অর্ণব মৈত্র, সন্দেশখালিঃ প্লাস্টিকের বোতলে জল খেলে নানা ধরনের দূরারোগ্য রোগ, এমনকি মারন রোগ ক্যানসারও হতে পারে। তাই প্লাস্টিক বোতলে জল না খাওয়ার বার্তা নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে বাঁশের চটার উপর প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে ভেলা তৈরী করে সুন্দরবনের বিভিন্ন নদীতে ভেসে বেড়াচ্ছে শিক্ষক ও তার ছাত্ররা।
সন্দেশখালি ১ নম্বর ব্লকের কালীনগরের বাসিন্দা রাইহান মোল্লা, ফিরোজ শেখ, সইফুদ্দিন মোল্লা, সামসুদ্দিন মোল্লা সহ আরও ৬ জন ছাত্র ও তাদের গৃহশিক্ষক রাজু সর্দারের হাত ধরে সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের মধ্যে জনসচেতনা মূলক প্রচারের উদ্দেশ্যে ১০ দিনের জন্য সুন্দরবনের বেতনী, কলাগাছি, বিদ্যাধরী নদীতে ভেসেছে। ছাত্র শিক্ষকের মধ্যে এই মেল বন্ধন আসলে প্লাস্টিকের বোতলের ক্ষতিকর দিক গুলি নিয়ে প্রচার করা।
দুর্গাপুজো শেষে কালীপুজো নিয়ে যখন সকলে মেতেছে সেই সময়ে অল্প বয়সী ছাত্রদের নিয়ে গৃহশিক্ষক রাজু ১৬ দিনের প্রচেষ্টায় তৈরি করেছেন ৩৫০০ প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে জলযান। অভিযাত্রীরা জানান জলযানটি তৈরি হয়েছে বাঁশের চটার উপর প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে। প্লাস্টিকের বোতলে পানীয় জল খেলে কি ধরনের বিপদ হতে পারে সে বিষয়ে গ্রামের মানুষদের সচেতনতা করার কথা লেখা বড় বড় ব্যানার দিয়ে একটি ঘর তৈরী করা হয়েছে। এই জলযানটিতে ৪ টে দাঁড় থাকলেও এই জলযানে নেই কোন ইঞ্জিন। ওই দাঁড় দিয়ে টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে জলযানটি। জলযানটি ভিতরে আছে সোলার লাইট, আছে রান্নার সাজসরঞ্জাম ও উপকরণ। মাটির কলসি ভরা পানীয় জল।
জলযানের সঙ্গে থাকা বোতল দিয়ে তৈরি একটি ভাসমান স্থানে শৌচালয়ের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। গত সোমবার ওই জলযানটি নিয়ে তারা সন্দেশখালির ১ নম্বর ছোট সেহারা গ্রাম থেকে যাত্রা শুরু করেছে। ডাঁশা নদীতে এক রাত কাটিয়ে মঙ্গলবার সকাল ৮ টা নাগাদ তারা এসে পৌছায় বায়লানি খেয়া ঘাটে। এদিন এই অভিনব জলযানটি দেখতে এলাকার মানুষ ভিড় করেন বাইলানি খেয়া ঘাটে। তারপর বুধবার ও বৃহস্পতি তারা বেতনী, কলাগাছি নদীর বিভিন্ন ফেরী ঘাটে ঘাটে দাঁড়িয়ে সাধারন মানুষের সচেতনতা করছে তারা।