অরিন্দম রায় চৌধুরী, ব্যারাকপুরঃ আপাতকালিন পরিস্থিতিতেই হ্যাম রেডিও ক্লাবের সদস্যদের প্রয়োজন শুধু যে নয় তা আরও একবার চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিল ওয়েস্ট বেঙ্গল হ্যাম রেডিও ক্লাবের সম্পাদক অম্বরিশ নাগ বিশ্বাস। তাদের তো সব সময় সদা প্রস্তুত থাকতে হয়ে, যে কোন পরিস্থিতির মোকাবিলা করার জন্য।
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!
১৮ই আগস্ট সন্ধ্যে ৬:২৫ নাগাদ সোদপুর স্টেশনে ২নং রেল লাইনে শিয়ালদহ গামী ডাউন রামপুরহাট লোকাল ঢোকার সময় লাইন পার হচ্ছিল এক বছর ১৭-র মহিসপোতা গার্লস হাই স্কুলের ক্লাস ১২ এর ছাত্রী। সুত্র মারফত জানা যায় মেয়েটির নাম সুচিত্রা চৌধুরী। হাজার চেষ্টা করেও ড্রাইভার পারেনি ট্রেনটিকে থামাতে আর তাই ট্রেনের ধাক্কায় মারাত্মক জখম হয়ে লাইনের ধারে পড়ে যায় মেয়েটি। মেয়েটি যখন লাইনের ধারে পড়ে যন্ত্রণায় ছটফট করছে সকলেই তখন নিজেদের মোবাইল ফোনে ফটো তুলতে ব্যাস্ত। হয়তো এই মেয়েটি লাইনের ধারে পড়ে থেকে মারা গেলে কারোরই কিছু যেতো আস্তো না, কিন্তু মানুষ কবে বুঝতে পারবে যে রাস্তায় কোথাও কেউ আহত বা আসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়াও সকলের প্রাথমিক দায়িত্ব, আর তাতেই প্রাণে বেঁচে যেতে পারে অনেকে। এই ক্ষেত্রে যা অম্বরিশ বাবু করলেন, সময় নষ্ট না করে অম্বরিশ বাবু মেয়েটিকে লাইনের ধার থেকে সঙ্গে সঙ্গে তুলে নিয়ে ছোটেন তার চিকিৎসার জন্য। রাস্তায় প্রশাসনিক কর্তাদের সাথে যোগাযোগ করে জানিয়েও দেন ঘটনার কথা। প্রথমে পানিহাটি স্টেট জেনারেল হাঁসপাতালে নিয়ে যান তিনি আহত মেয়েটিকে, প্রাথমিক চিকিৎসার পড়ে সেখান থেকে পাঠানো হয়ে কামারহাটির সাগরদত্ত মেডিকেল কলেজে। সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা পাওয়ায়ে মেয়েটির জীবন ফিরে পাওয়ার আশা করছেন অম্বরিশ বাবু।
শেষ মুহূর্তের খবর পাওয়া পর্যন্ত সাগরদত্ত হাঁসপাতাল থেকে সুচিত্রাকে কলকাতায় পি.জি. হাসপাতালে স্থানাতরিত করা হয়েছে। এখনো সুচিত্রা হাসপাতালের বেডে শুয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে ও তাকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন হাঁসপাতালের ডাক্তাররা ও বাইরে অম্বরিশ বাবু ও তার সহযোদ্ধাদের চেষ্টায় অবশেষে মেয়েটির পরিবার জানতে পারলো এই দুর্ঘটনার কথা। জানা যায় সুচিত্রার বাবা আবির চৌধুরী ব্যারাকপুর কোর্টের মহুরির কাজ করেন।
১৮ই আগস্টের এই ঘটনায় অম্বরিশ বাবুরা সকলকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিল রাস্তায় চলাফেরার সময় কাউকে আহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখলে ছবি না তুলে তাকে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসার ব্যাবস্থা করলে সেই ব্যাক্তিকে প্রানে বাঁচানো যেতে পারে। এই ঘটনায় সাধারণ মানুষ যে অম্বরিশ বাবুদের এই কাজে তাদের যে সাধুবাদ দিচ্ছে তা বলাই বাহুল্য। এখন সকলেরই সর্বশক্তিমানের কাছে একই প্রার্থনা “বেঁচে উঠুক সুচিত্রা”।।