অমিয় দে, কলকাতাঃ নেত্রী তাঁকে বেশ কয়েকবার বলেছিলেন, প্রেম করবি না কাজ করবি ঠিক করে নে! তার উত্তর এদিন পরিষ্কার পাওয়া গেল শুক্রবার সন্ধ্যায়। অস্ত গেল শোভনের। মেয়র তথা দমকল মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ডানা ছেঁটে দিলেন মমতা। দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা তৃণমূল সভাপতি পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে দিলেন দলনেত্রী। জেলায় শাসক দলের নতুন সভাপতি হলেন, রাজ্যসভার সাংসদ শুভাশিস চক্রবর্তী।
৫ অক্টোবর কোর কমিটির বৈঠক ছিল তৃণমূল ভবনে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এই বৈঠক ডাকা হয়। সেখানেই ঘোষণা করা হয়, শোভন চট্টোপাধ্যায়কে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে শুভাশীষ চক্রবর্তীকে সভাপতি করা হচ্ছে। দক্ষিণ ২৪ পরগণার সাংগঠনিক দায়িত্ব থেকে শোভনবাবু গত ৬ মাস ধরেই হাত গুটিয়ে নিয়েছেন। এমনকী মহেশতলার উপ নির্বাচনেও প্রায় নিস্ক্রিয় ছিলেন তিনি। তুলনায় জেলায় সাংগঠনিক কাজে শুভাশিসকেই বেশি সক্রিয় দেখা গিয়েছিলো।
এদিকে যে ভিতরে ভিতরে “সলতে পাকানো” চলছিলই তা ঘুণাক্ষরেও টের পাইনি কেউ। এছাড়াও দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার নতুন পর্যবেক্ষক করা হল পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে। সেই সঙ্গে ওই জেলার পর্যবেক্ষক হিসাবে থাকবেন যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়। এমনিতে অভিষেকের সঙ্গে শোভনের কোনও বনিবনা নেই। ফলে এক সঙ্গে একই জেলার পর্যবেক্ষক হিসাবে সহাবস্থান আদৌ সম্ভব কিনা সংশয় রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে কখনও বিধানসভার অলিন্দে কখনও বা নবান্নে ঘরে ডেকে নেত্রী তাঁকে বেশ কয়েকবার বলেছিলেন, “প্রেম করবি না কাজ করবি ঠিক করে নে!” কিংবা, “সংগঠন ঠিক মতো সামলাবি কিনা বল!” কিন্তু তাতেও কোনও হেলদোল দেখা যায়নি শোভনবাবুর মধ্যে। তিনি সাংগঠনিক কাজ নিয়ে আগ্রহও দেখাননি।
ফলে তাঁকে জেলা সভাপতির পদ থেকে সরানো এক প্রকার পাকাই ছিল। তবে দক্ষিণ ২৪ পরগণার সাংগঠনিক ব্যাপারে শোভনের যে কোনও গুরুত্বই রইল না। তা আর বলার অ অপেক্ষা রাখে না।