Tuesday, March 28, 2023
spot_img

বিপদজনক সেতু দিয়ে বাইক চেপে পেরোলেই দিতে হবে ৫০টাকা জমিরমানা

 

অর্ণব মৈত্র,হাড়োয়াঃ সাবধান বিপদজনক এই সেতু দিয়ে বাইক চেপে পার হলেই দিতে হবে ৫০টাকা জমিরমানা। আর যদি সাইকেল চেপে পার হন তাহলে দিতে হবে ১০টাকা জমিরমানা। আর এই জরিমান থেকে যদি রেহাই পেতে চান তাহলে, এই সেতু দিয়ে থেকে সাইকেল বা বাইক হাঁটিয়ে দিয়ে যান। কি এমন কথা শুনলেই একটু অবাক হচ্ছেন আপনি? হ্যাঁ, অবাক হলেও এটা সত্যি। উত্তর ও দক্ষিন চব্বিশ পরগনা সংযোগকারী বাঁশের জরাজীর্ণ সেতুর উপর দিয়ে বাইক বা সাইকেল চেপে পেরোতে গেলেই এই জরিমান দিতে হবে আপনাকে। কারন বাঁশের জরাজীর্ণ সেতুর অবস্থা এতোটাই খারাপ, যে কোন মুহূর্তে বাইক বা সাইকেল চেপে গেলে ভেঙে পড়তে পারে। তাই হাঁটিয়ে নিয়ে যেতে হবে এই সেতুর উপর দিয়ে। তবে এই নিয়ম আপনার সুরক্ষার জন্য নয়। এই নিয়ম কেন সেটা জেনে নিন এবার।

এই জরাজীর্ণ সেতুর গুরুত্ব অপরিসীম। এই সেতু যদি একবার ভেঙে যায় তাহলে দুই পরগনার যোগাযোগ ব্যবস্থা অচল তো হয়ে পড়বেই তার সঙ্গে এই সেতু সারাই করার জন্য প্রশাসন কোন উদ্যগ নেবেনা। প্রশাসন যে এই সেতুর সারাই এর কোন দ্বায়িত্ব নেয় না তা এলাকাবাসীদের কথা শুনেই বোঝা যায়। কারন এই জরাজীর্ণ সেতু দিয়ে হেঁটে পার হলে দিতে হয় ১ টাকা, বাইক নিয়ে পার হলে দিতে হয় ৫ টাকা, সাইকেল নিয়ে পার হলে দিতে হয় ২ টাকা, যদি কোন মালপত্র থাকে তাহলে মালপত্র অনুযায়ী ভাড়া দিতে হয়। আর এই ভাড়া সংগ্রহ করেন রমিহা বিবি নামে এক মহিলা। তিনি বলেন ,”আমরা এই টাকা নিয়ে সেতুর সারাই-এর কাজে লাগাই, প্রশাসন এই বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নেয় না বলে আমারা এই টা করি”।

বাকজোল খালের উপর দিয়ে এই সেতু তৈরী হয়েছে গত প্রায় দশ বছর ধরে। আর সেই থেকেই এই ব্যবস্থা। সেতু তৈরীর আগে এখানে ছোট ডিঙি নৌকা করে পারাপার হতো সবাই। অজানা কোন কারন বসত ডিঙি নৌকা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর এই সেতুর ব্যবস্থা তৈরী করেন এলাকাবাসীরা। এই খালের এক পাশে হাড়োয়া কামারগাঁথি, ব্যাম্ভনচক সহ বেশ কয়েকটি গ্রাম, আর অন্য পাশে ভাঙড়ের বাড়জুলি, ঘোসপুর সহ বিভিন্ন গ্রাম। এই এলাকার কাছে এই জরাজীর্ণ বাঁশের সেতুর গুরুত্ব অপরিসীম। দিনে প্রায় কয়েকশ লোকের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা এই সেতু। নড়বড়ে এই সেতু দিয়ে জিবনের ঝুঁকি নিয়ে শতাধিক স্কুল পড়ুয়ারাও পারাপার করে। সবুজ সাথীর সাইকেল ও বিশ্ববাংলা ব্যাগ নিয়ে যাতায়াত করা স্কুল পড়ুয়ারা বলে,”আমাদের খুব ভয় করে এই সেতু দিয়ে যাওয়ার সময়, অনেক সময় বাঁশ ভেঙে পা ঢুকে যায়, বই পত্র খালে পড়ে যায়, এটা তাড়াতাড়ি ভালো হলে আমাদের সুবিধা হয়”।

অপরদিকে এই সেতুর পাশেই প্রায় সমাপ্ত হয়ে পড়ে রয়েছে কংক্রিটের সেতু। সেই সেতুর কাজ প্রায় চার বছর ধরেই বন্ধ। এই সেতু কেনো এখনো চালু করা যায়নি, এই বিষয়ে জানতে চাইলে বাহার আলি নামে হাড়োয়ার পঞ্চায়েত সমিতির এক সদস্য বলেন, “সেতু টা অনেক হাই করে করা হয়েছে, দুই দিকের ঢাল গ্রামের কোথায় নামাবে এই নিয়ে একটা সমস্যা আছে, তবে তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে”। কিন্তু কবে হবে কংক্রিটের সেতুর কাজ সমাপ্ত? কবে থেকে চালু হবে ওই সেতু? আর কত দিন এই ভাবে জীবন হাতে করে জরাজীর্ণ বাঁশের সেতুর উপর দিয়ে যাতায়াত করতে হবে? এই সব নানান প্রশ্ন উঠে আসছে এলাকাবাসীদের মধ্যে।

Related Articles

Stay Connected

0FansLike
3,752FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles