Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!
জয় চক্রবর্তী, বনগাঁঃ কোথাও মণ্ডপ তৈরি হয়েছে, ফোম দিয়ে বৌদ্ধ মন্দিরের আদলে, কোথাও নারায়নের বিশ্বরুপ দর্শন, আইফেল টাওয়ার , বৃন্দাবন গেট, প্লাইউডের মণ্ডপ, কোথাও আবার বাহামুনি সিরিয়ালে দেখানো বীরভূমের গ্রাম। জীবন্ত গ্রাম, মায়াজাল, নারকেলের আর ঝিনুকের দূর্গায় জমজমাট এবারের বাগদার শ্যামাপুজো ৷ অতীতে এখানে দুর্গা পুজোর আয়োজন হতো। তাহলে কীভাবে কালী পুজো প্রধান উৎসব হয়ে উঠলো?
এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, প্রতিবছর দুর্গা পুজোর আগে নিম্নচাপের বৃষ্টিতে ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকায় জলমগ্ন হয়ে যাওয়াটা নিয়মে পরিনত হয়েছিল। কৃষি প্রধান বাগদায় বিঘার পর বিঘা জমির ফসল জলের তলায় চলে যেত। মানুষ সর্বশান্ত হয়ে যেত। মুখে হাসি থাকতো না। আনন্দ করবার ইচ্ছেটাই চলে যেত। এরপরই এলাকার বাসিন্দারা সিদ্ধান্ত নেন কালীপুজো করবার। আর তারপর থেকেই বছর বছর কালীপুজো হয়ে আসছে। পুজোর আকর্ষণে জেলা তথা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু মানুষ এখানে ছুটে আসেন। এমনকি পুজোর দিনগুলিতে ওপার বাংলা থেকেও মানুষজন ঠাকুর দেখতে আসেন এই সীমান্ত এলাকায় ৷
ভিন রাজ্যে ও বিদেশে কাজে যাওয়া বাগদার মানুষ দুর্গাপুজোয় নয় কালীপুজোতে বাড়ি ফেরেন৷ দুবাই থেকে শুক্রবার বাড়ি ফিরেছেন রমেশ বিশ্বাস। তিনি বলেন প্রতি বছর কালী পুজোয় বাড়ি আসি। কালীপুজোই আমাদের প্রধান পুজো। থিম, আধুনিকতা ও আলোক সজ্জায় এই কালীপুজো রাজ্যের বহু মানুষের মন কেড়ে নিয়েছে৷ বীরভূমের বাহামুনির সিরিয়ালের কাল্পনিক গ্রাম জীবন্ত নির্মাণ করে মানুষর সামনে উপহার দিতে চলেছে বাগদা একাদশ ক্লাব, পুজোর দিন আদিবাসী নাচে, গানে মাতিয়ে তুলবে আদিবাসী মানুষেরা।
হেলেঞ্চা সবুজ সঙ্ঘের ৩০তম বর্ষে নির্মিত হচ্ছে দক্ষিণ ভারতের রাজপ্রাসাদের আদলে মণ্ডপ। প্রধান আকর্ষন বাঁশ ও প্লাইউডের উপর হাতের কাজ।
হেলেঞ্চা স্পোটিং ক্লাব নারকেলের মালা দিয়ে তৈরি করছে তাদের মণ্ডপ। তাদের নারায়নের বিশরুপ দর্শনের মডেল মানুষকে বিশেষভাবে আকর্ষিত করবে। যোগেন্দ্র স্মৃতি সঙ্ঘ ৬৫ তম বর্ষে তাদের নির্মান ৭০ ফুট উচ্চতার নেটের কাল্পনিক মন্দির আর ১৬ ফুট মুক্তোর কালীমূর্তি ৷
বাগদা পল্লী উন্নয়ন তরুণ সংঘ তাদের ৪র্থ তম বর্ষে নির্মান করছে ৬৫ ফুট উচু ও ৫০ চওড়া সেগুন কাঠের কাল্পনিক মন্দির। থাকছে বৃন্দাবনের গেটের আদলে দীর্ঘ আলোর গেট। থাকছে কন্যাশ্রী, সবুজ সাথী , সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ সহ নানা সরকারি প্রকল্পের প্রচার৷ হেলেঞ্চা নবারুন সংঘ, রামকৃষ্ণ স্মৃতি সংঘ, নেতাজী স্পোটিং, নব উজ্জ্বল সংঘের পুজোগুলিও মানুষের মন কাড়বে বলে মনে করেন তাদের কর্মকর্তারা। মাঝে আর কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা তার পরেই শুরু হয়ে যাবে মণ্ডপে মণ্ডপে দর্শনার্থীদের ভিড়। আলো ,থিম, জীবন্ত মডল দেখতে আসা ভিড়ে ভাসবে ভারত- বাংলাদেশ সীমান্তের বাগদা এলাকা।