পল মৈত্র, দক্ষিন দিনাজপুরঃ বাজারে ফল পাওয়া গেলেও একমাত্র নির্ভেজাল ফল হচ্ছে কাঁচা তাল বা তালের শাঁস। আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, আনারস সহ রকমারি ফলের সঙ্গে বাজারে উঠেছে তাল-শাঁস। অন্যান্য ফলের চেয়ে তাল-শাঁসের বৈশিষ্ট্য একটু আলাদা। এখন তালগাছে ঝুলে আছে কচি তাল। অনেকে বিক্রির জন্য কচি তাল বাজারে তুলেছে। তাই এই গরমে হরেক রকম মৌসুমী ফলের সঙ্গে ফলপিপাসু মানুষের কাছে দিন দিন তাল-শাঁসের কদর বৃদ্ধি পাচ্ছে।
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!
কদর বৃদ্ধির একটা অন্যতম কারণ হলো এটিতে কোনো কীটনাশক বা ফরমালিন অথবা কার্বাইড মেশানোর প্রয়োজন পড়ে না। অনেকেই রাস্তার পাশে বসে ও দাঁড়িয়ে এ ফল খাচ্ছেন। আবার কেউ কাঁধি ধরে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন বাড়িতে। তীব্র গরমে তাল শাঁস মানবদেহের জন্য খুবই উপকারী। তাই তীব্র গরমে একটু স্বস্তি পেতে তাল শাঁসের কদর বাড়ছে দক্ষিন দিনাজপুর জেলা জুড়ে।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে তাল-শাঁস বিক্রি চলছে জমজমাট। এতে স্বাবলম্বীও হচ্ছেন বিক্রেতারা। কাঁচা তাল শাঁসে যথেষ্ট পরিমান মিনারেল রয়েছে, যা মানব দেহের জন্য উপকারী। তবে বড়রাও শাঁস খাওয়া থেকে পিছিয়ে নেই। রিকসা চালক থেকে শুরু করে সকল শ্রেণী বা পেশার লোকজনই মৌসুমী ফল তাল শাঁস ক্রয় করতে ভীড় করছেন বিক্রেতাদের কাছে।
গরমে একটু স্বস্তি পেতে তালের শাঁস খাচ্ছেন ৮ থেকে ৮০ সকলেই। তাল-শাঁস ঠান্ডা জাতীয় গরম মৌসুমের সুস্বাদু খাবার। একটি তাল-শাঁস বর্তমান বাজারে ৭ থেকে ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক একটি তালের ভেতরে তিন-চারটি আঁটি বা শাঁস থাকে। তাল-শাঁস বিক্রেতারা গ্রামে গ্রামে ঘুরে গাছের মালিকদের কাছ থেকে পাইকারিভাবে কচি তাল কিনছে। প্রতিটি কচি তালের পাইকারি দাম ৩ থেকে ৪ টাকা। তাল বিক্রি করে জেলার অনেকে স্বাবলম্বী হয়েছেন। তাদের মধ্যে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বুনিয়াদপুর শেরপুর পৌর এলাকার ২নং ওয়ার্ডের সুকুমার সরকার জেলার বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে ঘুরে গাছ মালিকদের কাছ থেকে তাল-শাঁস ক্রয় করেন। এরপর সেগুলো বিভিন্ন বাজারে পাইকারী অথবা সুযোগ বুঝে খুচরা বিক্রি করে থাকেন।
সুকুমার সরকার জানান, “আগে দিনমজুরের কাজ করতেন। সংসার চালাতে হিমশিম খেতেন। তখন তিন বেলা দুই মুঠো ভাত ছাড়া অন্য কোন কিছুর আশা করতেন না। এখন তিনি প্রতিটি তাল শাঁস ৭ টাকা থেকে ১০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। এতে তার প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা আয় হচ্ছে। তাল গাছ কেটে ফেলার কারণে তালের ফলন কম হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, তাল শাঁসের সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে চড়া মূল্যে এ মৌসুমী ফল বিক্রি করতে হচ্ছে। আগামীতে এ ফল পাওয়া নাও যেতে পারে বলে তিনি আশংকা প্রকাশ করেন।