শান্তনু বিশ্বাস, হাবড়াঃ বনগাঁ-শিয়ালদহ শাখার গুমা স্টেশনে ভর দুপুরে বিষ খেয়ে কাতরাচ্ছিল বছর ৪০-এর এক ব্যক্তি। কেউ সাহাজ্য করতে এগিয়ে এলো না। তবে মুখ ফেরাতে পারল না এক শিক্ষিকা। হাবড়া থানার অন্তর্গত পৃথীবা পঞ্চায়েত রাধারানী স্কুলের অমৃতা মুখোপাধ্যায় নামে এক শিক্ষিকা, সবাই যখন দেখে পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছিল তখন সব চিন্তা-ভাবনা একদিকে রেখে অমৃতা দেবী গাড়ি ভাড়া করে আসঙ্খাজনক অবস্থায় ব্যক্তিটিকে হাবড়া হাসপাতালে ভর্তি করেন। অসুস্থ ব্যক্তির নাম বিশ্বদেব চক্রবর্তী। বাড়ি গাইঘাটা থানার অন্তর্তগত উত্তর শিমুলপুর এলাকায়। বছর পাঁচেক আগে দমদম ক্যান্টনমেন্টের বাসিন্দা স্বামী বিচ্ছিন্না পূর্নিমার সঙ্গে ভালোবেসে বিয়ে করে সে। তাদের বর্তমানে বছর আড়াই দেবশঙ্কর চক্রবর্তী নামে এক পুত্র সন্তানও রয়েছে। পূর্নিমার আগের সংসারে এক ছেলেও ছিল, তাকে নিয়ে একসঙ্গে সংসারে আপত্তি ছিল না। হাবড়া হাসপাতালে বতর্মানে চিকিৎসাধিন বিশ্বদেব এমনটাই জানান শিক্ষিকা অমৃতা।
সম্প্রতি পূর্নিমার সঙ্গে গুমার যে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন বিশ্বদেব, তার মালিক অরুন বারুইয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়। এনিয়ে প্রায় সংসারে অশান্তিও হত দম্পতির মধ্যে। চলতি মাসের ৭ই আগষ্ট পূর্নিমা তার সন্তানদের নিয়ে অরুনের সঙ্গে পালিয়ে যায়। এনিয়েই মানসিক ভাবে ভেঙে পরে বিশ্বদেব। স্ত্রীকে ফোন করে ফিরে আসার কথা বললে সে সাফ জানায় "তুমি মরে গেলে যাও, আমি তোমার ছেলেকে দেখব। কিন্তু তুমি বেচে থাকলে দেখব না" তাই শুক্রবার সে সুইসাইড নোট লিখে আত্মহত্যার করার চেষ্টা করে বলে জানায় সে। এখন তার একটাই ইচ্ছে, ছেলেকে নিয়ে বাচতে চাই। যদিও এই ঘটনায় ফুটে উঠল স্থানীয় কিছু মানুষের অমানবিক মুখ, হয়তো বিশ্বদেব মারা গেলে কারর কিছু যেত-আসতো না।
তাও আগে-পিছু কিছু না চিন্তা করে শিক্ষিকা অমৃতা যা করেছে তাতে মানব সমাজকে আরেক বার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল যে, মানুষ কতটা স্বার্থপর। সুপ্রিম কোর্টের বিধি অনুযায়ী যেকোনো ব্যাক্তি যদি রাস্তায় কোন দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়, তা যদি কেউ দেখতে পায়, তাহলে তাকে সর্ব প্রথম হাস্পাতালে ভর্তি করা উচিৎ। কিন্তু আজকের সমাজে খুব কম সংখ্যক মানুষ এই কাজ করে। তবে হয়তো ভবিষ্যতে মানুষ মানুষের পাসে দারাবে, এমনটা আশা করাই যায়।