁরা। বিভিন্ন স্কুল পড়ুয়াদের সেখানে নিয়ে গিয়ে হাতেকলমে ট্র্যাফিকের পাঠও দেওয়া যেতে পারে। সেই পরিকল্পনাই এই পার্ক তৈরি করতে উদ্যোগী হয়েছিল হাওড়া পুরসভা।