পল মৈত্র, দক্ষিন দিনাজপুরঃ এক সময় দক্ষিণ দিনাজপুরের বিভিন্ন প্রান্তের একাধিক জায়গায় মাদারিওয়ালাদের পশু নিয়ে খেলা দেখানোর দৃশ্য পরিচিত হলেও বর্তমানে বিশ্বায়নের যুগে আইনি প্রতিবন্ধকতার জেরে মাদারিওয়ালাদের প্রায় দেখাই পাওয়া যায়না। ২০০৭ সালে পশু সুরক্ষা আইনকে সম্মতি জানিয়ে মাদারিওয়ালারা তাদের খেলা দেখানোর পশুগুলি সরকারের কাছে তুলে দিয়েছিল এবং সরকারের কাছ থেকে কাজ চেয়ে নতুন জীবন শুরু করার স্বপ্ন দেখেছিল। সরকারের পক্ষ থেকেও মাদারিওয়ালাদের কাজ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অনেকটা সময় গড়িয়ে গেলেও সেই প্রতিশ্রুতি পূর্ণ না হওয়ায় মাদারিওয়ালাদের অনেকেই এখন পেটের তাগিদে পশু নিয়ে রাস্তায় খেলা দেখাতে বাধ্য হচ্ছে।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুমারগঞ্জ ব্লকের কামদেবপুর, আমুলিয়া, ভূয়োর, সমজিয়া এলাকায় বানর নিয়ে খেলা দেখাতে অহরহ দেখা মিলছে মাদারিওয়ালাদের। বিশ্বায়নের যুগে ডিজিটাল গেমস-এ মেতে থাকা শহরের বর্তমান শৈশব প্রজন্মের কাছে মাদারিওয়ালাদের দেখানো খেলা আকর্ষণ হারানোর কারনে রুটি রোজগার জোগাড়ে গ্রাম্য এলাকাগুলি ভরসা হয়ে দাড়াচ্ছে মাদারিওয়ালাদের। তাই পশু সুরক্ষা আইনের কার্জকারীতা হার মানছে বীরভূম জেলার সিউড়ি থেকে বানর খেলা দেখাতে আসা সালাউদ্দিন ক্যালেন্ডার ও সাইজাদা ক্যালেন্ডার-দের মত মাদারিওয়ালাদের কাছে।
এ প্রসঙ্গে মাদারিওয়ালা সাইজাদা ক্যালেন্ডার বলেন, আগে তাদের গ্রামে ২০-২৫টি ভাল্লুক ছিল। সেই ভাল্লুকগুলি নিয়ে খেলা দেখিয়ে তাদের পেট চলত। কিন্তু পশু সুরক্ষা আইনের কারনে সরকার ভাল্লুক গুলিকে দিল্লীতে নিয়ে যায় এবং মাদারিওয়ালাদের কাজ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু তারা এখনও কোন কাজ পায়নি ফলে পেটের তাগিদে আবার রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছি। অপর এক মাদারিওয়ালা সালাউদ্দিন ক্যালেন্ডার বলেন, খেলা দেখিয়ে দিনে ৩০০-৪০০ টাকা আয় হয়, কোনদিন আবার তাও হয়না। আমরা এই কাজ করতে না চাইলেও পেটের তাগিদে আমাদের এই খেলা দেখাতে হচ্ছে। সুতরাং বিভিন্ন চিড়িয়াখানা গুলিতে কাজ পাওয়ার আশায় মুখ্যমন্ত্রীর সাহায্য প্রার্থনা করে মুখ চেয়ে অপেক্ষায় মাদারিওয়ালারা।