রাজীব মুখার্জী ও মণি শংকর বিশ্বাস, সাঁতরাগাছি, জগাছা-হাওড়াঃ “আয় কুমির তোর জলে নেমেছি”, “৫টা বাজলো এখনো কুমির এলো না, ৬টা বাজলো এখনো কুমির এলো না।” শৈশবের দিন গুলোতে কমবেশি সকলেই এই কুমিরডাঙ্গা খেলাটা খেলেছি আমরা। আজও সেই দিনগুলো আমাদের স্মৃতির পাতায় অমলিন হয়ে রয়েছে।
হাওড়া মিউনিসিপাল কর্পোরেশন এলাকার মধ্যেই আজ কিছু জায়গা, আমরা বেঙ্গলটুডের পক্ষ থেকে আজ যখন ঘুরে দেখলাম সেই সময় যে চিত্র পেলাম তখন আবার ছোট বেলার সেই কুমিরডাঙ্গা খেলার কথা আবার মনে গেল, আজও অল্প বৃষ্টি হলেই এলাকার বাসিন্দাদের রীতিমত কুমিরডাঙ্গা খেলতে খেলতে রাস্তায় যাতায়াত করতে হচ্ছে যা আপনাদের সামনে আজ তুলে ধরছি। সাঁতরাগাছি স্টেশন, এই মুহূর্তে সাউথ ইস্টার্ন রেলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ত স্টেশন। সাউথ ইস্টার্ন রেল সাঁতরাগাছি কে হাওড়া স্টেশনের পরিপূরক ও সহায়ক স্টেশন রূপে গড়ে তুলছে। গোটা চত্বর জুড়ে এই মুহূর্তে কর্ম-যজ্ঞ চলছে রেলের তরফে। স্টেশনের সামনে রয়েছে এক্সাইড গামী বাস স্ট্যান্ড ও তার সামনে স্টেশন যাওয়ার আন্ডারপাস। যে আন্ডারপাসটি অল্প বৃষ্টি হলেই হাঁটু অব্দি জলে ডুবে থাকে। জনসাধারণের চলাচলের অযোগ্য হয়ে ওঠে। একান্ত বাধ্য হয়েই ওই জমা জল পেরিয়েই লোকেদের যাতায়াত করতে হয়। বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন অংশ ডুবে যায় জমা জলে। এই নিয়ে রেল ও পূর্ত দপ্তর কারো কোনো হেলদোলই নেই। দুজনে দুজনের দিকে দায়িত্ব চাপানোর খেলা চলে যাচ্ছে যেন। বাস স্ট্যান্ডের কাছেই ঢিল ছড়া দূরত্বে জগাছা থানা। থানার সামনে ও সামনের রাস্তা ডুবে আছে জলে।
ভাঙা রাস্তা, শেষ কবে সরানো হয়েছে কেউ জানে না। এলাকার বাসিন্দাদের ক্ষোভের কথা জানা গেল যখন আমরা এলাকা পরিদর্শন করলাম। রামরাজতলা ও তার সংলগ্ন গলি ডুবে আছে জলে।একটু বৃষ্টি হলেই ভুগতে হয় নিত্যযাত্রী থেকে এলাকার বাদিন্দাদের। ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের জয়চণ্ডীতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়, ধাড়সা প্রাথমিক বিদ্যালয়, জাগাছা হাই স্কুলের বাচ্ছাদের যেতে হয় এই রাস্তা দিয়েই। টোটো ও স্কুল ভ্যান উল্টে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে অনেকবার। রাস্তায় জল জমলে, একমত বাধ্য হয়ে প্রায় ৩ কিলোমিটার ঘুরে স্কুল যেতে হয় বাচ্ছাদের। তবু কোনো উদ্যোগ নেই ওয়ার্ডের পৌর প্রতিনিধি মুনমুন মুখার্জীর বা এলাকার বিধায়ক জটু লাহিড়ী। প্রসঙ্গত, আমরা কথা বলতে চেয়েছিলাম মুনমুন মুখার্জীর সাথে, ফোন করেছিলাম পৌর প্রতিনিধির নম্বরে। কিন্তু তিনি ফোন বেজে গেলেও ধরেন্নি। চেষ্টা করলাম এলাকার বিধায়কের নম্বরে, ওনার ব্যক্তিগত সহায়ক ফোন রিসিভ করে বললেন “দাদা ব্যস্ত আছেন মিটিং-এ, পরে ফোন করুন।”
বাশিন্দাদের সাথে কথা বলে আমরা বুঝতে পেরেছি তাদের মনে ক্ষোভ জমে আছে, কিন্তু সেই ক্ষোভ শোনার মতো কাউকে হাতের কাছে খুঁজে পান না এলাকার বাসিন্দারা। একবার ভোট পর্ব মিটলে, নেতাদের প্রতিশ্রুতি ও নেতারা কর্পূরের মতো উবে যায়, এমনটাই অভিযোগ করলো এক বাসিন্দা। ভোটে নেতাদের ভাগ্য বদলে গেলেও বদলায়না এলাকার ও সাধারণ মানুষের জীবন যাত্রার দুর্ভোগের ছবি।