রাজীব মুখার্জী, নবান্ন, হাওড়াঃ অবশেষে নিজেরদের দপ্তরের আত্ম-সমালোচনার সুর সোনা গেলো মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর গলায়। ১৪ই সেপ্টেম্বর, বিকেলে পূর্ত দপ্তরের বিভাগীয় আধিকারিকদের সাথে আলোচনার পরে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করলেন, মাঝেরহাট সেতু ভেঙে নতুন সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। এদিন একটু রক্ষণাত্বক ভঙ্গিতে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, এই সেতু ভেঙে পড়া নিয়ে মুখ্যসচিব মলয় দের প্রাথমিক রিপোর্ট হাতে এসেছে এবং তাতে পূর্ত দফতরের কাজের গাফিলতিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি আরও বলেন, “ব্রিজ ভেঙে পড়ার ঘটনাতে কাজের ও তৎপরতার গাফিলতি ছিল পূর্ত দফতরের। ২০১৬ তেই ব্রিজের বেহালা দোষারোপ কথা জানতে পারে পূর্ত দফতর। তার পরেও কেন মেরামতের কাজ গাফিলতি করে ফেলে রাখা হলো, সেটা খুঁজে বের করা হবে এবং এ বিষয়ে কারও গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না”।
প্রসঙ্গত মাঝেরহাট ব্রিজ ভাঙার পরে তার মন্ত্রিসভার কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী বলেছিলেন যে, মেট্রো রেলের কাজ থেকে উদ্ভূত কম্পন ব্রিজ ভেঙে পড়ার জন্য দায়ী, সেই তত্ত্ব কেও তিনি জিয়ে রেখে বলেন, “মেট্রোরও গাফিলতির সম্ভাবনা থাকতে পারে ও এই নিয়ে আরও তদন্ত হবে”। মুখ্যমন্ত্রী প্রস্ন ছুরে বলেন, “ত্রুটি ধরা পড়ার পরেও কেন সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি? ত্রুটি ধরা পড়ার পরেও কেন যান নিয়ন্ত্রণ করা হয়নি?”
মুখ্যমন্ত্রী জানান, মাঝেরহাট ব্রিজ অবিলম্বে ভেঙে ফেলে নতুন সেতু তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। আগামী ১ বছরের মধ্যে মাঝেরহাটে নতুন ব্রিজ তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে জানান তিনি। তিনি এ বিষয় আরও বলেন, “বেলি ব্রিজ করে কোনও লাভ হবে না। সব ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করে আগামী ১ বছরেই তৈরি হবে নতুন সেতু। ফাইল চালাচালি করে সময় নষ্ট করা ঠিক হয়নি। পূর্ত দফতর দায়িত্ব অস্বীকার করতে পারে না। আইন অনুযায়ী যা ব্যবস্থা নেওয়ার পুলিশ নেবে। মাস খানেকের মধ্যেই চূড়ান্ত রিপোর্ট পেশ করা হবে। তিনি নিজে পূর্ব রেলের জিএমকে ফোন করেছিলেন ও কথা বলেছেন ব্যক্তিগত ভাবে। বিকল্প পথের খোঁজে সমীক্ষা করছে রেল-পূর্ত দফতর যৌথ ভাবে। রাজ্য সরকার টাকা-পয়সা সব দেবে ও দায়িত্ব নিয়ে শুধু দুই দফতরকে যৌথ সহযোগিতায় ব্রিজ তৈরির ব্যবস্থা করতে হবে।
15 - 15Shares