রাজীব মুখার্জী, কলকাতা হাই কোর্টঃ পূজাতে ১০ হাজার টাকা অনুদানের প্রেক্ষিতে করা জনস্বার্থ মামলার রায় দিলেন কলকাতা হাই কোর্ট। খারিজ করা হলো জনস্বার্থ মামলাটি। খারিজ করার সময় ৫ সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চ থেকে বলা হয়, “রাজ্যের সিদ্ধান্তে নাক গলাবে না হাই কোর্ট। আর্থিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রাজ্য সরকারের আছে। তাই আইনসভা কোনো সিদ্ধান্ত নিলে সেখানে আদালত হস্তক্ষেপ করতে পারে না। রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত এই বিষয়ে। আইনের সিদ্ধান্তে নাক গলানোর অধিকার জনগণের নেই। প্রসঙ্গত জনগণের টাকা নয়ছয় হচ্ছে এই বিষয়ে হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ খুব সুনির্দিষ্ট।” আজকে দেবাশীষ করগুপ্তের নেতৃত্বে ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলার রায় দিতে গিয়ে আরও বলে, “রাষ্ট্রের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিটি বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে হলে রাষ্ট্রের সাথে জনগণের সম্পর্কে অবিশ্বাসের জায়গা চলে আসে। এটা কাম্য নয়। তাই রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তে কোনো হস্তক্ষেপ আদালত করবে না। টাকা ঠিক মতো খরচ হচ্ছে কিনা সেটা পরে দেখা যেতে পারে, কিন্তু আপাতত যে স্থগিতাদেশ ছিল তা তুলে নেওয়া হলো আদালতের পক্ষ থেকে।” ক্লাব এবং পূজা কমিটি গুলিকে রাজ্যের দেওয়া অনুদান যাতে কোনরকম অপব্যবহার না হয়। সেটাও নজর রাখার নির্দেশ দেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত। এই সিদ্ধান্ত কে দুর্ভাগ্যজনক আখ্যা দিলেন প্রাক্তন মহানাগরিক ও এই জনস্বার্থ মামলার আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচাৰ্য। তিনি বলেন “আজকে যে রায় দেওয়া হলো তাতে কিছু সাংবিধানিক প্রশ্ন থেকেই গেলো, যেগুলো আদালতের বিচার্য হতে পারতো।” তবে এই মামলার পরবর্তীতে সুপ্রিম কোর্টে আপীল করবেন কিনা সেটা এই মুহূর্তে স্পষ্ট করে বললেন না তিনি।
প্রসঙ্গত আদালতের স্থগিতাদেশ দেওয়া কালীন যে প্রশ্ন গুলো আদালত তুলেছিল তার মধ্যে আহ্বান চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল সংবিধানের ২৮ নম্বর ধারা অনুযায়ী কোনো নির্বাচিত সরকার কোনো ধর্মীয় কাজে বা প্রতিষ্ঠান কে এভাবে টাকা দিতে পারে না। সেই প্রশ্নের উত্তর সংবিধানের বইতেই লিপিবদ্ধ থেকে গেলো। এ ছাড়াও আদালত যে বিষয় গুলো জানতে চেয়েছিলো এই মামলার শুনানির সময়ে সেগুলি হলোঃ
কোন খাত থেকে এই প্রচারের টাকা দিচ্ছে রাজ্য সরকার এবং টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার নির্দিষ্ট কোন গাইডলাইন তৈরি করেছে কি?
শুধু কি দুর্গা পূজোয় এই টাকা দেওয়া হবে? লাকি অন্য সম্প্রদায়ের মূল উৎসবেও এইভাবে টাকা দেবে রাজ্য সরকার? প্রশ্ন করেন প্রধান বিচারপতি দেবাশিষ কর গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ.
মানুষের টাকা পুজোর ক্লাবগুলোকে দিচ্ছে রাজ্য সরকার৷ এই টাকার অপব্যবহার হচ্ছে কিনা তার নজরদারিতে রাজ্য কোন পদক্ষেপ করেছে কি?
পুজো কমিটিগুলিকে কীভাবে নির্বাচন করা হয়েছে?
এই প্রশ্ন গুলো আজকের রায় দানের প্রক্রিয়াতে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হলো না বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট আইনজীবী মহলের একাংশ।