রাজীব মুখার্জী, উলুবেড়িয়া, হাওড়াঃ অন্যান্য দিনের সন্ধ্যেবেলার মতোই জমজমাট ছিল উলুবেড়িয়ার বাজারপাড়া এলাকা। হঠাৎ মঙ্গলবার রাত 8 টে নাগাদ আচমকা বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। শব্দের আকস্মিকতায় ভয় পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা ও স্থানীয় ব্যাবসায়ীরা বাড়ি, দোকান থেকে বেরিয়ে আসেন। স্তম্ভিত ফেরে স্থানীয় রফিক মিয়াঁর চিৎকারে। ছুটে যায় সকলে।
দেখা যায়, বিস্ফোরণটি ঘটেছে চায়ের দোকান লাগোয়া প্রবীর মিউরের বাড়িতে। নিমেষে সেখানে ছুটে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা দেখেন গোটা ঘর লণ্ডভণ্ড হয়ে আছে ও রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে আছেন প্রবীর বাবু। যন্ত্রনা ও আর্তনাদ করে ছটফট করছেন। এই বিস্ফোরণস্থলের বাড়ির ৫০ মিটারের মধ্যে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতাল পরে। তাই আর বিলম্ব না করে স্থানীয়রাই তাঁকে সেখানে নিয়ে যায়। কিন্তু তারপরে চিকিৎসকদের পরামর্শে প্রবীর বাবুকে কলকাতার এন. আর. এস. এ স্থানান্তরিত করা হয়। তার বয়স আনুমানিক ৫২ বছর। কালীপুজোর ঠিক ৬ দিন আগেই এমন ঘটনায় এখনো স্তম্ভিত এলাকার মানুষ। নিজের বাড়িতে বসে বাজি তৈরি করে ব্যাবসায়িক লাভের আশা করতে গিয়ে প্রচন্ড বিস্ফোরণে গুরুতর জখম হলেন এই ব্যক্তি।
৩০ শে অক্টোবর মঙ্গলবার রাতে এই ঘটনাটি ঘটার পরে এলাকায় চাঞ্চল্য লক্ষ করা গেছে। এখন হাওড়ার গ্রামীণের উলুবেড়িয়া বাজারপাড়া এলাকায় আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে এই বিস্ফোরণের ঘটনা। অপরদিকে হাসপাতাল থেকে বিস্ফোরণের খবর পেয়ে ছুটে আসে উলুবেড়িয়া থানার পুলিশ। তাদের একটি দল প্রবীর বাবুর গোটা বাড়িটি ঘুরে দেখেন।
উলুবেড়িয়া থানার আই. সি. ও জানান, আহত ব্যক্তি মূলত আমতার বাসিন্দা। তবে কয়েকমাস ধরে উলুবেড়িয়ার নিজের বাড়িতে একাই থাকা শুরু করে সে। প্রতি বছরের মতো এই বছরেও বাজি তৈরি করছিলেন তিঁনিই। এদিন সন্ধ্যাতে ঘটনার সময় তিনি বাজি তৈরি করছিল। সম্ভবত অসাবধানতাবশত বাজির মশলায় আগুন লেগে বিস্ফোরণটি ঘটে। বিষয়টি আরও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
পুলিশি সূত্রের খবর, উলুবেড়িয়া, আমতা, বাগনান এই অঞ্চল গুলোতে অবৈধ ভাবে যে বাজি তৈরির কারখানা গুলো চলছে বাড়ির মধ্যে সেগুলোকে খুঁজে বের করার জন্য তারা তাদের খবরীদেরকে নিয়োগ করেছেন। কিন্তু পুলিশের নাকের ডগায় বসে এই ব্যক্তি কিভাবে নিজের বাড়িতে বসেই অবৈধ ভাবে বাজি তৈরি করছিলো তারই উত্তর চাইছে স্থানীয় মানুষ পুলিশ ও প্রশাসনের থেকে।